তবু তিনি মাইলসের শাফিন আহমেদ হয়েই রইবেন

বিনোদন প্রতিবেদক
বিনোদন প্রতিবেদক বিনোদন প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:৪২ পিএম, ২৫ জুলাই ২০২৪

আশির দশকের শুরুর মুখে নানা ক্রান্তিলগ্ন পার করেছে বাংলাদেশ। সেই সময় তরুণদের গান শোনাতে যাত্রা করে একটি ব্যান্ড। পোশাকের আভিজাত্য, কথা ও সুরে পাশ্চাত্যের প্রভাব নিয়ে অল্প সময়েই সেই ব্যান্ডটি হয়ে উঠেছিল তারুণ্যের ক্রেজ। দু’টি ইংরেজি গানের অ্যালবাম মাইলস মাইলস ও এ স্টেপ ফারদার দিয়ে বাজারে আসে তারা। তবে মাইলসের জনপ্রিয়তার শুরু প্রথম বাংলা গানের অ্যালবাম ‘প্রতিশ্রুতি’ দিয়ে ১৯৯১ সালে।

গানে গানে তারা জয় করে নিয়েছে কয়েক প্রজন্মের শ্রোতাদের মন। বলছি মাইলস ব্যান্ডের কথা। সেই মাইলসের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা শাফিন আহমেদ। যার কণ্ঠেই মূলত টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া অব্দি মাইলসের ছড়িয়ে পড়া। কিংবদন্তি নজরুলসংগীত শিল্পী ফিরোজা বেগম ও সংগীতজ্ঞ কমল দাশগুপ্তর ছেলে শাফিন আহমেদ ছিলেন দুই বাংলার প্রিয় ব্যন্ডতারকা। ৬৩ বছর বয়সে আজ (২৫ জুলাই) সকাল ৬টা ৫০ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই তারকা। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে সংগীতাঙ্গনে।

১৯৭৯ সালে মাইলস প্রতিষ্ঠা হয়। এরপর দীর্ঘ ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ব্যান্ডটি বিভিন্ন জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছে। হামিন আহমেদ, শাফিন আহমেদ, মানাম আহমেদ প্রমুখ ছিলেন এই ব্যান্ডের প্রাণ। তবে এই ব্যান্ডের ৯০ শতাংশ গান শাফিন আহমেদের কণ্ঠে সৃষ্টি হয়েছে। কণ্ঠের পাশাপাশি শাফিন ব্যান্ডটির বেজ গিটারও বাজাতেন।

তবে আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে গেল কয়েক বছর ধরেই ভাঙনের মুখে খবরের শিরোনাম হয়েছে ব্যান্ডটি। একবার-দুইবার নয়, ‘তিনবার’ মাইলস ছেড়ে বের হয়ে গিয়েছিলেন শাফিন আহমেদ।

সবশেষ ২০২১ সালের ২৭ নভেম্বরে একটি ভিডিও বার্তায় শাফিন আহমেদ জানান, তিনি মাইলস থেকে আলাদা হয়ে গেছেন। সেসময় তিনি বলেন, ‘সংগীত জগতে আমার পথচলা খুব স্বাভাবিক এবং আগের মতোই থাকবে। আমাকে স্টেজে পাওয়া যাবে, আমাকে রেকর্ডিংয়েও পাওয়া যাবে।’

নিজের একটা প্রত্যাশা কথা জানিয়ে শাফিন আহমেদ আরও বলেছিলেন, ‘মাইলস নামটার যেন কোনো অপব্যবহার না হয়। মাইলসকে নিয়ে আমরা চল্লিশ বছর উদযাপন করেছি খুব গৌরবজ্জ্বলভাবে। আমরা যদি একসাথে কাজ না করতে পারি তাহলে মাইলসের যে কার্যক্রম তা এখনই স্থগিত করা উচিত। এবং এটাই আমি মনে করি বেস্ট ডিসিশান। সুতরাং আমার প্রত্যাশা থাকবে, অন্য কেউ যেন মাইলস নামটার অপব্যবহার না করে।’

এর আগে ২০১৭ সালে অক্টোবরেও একবার ব্যান্ডটি ছাড়ার কয়েকমাস পর দ্বন্দ্ব ভুলে ফের ব্যান্ডে ফিরেছিলেন তিনি। ২০১০ সালের শুরুর দিকেও একবার ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ব্যান্ড থেকে সরে দাঁড়ানোর কয়েকমাস পর ফের ব্যান্ডে ফেরেন।

তবে আজ চারদিকে যে শোক সেখানে মাইলস ও শাফিন আহমেদ মিলেমিশে একাকার। যা প্রমাণ করে যাচ্ছে, নিজেকে যতই মাইলস থেকে দূরে নিয়ে যান না কেন চিরকাল এ দেশের ব্যান্ডপ্রেমীদের কাছে ‘মাইলসের শাফিন’ হয়েই সম্মানিত হবেন শাফিন আহমেদ।

এলএ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।