সম্মাননা পাচ্ছেন কুমার বিশ্বজিৎ


প্রকাশিত: ০৬:৫৩ এএম, ১২ মার্চ ২০১৬

দেশের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পীদের একজন তিনি। প্রায় তিন দশক ধরে মুগ্ধ করে রেখেছেন শ্রোতাদের। গান গাওয়ার পাশাপাশি সুর ও সংগীত পরিচালনাও করে থাকেন কালে ভদ্রে। বলছি মিষ্টি কণ্ঠের গায়ক কুমার বিশ্বজিতের কথা।

দীর্ঘ ক্যারিয়ারে নানা ফল্যের হাত ধরে দেশে বিদেশের নানা সম্মাননা ও স্বীকৃতি যোগ হয়েছে এই শিল্পীর মুকুটে। সম্প্রতি সেখানে আরো একটি পালক যোগ করতে যাচ্ছে গীতিকার মাসুদ করিম মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন।

এই সংগঠনটি সম্প্রতি কুমার বিশ্বজিতকে সম্মাননা জানাতে যাচ্ছে। শিল্পীর সঙ্গে আরো সম্মাননা পাবেন সুবীর নন্দী, তিমির নন্দী, শুভ্রদেব, ফওজিয়া খান, ফরিদা পারভিন, শাহীন সামাদ, শাকিলা জাফর, ডলি ইকবাল (নৃত্যে), সুরকার শেখ সাদী খান, গীতিকার হাসান মতিউর রহমান, শাফাত খৈয়াম, সাইফুল ওয়াদুদ হেলাল (ডকুমেন্টারী)।

এর আগে ২০১৪ সালে প্রথমবারের প্রদত্ত এই সম্মাননায় ভূষিত হন ফেরদৌসী রহমান, শাহনাজ রহমতউল­াহ, সাবিনা ইয়াসমিন, রুনা লায়লা, সৈয়দ আবদুল হাদী, মো: আবদুল জবব্বার, মো: খুরশীদ আলম, মাকসুদ, রুমানা ইসলাম শ্রাবণী, সুরকার-সুবল দাস, আলাউদ্দিন আলী, আলম খান, গীতিকার খন্দকার নুরুল আলম, গাজী মাজহারুল আনোয়ার, এস এম হেদায়েত, চলচ্চিত্রে চাষী নজরুল  ইসলাম ও লেখক কাজী আনোয়ার হোসেন। আর ২০১৫ সালে এ সম্মাননা পেয়েছেন কাদেরী কিবরিয়া, এম এ শোয়েব ও শ্রীকান্ত আচার্য্য।

জানা গেছে, গীতিকার মাসুদ করিম মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আজ শনিবার, ১২ মার্চ বিকেল ৪টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে এই বিশিষ্টজনদের হাতে সম্মাননা তুলে দেয়া হবে।

তার আগে গীতিকার প্রয়াত মাসুদ করিম স্মরণে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে দেশের স্বনামধন্য গীতিকার, সুরকার ও শিল্পীবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।

এক নজরে গীতিকার মাসুদ করিম
গীতিকার মাসুদ করিম কুষ্টিয়া জেলার কুমার খালী উপজেলার দুর্গাপুর কাজীপাড়ায় ১৯৩৬ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা রেজাউল করিম ছিলেন একজন সরকারি চাকরিজীবী ও মা নাহার পেশায় গৃহিনী। মাসুদ করিমের স্ত্রী দিলারা আলো একজন সংগীত শিল্পী এবং বাংলাদেশ রেডিও ও টেলিভিশনে তিনি কয়েক যুগ ধরে সংগীত পরিবেশন করেছেন।

মাসুদ করিমের প্রথম চাকরি জীবন শুরু হয় বাংলাদেশ রেডিওতে প্রোগাম অফিসার হিসেবে। এর পরে কয়েক বছর ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৬০ সাল থেকে তিনি রেডিও ও টেলিভিশনের জন্য গান রচনা করতে থাকেন। ষাট, সত্তর ও আশির দশকে তিনি চলচ্চিত্রের জন্য গান রচনা করেন।

রচনা করেছেন অনেক গীতিনকশা, যার মধ্যে অন্যতম স্বাধীনতা দিবস, একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে গানের অনুষ্ঠান ও ঈদের অনুষ্ঠান ইত্যাদি। ১৯৮২ সালে ‘রজনী গন্ধা’ এবং ১৯৯৪ সালে ‘হৃদয়’ ছবির গানের জন্য তিনি গান লিখেছেন। এরপর আরো বেশ কিছু চলচ্চিত্রে তিনি লিখেছেন। তার ‘তন্দ্রাহারা নয়ন আমার’ এবং রুনা লায়লার কন্ঠে ‘যখন থামবে কোলাহল’, ‘শিল্পী আমি তোমাদের গান শোনাব’, ‘আমি সুজন দেখে ভাব করেছি’ ইত্যাদি গানগুলো কালের স্রোতে আজও টিকে রয়েছে শ্রোতাপ্রিয়তায়।

প্রখ্যাত গজল সম্রাট মেহেদী হাসান, শ্যামল মিত্র, ভূপেন হাজারিকাসহ অনেক শিল্পীই তার লেখা গান করেছেন। মাসুদ করিম আজ নেই, কিন্তু তিনি বেঁচে আছেন তার সৃষ্টিকর্মে। নতুন প্রজন্মের কাছে মাসুদ করিমের গান পৌঁছে দিতে তার গান সংগ্রহ ও সংরক্ষণের জন্য কাজ করছেন স্ত্রী দিলারা আলো। তার স্মৃতির উদ্দেশ্যে গঠন করা হয়েছে মাসুদ করিম মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন।

এলএ/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।