‘কারার ঐ লৌহকপাট’ গান নিয়ে বিতর্ক

এ আর রহমানের সুরে নজরুলের গান নিয়ে মুখ খুললেন গায়ক

বিনোদন ডেস্ক
বিনোদন ডেস্ক বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭:২৬ পিএম, ১০ নভেম্বর ২০২৩

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘কারার ঐ লৌহকপাট’ গান নিয়ে বিতর্কের প্রায় ২৪ ঘণ্টা পার হতে যাচ্ছে। এ গানের সুর বিকৃত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে অস্কারজয়ী সুরস্রষ্টা এ আর রহমানের বিরুদ্ধে।

এ নিয়ে দুই বাংলার সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড় চলছে। কারও প্রশ্ন, রহমান এমন গর্হিত কাজ করলেন কীভাবে। অন্য পক্ষের প্রশ্ন ‘কারার ঐ লৌহকপাট’ গানটির সুর কি আদৌ এ আর রহমান করেছেন?

কীভাবে এই গানটি রেকর্ড করা হয়? কী কী পদ্ধতি ছিল সেখানে? এ প্রসঙ্গে খোঁজ নিয়ে জানার চেষ্টা করেছে ভারতীয় পাঠকপ্রিয় গণমাধ্যম ‘আনন্দবাজার’র অনলাইন সংস্করণ।

জানা গেছে, ‘পিপ্পা’ সিনেমার এ গানে একাধিক বাঙালি শিল্পী কণ্ঠ দিয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন রাহুল দত্ত, তীর্থ ভট্টাচার্য, পীযূষ দাশ, শালিনী মুখোপাধ্যায়, দিলাশা চৌধুরী, শ্রয়ী পাল প্রমুখ। তবে মূল উদ্যোগ ছিল রাহুলের।

রাহুল বললেন, ২০২১ সালে হঠাৎ এক রাতে তার কাছে এ আর রহমানের টিমের পক্ষ থেকে ফোন আসে। এটা এ আর রহমানের সঙ্গে শিল্পীর তৃতীয় কাজ। রাহুল বললেন, ‘বলা হয় সেই রাতেই গানটা রেকর্ড করতে হবে। সে অনুযায়ী আমি বাকিদের উপস্থিত করি। তখনো জানতাম না গানটা কীভাবে কোথায় ব্যবহার করা হবে।’ তারপর এ আর রহমানের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলেন রাহুল। গভীর রাতে শুরু হয় রেকর্ডিং। রহমান কি আগে সুর করে পাঠিয়েছিলেন?

আরও পড়ুন: এ আর রহমান নজরুলের গান রিমেক করায় শাহীন সামাদের প্রতিবাদ

রাহুল সে কথা স্বীকার করে নিয়ে বললেন, ‘আমাদের কাছে আগে সুর করে পাঠানো হয়েছিল। আমরা কিছুই জানতাম না। কোন সিনেমায় ব্যবহার করা হবে সেটাও জানতাম না।’

রাহুল আরও জানান, রেকর্ডিংয়ের সময় তাদের সঙ্গে এ আর রহমানের টিমের সঙ্গে ভিডিও কলে যোগাযোগ রাখা হয়েছিল। সম্প্রতি সিনেমার প্রযোজনা সংস্থার পক্ষ থেকে রাহুলের কাছে ফোন আসে। তারপর তিনি জানতে পারেন কোথায় এবং কীভাবে গানটা ব্যবহার করা হবে। কিন্তু সুর জানার পর রাহুল প্রতিবাদ করলেন না কেন?

আরও পড়ুন: ‘কারার ঐ লৌহকপাট’ নিয়ে কটাক্ষের মুখে এ আর রহমান

এ প্রসঙ্গে শিল্পী বললেন, ‘তখন এতো কিছু ভাবিনি। গায়কের কাজ গান গাওয়া। আমরা সেটাই করেছি। গান নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা তো হতেই পারে। সত্যিই বলছি অত কিছু ভাবিনি। বাঙালি ছেলেমেয়েদের রহমানের মতো শিল্পী কোরাসে ব্যবহার করতে চেয়েছেন এটাই আমাদের কাছে মুখ্য বিষয় মনে হয়েছিল।’

গত ৮ নভেম্বর ফেসবুকে এ গানটি নিয়ে তিনি যে গর্বিত সে কথা লিখেছিলেন রাহুল। তখনো বিতর্ক এতটা দানা বাঁধেনি। এখন কী মনে হচ্ছে তার? রাহুল বললেন, ‘তখন কিন্তু বহু শিল্পী আমাকে মেসেজ করে কমেন্ট করে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। এরকমও অনেকে লিখছেন, আমরা নাকি এই কাজটা করে মেরুদণ্ডহীনতার পরিচয় দিয়েছি! তারা অবশ্য আমাদের কোনো শুভেচ্ছাবার্তা দেননি।’

এ গান মুক্তির পর এ আর রহমানকে সোশ্যাল মিডিয়ায় যেভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হচ্ছে তা মেনে নিতে পারছেন না রাহুল। তিনি বললেন, ‘যে কোনো কাজেরই ভালো-খারাপ দুই দিকই থাকে। কিন্তু রহমানের সংগীতের জ্ঞান নিয়ে যদি এখন প্রশ্ন ওঠে, তা হলে সেটা দুঃখজনক।’

আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ আর রহমানের সাক্ষাৎ

তবে এ গানটি ভালো না কি খারাপ, তা নিয়ে আলাদাভাবে কোনো কিছু বলতে নারাজ রাহুল। বললেন, ‘আমি একজন শিল্পী। রহমান আমার গুরু। তার সঙ্গে কাজের সুযোগ আমার কাছে স্বপ্নপূরণ। আর কিছু ভাবতে চাই না।’

তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার

এমএমএফ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।