শুরু হচ্ছে সিসিমপুরের নতুন মৌসুম
বন্ধু হালুম, টুকটুকি, ইকরি ও শিকু এবার হাজির হচ্ছে একজন নতুন বন্ধুকে নিয়ে। ইউএসএআইডি বাংলাদেশের আর্থিক সহযোগিতায় নির্মিত সিসিমপুরের এবারের সিজনে থাকছে নতুন বন্ধু জুলিয়ার সঙ্গে মজার মজার সব গল্প। যা শিশুদের প্রাক-গণিত, প্রাক-পঠন, অন্তর্ভুক্তীকরণ ও নিজের প্রতি যত্নশীল হওয়ার ব্যাপারে সহায়ক হবে। বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিশুদের সুবিধার জন্য এই সিজনের কিছু পর্বে ব্যবহার করা হয়েছে ইশারা ভাষা।
আরও পড়ুন: ‘জীবনের অনেক কিছু সিসিমপুর থেকে শিখেছি’
শুরু হচ্ছে শিশুদের প্রিয় অনুষ্ঠান সিসিমপুরের নতুন মৌসুম, সিজন-১৫। নতুন এই মৌসুমে হালুম, টুকটুকি, ইকরি ও শিকু হাজির হবে নতুন নতুন সব গল্প নিয়ে আর সঙ্গে থাকবে তাদের নতুন বন্ধু জুলিয়া। জুলিয়া চরিত্রটি সিসিমপুরে বিশেষ সংযোজন। তার মধ্যে আছে অটিজম বিষয়ক বৈশিষ্ট্য। সিসিমপুরে বাংলাদেশের অটিজমসম্পন্ন শিশুদের প্রতিনিধিত্ব করবে জুলিয়া।
ইউএসএআইডি বাংলাদেশের আর্থিক সহযোগিতায় নির্মিত নতুন এই সিজনের স্লোগান- ছন্দে ছন্দে পনেরো এলো- সবাই মিলে এগোই চলো। আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে সিজন-১৫ এর আনকোরা পর্বগুলো দেখা যাবে দুরন্ত টেলিভিশনের পর্দায়।
আরও পড়ুন: তিন বিশ্ব ঐতিহ্যের প্রচারে একসঙ্গে ইউনেস্কো-সিসিমপুর
সবাইকে অন্তর্ভুক্তীকরণ এবং নিজের প্রতি যত্নশীল হওয়া- এই বিষয় দুটিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সাজানো হয়েছে সিসিমপুরের ১৫তম মৌসুম। এছাড়া মজার মজার গল্পের মাধ্যমে প্রাক-গণিত, প্রাক-পঠন, অটিজম, পুষ্টিকর খাবারের গুরুত্ব, বিশ্লেষণধর্মী চিন্তা-ভাবনা, জেন্ডার বিষয়ক প্রচলিত সংস্কারকে জয় করা এবং ভিন্ন ভিন্ন ভাবপ্রকাশের উপায়কে সম্মান দেখানোর মতো বিষয়গুলো তুলে ধরা হবে। থাকবে গণিত, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও বিজ্ঞান নিয়ে দারুণ সব এনিমেশন। শিশুদের নিয়ে লাইভ অ্যাকশন ফিল্ম। এছাড়া ‘ইকরির সাথে বর্ণ চেনা’ এবং ‘টুকটুকির সাথে সংখ্যা চেনা’র প্রতিটি পর্বে ইকরি একটি করে বর্ণ এবং টুকটুকি একটি করে সংখ্যা চেনাবে।
১৫তম সিজনের পর্বগুলো বর্ণনামূলক, ‘শিকুর বিজ্ঞানের জগৎ’ এবং ‘ইকরির সাথে খেলার সময়’ এই তিন ধরনের ফরমেটে তৈরি। এবারের পর্বগুলোতে সিসিমপুরের বন্ধু হালুম, টুকটুকি, ইকরি, শিকুর সাথে নতুন বন্ধু জুলিয়া ছাড়াও অংশ নিয়েছে আমিরা এবং শিকুর সহকারী বানর। এছাড়া থাকছে প্রতিবন্ধী, প্রান্তিক এবং আদিবাসী শিশুরাও। সিসিমপুরের নিয়মিত অন্য চরিত্র তো থাকছেই। এই সিজনের একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য কিছু পর্বে ব্যবহার করা হয়েছে ইশারা ভাষা।
৩০ জানুয়ারি (সোমবার) সিসিমপুরের সিজন-১৫ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত ও অনুষ্ঠানের সম্মানিত অতিথি ইউএসএআইডি’র মিশন ডিরেক্টর ক্যাথরিন ডেভিস স্টিভেন্স।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ের ফিল্ম আর্কাইভ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত নতুন সিজনের উদ্বোধনী আয়োজনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক ড. উত্তম কুমার দাশ, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সদস্য ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান এবং সূচনা ফাউন্ডেশনের সিইওও ডা. সাকী খন্দকার।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন এশিয়াটিকের কো-চেয়ারম্যান সারা যাকের, বিটিভির পরিচালক জগদীশ এষ, মাছরাঙা টেলিভিশনের নির্বাহী পরিচালক অজয় কুমার কুণ্ড এবং ‘ইউএসএআইডি সিসিমপুর’ প্রজেক্টের চিফ অব পার্টি মোহাম্মদ শাহ আলমসহ অনেক গুণীজন। সঙ্গে ছিল সিসিমপুরের বন্ধু বাহাদুর, ইকরি, শিকু, টুকটুকি, হালুম ও নতুন বন্ধু জুলিয়া।
ইউএসএআইডি’র আর্থিক সহযোগিতায় নির্মিত ‘সিসিমপুর’ ২০০৫ সাল থেকে প্রাক-প্রাথমিক শিশু বিকাশ কার্যক্রমের আওতায় ‘সর্বত্র শিশুরা হয়ে উঠুক আরও সম্পন্ন, আরও সবল এবং আরও সদয়’ এই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। সিসিমপুর অনুষ্ঠানটি সম্প্রচারে সহায়তা করছে ‘মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়’ এবং বিদ্যালয়ভিত্তিক কার্যক্রমে সহায়তা করছে ‘প্রথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়’।
‘সিসেমি ওয়ার্কশপ’ একটি অলাভজনক শিক্ষামূলক সংগঠন, যার পেছনে রয়েছে ‘সিসেমি স্ট্রিট’ নামের অনুষ্ঠান, যা টেলিভিশনকে শক্তিশালী শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে ১৯৬৯ সাল থেকে কাজ করে যাচ্ছে। সিসেমি ওয়ার্কশপ এমন একটি উদ্ভাবনী মাধ্যম, যা শিশুদের অনেক বেশি সম্পন্ন, সবল ও সদয় হয়ে উঠতে কাজ করছে। সংস্থাটি ১৫০টিরও বেশি দেশে শিশুদের জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ও জনসেবামূলক কর্মসূচি বা প্রকল্প চালু রেখেছে। এই সব উদ্যোগ বা প্রকল্প বিভিন্ন অঞ্চল বা জনগোষ্ঠীর চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে গবেষণার মাধ্যমে তৈরি করা হয়। আরও তথ্যের জন্য ভিজিট করুন ।
সিসেমি ওয়ার্কশপ বাংলাদেশ (এসডব্লিউবি), সিসেমি ওয়ার্কশপের একটি শাখা অফিস, যা সিসিমপুর নামে টেলিভিশন অনুষ্ঠান তৈরি করে। এটি বিশ্ববিখ্যাত টেলিভিশন প্রোগ্রাম সিসেমি স্ট্রিটের বাংলাদেশি সংস্করণ। বাংলাদেশি শিশুদের শিক্ষাগ্রহণকে আনন্দদায়ক ও উপভোগ্য করার লক্ষ্যে ২০০৫ সাল থেকে টেলিভিশন অনুষ্ঠানটি সম্প্রচারিত হচ্ছে।
এমএমএফ/এমএস