শোবিজজুড়ে আজ যেন জন্মদিনের উৎসব-আনন্দ
প্রত্যেক মানুষের জীবনে কয়েকটি বিশেষ দিন থাকে। এর মধ্যে জন্মদিন অন্যতম। প্রতিবছর বিভিন্নভাবে সবার কাছে জন্মদিনটি স্মরণীয় হয়ে আসে। এদিনটি যদি হয় শোবিজ ভুবনের তারকাদের, তাহলে তো কোনো কথাই থাকে না। বিশেষ এই দিনে ভক্ত-অনুসারীদের শুভেচ্ছায় সিক্ত হন তারা। কেউ উপভোগ করেছেন পারিবারিক আবহে উদযাপন করেন। আবার বা কেউ ভক্ত-অনুসারীদের সঙ্গে জন্মদিন পালন করেন।
আজ (২২ আগস্ট), একই দিনে দেশের শোবিজ ভুবনের পাঁচ তারকার জন্মদিন। তাই মনে হচ্ছে শোবিজ অঙ্গনে আজ যেন জন্মদিনের উৎসব-আনন্দের বাতাস বইছে। আজ যাদের জন্মদিন তারা হলেন অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবু, মোশাররফ করিম, সংগীতশিল্পী ডলি সায়ন্তনী, অভিনেত্রী রুমানা রশীদ ঈশিতা ও সুনেরাহ বিনতে কামাল।
আরও পড়ুন: অভিনয়ের পিপাসা একটুও মেটেনি: ফজলুর রহমান বাবু
জানা গেছে, পাচঁ তারকা মধ্যে কেউ আজকে শুটিং নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আবারও কেউ কোনো কাজ রাখেনি এ বিশেষ দিন উপলক্ষে। পরিবারও বন্ধুদের সঙ্গে একান্তে কাটাবেন এ বিশেষ দিন।
ফজলুর রহমান বাবু: ছোট ও বড়পর্দার একজন জনপ্রিয় অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবু। তার দক্ষ ও নিপুণ অভিনয় যেকোনো দর্শকের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। তিনি সবার কাছে ‘প্রিয় বাবু ভাই’বলে সমাদৃত। তিনি ১৯৬০ সালে ফরিদপুরে জন্মগ্রহণ করেছেন। ১৯৭৮ সালে ফরিদপুরের বৈশাখী নাট্যগোষ্ঠীতে যোগদানের মাধ্যমে অভিনয় জীবন শুরু তার।
সেখান থেকে ঢাকায় চলে আসার পর বাবু নাট্যজন মামুনুর রশীদের ‘আরণ্যক নাট্যদল’-এ যোগ দেন। মঞ্চে তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটক হলো, ‘নঙ্কার পালা’, ‘পাথার’ ও ‘ময়ূর সিংহাসন’ ইত্যাদি। ১৯৯১ সালে তার টেলিভিশনে যাত্রা শুরু হয়।
আরও পড়ুন: জন্মদিনে নতুন সিনেমায় মোশাররফ করিম
২০০৭ সালে হুমায়ূন আহমেদের গল্পে তৌকীর আহমেদ পরিচালিত ‘দারুচিনি দ্বীপ’ সিনেমার মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে বাবুর। তার ঝুলিতে রয়েছে ‘মনপুরা’, ‘অজ্ঞাতনামা’, ‘হালদা’র মতো দর্শক নন্দিত সিনেমা। অভিনয়ে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি ছয়বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেছেন।
মোশাররফ করিম: দেশের আরেকজন তুমুল জনপ্রিয় অভিনেতা মোশাররফ করিম। ১৯৭১ সালের এদিনেই ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন এ অভিনেতা। তবে তার পৈত্রিক বাড়ি বরিশালে। স্কুল থিয়েটারে তার অভিনয়ে দক্ষতার জন্ম হয়। ১৯৮৬ সালে মাধ্যমিক পাশ করে বর্ষীয়ান অভিনেতা তারিক আনাম খান-এর নাট্যকেন্দ্র অভিনয় শুরু করেন তিনি।
১৯৯৯ সালে খণ্ডনাটক ‘অতিথি’র মাধ্যমে ছোটপর্দায় অভিষেক ঘটে মোশাররফ করিমের। সেই থেকে এখন পর্যন্ত অসংখ্য জনপ্রিয় নাটক উপহার দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। ২০০৪ সালে তৌকীর আহমেদের ‘জয়যাত্রা’ সিনেমার মাধ্যমে বড় পর্দায় প্রথম হাজির হন এই অভিনেতা। এরপর একে একে ‘দারুচিনি দ্বীপ’, ‘থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার’, ‘টেলিভিশন’, ‘জালালের গল্প’, ‘অজ্ঞাতনামা’র মতো সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি।
রশীদ ঈশিতা: অভিনেত্রী রুমানা রশীদ ঈশিতা ১৯৮৫ সালের ২২ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনের প্রতিভা অন্বেষণমূলক আয়োজন ‘নতুন কুঁড়ি’তে চ্যাম্পিয়ন হওয়া শিশুশিল্পী তিনি। ওই সময়েই তারকাখ্যাতি পান। তাকে কেন্দ্র করে নির্মিত হয় নাটক। বড় হয়েও জনপ্রিয়তা ধরে রাখেন এ তারকা।
আরও পড়ুন: আবারও নাটকে ঈশিতা, নায়ক আফরান নিশো
ঈশিতার প্রথম অভিনীত নাটক ছিল ইমদাদুল হক মিলনের রচনায় ও ফখরুল আবেদীনের পরিচালনায় ‘দু’জনে’। এরপর বড় হয়ে শহীদুল হক খানের ‘তিথি’নাটকের মধ্যমে নায়িকা হিসেবে যাত্রা শুরু করেন তিনি। ঈশিতা শুধু অভিনেত্রী নন, পরিচালক, লেখিকা ও গায়িকা হিসেবেও নিজেকে মেলে ধরেছেন। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নাটকের মধ্যে রয়েছে- ‘চক্রবলয়’, ‘দেখা’, ‘সাদা পাতায় কালো দাগ’, ‘থাকা না থাকার মাঝখানে’, ‘কাগজের গল্প’ ইত্যাদি।
ডলি সায়ন্তনী: কণ্ঠশিল্পী ডলি সায়ন্তনীর জন্ম পাবনায়। ১৯৯০ সালে নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় মিল্টন খন্দকারের কথা ও সুরে সেলেক্স-এর ব্যানারে ডলির প্রথম একক অ্যালবাম ‘হে যুবক’ বাজারে আসে। মাসুদ পারভেজ প্রযোজিত ‘ঘেরাও’ সিনেমাতে তিনি প্রথম প্লে-ব্যাক করেন। ডলি সায়ন্তনীর শ্রোতাসমাদৃত অ্যালবামের মধ্যে রয়েছে- ‘কালিয়া’, ‘নীরব রাতে’, ‘বিরহী প্রহর’, ‘সুখে থেকো’, ‘নিতাইগঞ্জে জমছে মেলা’ ও ‘বাংলাদেশের মেয়ে’।
সুনেরাহ বিনতে কামাল: বর্তমান প্রজন্মের আলোচিত অভিনেত্রী সুনেরাহ বিনতে কামাল। ১৯৯৫ সালের ২২ আগস্ট ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
মডেলিং দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করলেও সুনেরাহর স্বপ্ন ছিল বড় পর্দা। আর সেই স্বপ্ন পূরণ হয় ২০১৯ সালে তানিম রহমান অংশু পরিচালিত ‘ন’ ডরাই’ সিনেমার মাধ্যমে। প্রথম সিনেমাতেই তিনি হইচই ফেলে দিয়ে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে জিতে নেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
এমআই/এমএমএফ/জিকেএস