কোটি টাকা ঋণখেলাপির নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না কেন, ক্ষুব্ধ সানী

বিনোদন প্রতিবেদক
বিনোদন প্রতিবেদক বিনোদন প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:৫৮ পিএম, ১১ আগস্ট ২০২৪
ওমর সানি। ছবি: সংগৃহীত

আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের চেক ডিজঅনার মামলায় নায়িকা মৌসুমীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন ঢাকার একটি আদালত। গ্রেফতার সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ১৬ অক্টোবর দিন ধার্য করা হয়েছে।

আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের ১ লাখ ৬ হাজার ২১১ টাকার চেক ডিজঅনারের অভিযোগে গত বছরের ৩ ডিসেম্বর ঢাকার একটি আদালতে অভিনেত্রী আরিফা পারভিন জামান মৌসুমীর বিরুদ্ধে মামলা করেন আইপিডিসির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম এম মুশফিকুর রশীদ। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তাকে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারি করেন। আদালতে হাজির হওয়ার জন্য তার গুলশান-১ এর বাসায় এ সমন পাঠানো হয়। সেখান থেকে সমন ফেরত গেলে ২৮ এপ্রিল তার বসুন্ধরা আবাসিকের বাসায় ফের সমন পাঠানো হয়। এদিন সমন জারি হওয়ায় তিনি আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় ২৪ জুলাই তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

মৌসুমী এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমমে কথা বলে তার স্বামী চিত্রনায়ক ওমর সানীর সঙ্গে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, এর চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণ টাকার, যেমন এক কোটি, দুই কোটি, তিন কোটি, পাঁচ কোটি টাকার মতো শতাধিক ঋণখেলাপিকে আমি চিনি। এই প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে তারা পরিশোধ করেনি। সেখানে মৌসুমীর কয়েক লাখ টাকার ঋণের বিষয়টি মামলা পর্যন্ত নিয়ে গেছে! এটা মৌসুমীকে অসম্মান ও অপদস্থ করা ছাড়া আর কিছুই নয়।

তিনি আরও বলেন, নামটা যেহেতু মৌসুমী, তাই ভাইরাল করার চেষ্টা করল। সামান্য কিছু টাকার জন্য মৌসুমীকে যদি অসম্মান করা হয়, তাহলে অন্য কোটি কোটি ঋণখেলাপির নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না কেন!’

মামলার অভিযোগে বাদী উল্লেখ করেন, আইপিডিসি একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান, যেটি সারাদেশে অর্থ জমা, ঋণ, বিনিয়োগ, মুদ্রা বিনিময়ের মতো আর্থিক লেনদেন করে। প্রতিষ্ঠানটি ১৯৯৩ সালের আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন ও ২০২৩ সালের (সংশোধিত) ব্যাংক কোম্পানি আইনের অধীনে পরিচালিত। এবং এর সদরদপ্তর হোসনা সেন্টার (৪র্থ তলা), ১০৬ গুলশান এভিনিউ, ঢাকা-১২১২। এছাড়া সারাদেশে এর আরও শাখা রয়েছে।

মামলার বিবাদী আরিফা পারভিন জামান মৌসুমী বাংলাদেশের নাগরিক। তার বাবার নাম নাজমুজ্জামান মনির। মৌসুমীর অনুকূলে অভিযোগকারী ঋণ মঞ্জুর করেছিলেন। বিবাদী বাদীর কাছ থেকে ঋণ গ্রহণ করেছে এবং উপকৃত হয়েছে। কিন্তু বিবাদী ওই ঋণের শর্ত না মেনে অনিয়মিতভাবে কিস্তি দিয়েছেন। পরে বাদী বিবাদীকে একাধিকবার সঠিক সময়ে ঋণ পরিশোধ করার আহ্বান জানান। বকেয়া ঋণের আংশিক দায় মেটাতে ২০২৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর বিবাদী নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে বাদীর অ্যাকাউন্টে ১ লাখ ৬ হাজার ২১১ টাকা হস্তান্তর করেছে। সিটি ব্যাংকে সংরক্ষিত চেকটির নম্বর ৮৩৭৮৮৩২। উল্লেখিত চেকের মোট অর্থের পরিমাণ ১ লাখ ৬ হাজার ২১১ টাকা। গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর গুলশানের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক লিমিটেডে চেকটি দেখানো হলে ব্যাংক জানায় চেকের অ্যাকাউন্টে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা নেই।

ওমর সানি ও মৌসুমী। ছবি: সংগৃহীতওমর সানি ও মৌসুমী। ছবি: সংগৃহীত

মামলার অভিযোগে বাদী বলেন, পরে নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্টস অ্যাক্ট-১৮৮১ এর ধারা-১৩৮ এর বিধান মেনে ১২ অক্টোবর ২০২৩ অভিযোগকারী তার অনুমোদিত অফিসারের মাধ্যমে অভিযুক্তকে ৩০ দিনের মধ্যে উল্লিখিত চেকের অর্থ প্রদানের দাবিতে বিজ্ঞপ্তি দেন। অন্যথায় অভিযোগকারী ‘নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্টস অ্যাক্ট- ১৮৮১’ অনুসারে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

অভিযুক্ত ব্যক্তি বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত ১১ নভেম্বর ২০২৩ তারিখের মধ্যে চেকের অর্থ দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। অভিযুক্ত ব্যক্তির ইস্যুকৃত চেকের অপর্যাপ্ত তহবিলের কারণে অভিযোগকারী অসম্মানিত হয়েছিলেন। তার সিটি ব্যাংক লিমিটেডের অ্যাকাউন্ট নম্বর ২৮০১৪২৫৫১৬০০১। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত ১২ নভেম্বর ২০২৩ তারিখের মধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তি অর্থ প্রদানে ব্যর্থ হওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা করতে বাধ্য হয়েছি।

১৯৯৩ সালে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমার মাধ্যমে ঢালিউডে অভিষেক হয় মৌসুমীর। সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ছবিটিতে সালমান শাহর বিপরীতে অভিনয় করে পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা পান এই অভিনেত্রী। এই মুহূর্তে নায়িকা মৌসুমী অবস্থান করছেন যুক্তরাষ্ট্রে।

এমআই/এমএমএফ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।