ছেলের মুখ সামলাতে খালেদাকে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ
বিএনপি চেয়ারপার্সনকে তাঁর ছেলের বক্তৃতাকালে মুখ সামলে কথা বলার জন্য নির্দেশনা দিতে পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার বিজয় দিবস-২০১৪ উদযাপন উপলক্ষে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় এক ভাষণে এ পরামর্শ দেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমি বিএনপি চেয়ারপার্সনকে তার নষ্ট ছেলের বক্তৃতাকালে মুখ সামলে কথা বলাতে নির্দেশনা দেয়ার পরামর্শ দেব। বাংলাদেশের মানুষ কখনোই এ ধরনের অমর্যাদাকর বক্তব্য মেনে নেবে না।’
অন্যথায় দেশের মানুষ তাকে উপযুক্ত শিক্ষা দেবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত শাসনকালে ২১ আগস্টের বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলা ও অন্যান্য হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারীদের অবশ্যই ধরা হবে।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সকল রায় একের পর এক কার্যকর করা হবে। কেউ তাদের বিচার প্রক্রিয়া থেকে বাঁচাতে পারবে না।
প্রধানমন্ত্রী দু’টি দুর্নীতি সম্পর্কিত মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে অনীহার জন্য বেগম জিয়ার সমালোচনা করে বলেন, ‘আপনি যদি খুব সৎ হন তবে আদালত মোকাবেলায় ভয় পান কেন। আদালতে আপনার আইনজীবীদের আচরণও কোন সভ্য দেশে নজীরবিহীন।’
বাঙালি জাতির মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাস বর্ণনা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু এই দেশের জনগণকে স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করেছিলেন। তাঁর নির্দেশে বাঙালি জনগণ পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে দেশব্যাপী অসহযোগ আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাঁর আহবানে জনগণ শত্রুর প্রতিরোধে ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তোলে।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭০ সালের নির্বাচনের অনেক আগেই লন্ডনে এক সভায় বঙ্গবন্ধু তাঁর কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেছিলেন। তিনি পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠী যদি নির্বাচনের ফলাফল গ্রহণ অথবা প্রত্যাখ্যান করে সে ক্ষেত্রে তাঁর করণীয় সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তিত্ব এবং বিদেশী বন্ধুদের সঙ্গে পরামর্শ করেন।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, লন্ডনের সভাতেই বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠী যদি বাঙালি জনগণের রায়ের বিরুদ্ধে যায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালানোর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন।
বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, জাতির জনকের স্বপ্ন ছিল একটি স্বাধীন বাংলাদেশ। কারণ এদেশের জনগণ সবসময় বঞ্চিত ছিল এবং তারা কখনো স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পারেনি। ১৯৫৪ এবং ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের আইন পরিষদে ভাষণে বঙ্গবন্ধু ‘বাংলাদেশ’ শব্দটি বারবার ব্যবহার করেছেন। তিনি বাংলাদেশের অস্তিত্বের বাস্তবতা সম্পর্কে জাতিকে বারবার অনুপ্রাণিত করেছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের জনগণ যখন অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্য অর্জন করতে যাচ্ছিলো, তখন স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে। তাঁর হত্যাকাণ্ডের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের রাজনীতি শুরু হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় সংসদের উপনেতা ও আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী ও ফজলুল করিম সেলিম।
এছাড়া অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন- ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, আওয়ামী লীগ যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ ও ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন ও এ এফ এম বাহাউদ্দিন নাসিম এবং দলের সিনিয়র নেতা এডভোকেট কামরুল ইসলাম।