হাত ধরে জুয়েলকে বিদায় দিয়েছেন সঙ্গীতা

বিনোদন প্রতিবেদক
বিনোদন প্রতিবেদক বিনোদন প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:০১ পিএম, ৩১ জুলাই ২০২৪
সঙ্গীতা আহমেদ ও হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল

গান শুনে শিল্পীর প্রেমে পড়ার ঘটনা সিনেমায় দেখা যায়। সঙ্গীতার জীবনে সে ঘটনা ছিল সত্য। জুয়েলের গান শুনে তার প্রেমে পড়েছিলেন তিনি। তারপর পরিণয়, ঘর বাঁধেন দুজন। গতকাল মৃত্যুর সময় প্রিয় শিল্পী, প্রেমিক, স্বামী জুয়েলের হাত ধরে বিদায় জানিয়েছেন সঙ্গীতা আহমেদ। হৃদয়বিদারক সে বিদায়, কিন্তু পাথরের মতো ভার লাগেনি তার। কারণ ক্যানসারের সঙ্গে দীর্ঘ যুদ্ধে বিজয়ী হয়েছিলেন জুয়েল।

গতকাল (৩০ জুলাই) মঙ্গলবার বেলা ১১টা ৫৩ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন শিল্পী হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল। এ সময় তার পাশে ছিলেন স্ত্রী সঙ্গীতা, মেয়ে ও জুয়েলের বাবা-মা। চোখ বোজার আগ পর্যন্ত জুয়েলের দুটি হাত ধরেছিলেন কাছের চারটি মানুষ। সঙ্গীতা বলেন, ‘ও অনেক ভাগ্যবান। চলে যাওয়ার মুহূর্তে আমাদের সবাইকে কাছে পেয়েছে। ১৩ বছর ক্যানসারের সঙ্গে যুদ্ধ করে সে জিতেছে। এখন সে আর কষ্ট পাচ্ছে না। মুখটা দেখে মনে হচ্ছিল খুব শান্তিতে আছে এখন।’

আরও পড়ুন:

চেনাজানার একপর্যায়ে সঙ্গীতা বুঝতে পারেন, কেবল ভালো শিল্পীই নন, মানুষ হিসেবেও জুয়েল চমৎকার। প্রেমিক থেকে জুয়েল হয়ে ওঠেন সঙ্গীতার ভালো একজন বন্ধু। পঁচিশ বছরের খুনসুটি, একসঙ্গে বসে সিনেমা দেখা, গান শোনা, ভ্রমণের স্মৃতিগুলো গতকাল স্মরণ করছিলেন সঙ্গীতা। এমনকি ক্যানসারের সঙ্গে যুদ্ধটাও দুজন লড়েছিলেন একসঙ্গে। সঙ্গীতা বলেন, ‘গত তিন মাস বাসাটাকে হাসপাতাল বানিয়ে ফেলেছিলাম। হাসপাতালের বিছানা, নার্স সবই ছিল সেখানে। জুয়েল হাসপাতাল পছন্দ করতো না। কিন্তু সেকথা বলতেও চাইতো না। কেবল বলতো, এই জীবন আমার ভালো লাগে না। আমি বলতাম, আমারও তো ভালো লাগে না। আসলে পরিচিত কেউ চাইতো না যে, সে এই কষ্ট নিয়ে দীর্ঘদিন বাঁচুক। ওর আসলে সেরে ওঠার কোনো সুযোগই ছিল না।’

জুয়েল ও সঙ্গীতা আহমেদজুয়েল ও সঙ্গীতা আহমেদ

জুয়েল ও সঙ্গীতাকে একত্রে দেখা যেত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে। হয়তো দুজনে মিলে অনুষ্ঠানের আয়োজন করতেন, নয়তো দুজন একত্রে উপস্থাপনা করতেন। শিল্পী হিসেবে জুয়েলে পেয়েছিলেন পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা। সঙ্গীতাও সংবাদ উপস্থাপিকা হিসেবে ছিলেন পরিচিত। বিনোদন অঙ্গনের মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত ছিলেন জুয়েল-সঙ্গীতা জুটি। জুয়েলের শেষ বিদায়ের লগ্নে সঙ্গীতা বলেন, ‘২৮ আগস্ট আমাদের ২৬তম বিবাহবার্ষিকী। তার আগেই সে আমাকে ছেড়ে চলে গেল।’ তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, জুয়েলের গানগুলোর কথা। কী হবে প্রিয় সেই গানগুলোর? সেসব কী যথাযথ সংরক্ষণের ব্যবস্থা হবে? সঙ্গীতা বলেন, ‘তার গানগুলো চিরদিনই মানুষ মনে রাখবে। মানুষ এখনও সেসব গান শোনে। ডিজিটালি তার গান সংরক্ষণ কীভাবে হবে, নাকি হবে না, আমি জানি না। তার গানগুলো আমার হৃদয়ে সংরক্ষিত আছে। আমার ধারণা অন্যদের হৃদয়েও থাকবে।’

আরএমডি/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।