অভিনেত্রী দিতি আর নেই


প্রকাশিত: ১০:৪৫ এএম, ২০ মার্চ ২০১৬

দীর্ঘদিন ক্যানসারের সঙ্গে যুদ্ধ করে অবশেষে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন নন্দিত চলচ্চিত্র অভিনেত্রী পারভীন সুলতানা দিতি। আজ রোববার বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না…..রাজিউন)।

জাগো নিউজকে খবরটি নিশ্চিত করেছেন ইউনাইটেড হাসপাতালের চিফ অব কমিউনিকেশনস ডা. সাগুফা আনোয়ার।

গেল বছরের মাঝামাঝি সময়ে মস্তিষ্কে ক্যানসার ধরা পড়ে দিতির। তখন চিকিৎসার জন্য তাকে ভারতের মাদ্রাজ ইনস্টিটিউট অব অর্থোপেডিকস অ্যান্ড ট্রমাটোলজি (এমআইওটি) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দুই দফা চিকিৎসা শেষে রেডিয়েশনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ‘পারকিনসন’ রোগে আক্রান্ত হন দিতি।

চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, এই রোগ থেকে কোনোদিনই মুক্ত হবেন না দিতি। বাধ্য হয়েই মাকে নিয়ে গেল ৮ জানুয়ারি দেশে ফিরে আসেন দিতির ছেলে সাফায়েত চৌধুরী ও মেয়ে লামিয়া চৌধুরী। একই দিন সরাসরি ভর্তি করানো হয় গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে। এতদিন তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় স্মৃতি শক্তি হারিয়ে ফেলেছিলেন দিতি।

এদিকে দিতির মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে চলচ্চিত্রাঙ্গনে। শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির মহাসচিব মুশফিকুর রহমান গুলজার। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘দিতি আমাদের চলচ্চিত্রের একজন গুণী অভিনেত্রী। অসংখ্য সুপারহিট ছবি তিনি উপহার দিয়েছেন। তার চলে যাওয়াটা বড় অকালেই হয়ে গেল। দিতির বিদেহি আত্মার জন্য দোয়া করবেন সবাই।’

পাশাপাশি এই শোকের কঠিন সময়ে দিতির সন্তানদের পাশে থাকার জন্য সবার কাছে অুনরোধ জানিয়েছেন গুলজার।

দিতির মৃত্যুতে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রহমান, বাংলাদেশে শিল্পী সমিতির সাধারন সম্পাদক অমিত হাসান, চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন, রিয়াজ, ফেরদৌস, মৌসুমী, ওমর সানি, শাবনূরসহ আরো অনেকেই।

পারভীন সুলতানা দিতি ১৯৬৫ সালের ৩১ মার্চ নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁওয়ে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই গান ও অভিনয়ের প্রতি দিতির ছিলো দুনির্বার আকর্ষণ।

সেই সূত্রেই ১৯৮৪ সালে নতুন মুখের সন্ধানের মাধ্যমে দেশীয় চলচ্চিত্রে দিতির সম্পৃক্ততা ঘটে। তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র উদয়ন চৌধুরী পরিচালিত ‘ডাক দিয়ে যাই’। কিন্তু ছবিটি শেষ পর্যন্ত মুক্তি পায়নি। দিতি অভিনীত মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম চলচ্চিত্র ছিল ‘আমিই ওস্তাদ’। ছবিটি পরিচালনা করেছিলেন আজমল হুদা মিঠু। এরপর দিতি প্রায় দুই শতাধিক ছবিতে কাজ করেছেন।

সুভাষ দত্ত পরিচালিত ‘স্বামী স্ত্রী’ ছবিতে দিতি আলমগীরের স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করেন। এই ছবিতেই অভিনয় করে দিতি প্রথমবারের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।

দীর্ঘ ক্যারিয়ারে দিতি আকাশ ছোঁয়া জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে জুটি বেঁধে। ব্যক্তি জীবনে তিনি ভালোবেসেই বিয়ে করেছিলেন চিত্রনায়ক সোহলে চৌধুরী। সেই সংসারে সাফায়েত নামের এক ছেলে ও লামিয়া নামের এক মেয়ে রয়েছে দিতির।

এলএ/এএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।