মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন: তিমির নন্দী

মিজানুর রহমান মিথুন
মিজানুর রহমান মিথুন মিজানুর রহমান মিথুন , লেখক ও সাংবাদিক
প্রকাশিত: ০৩:২০ পিএম, ১৫ নভেম্বর ২০২২

বাংলা সংগীতের অন্যতম শিল্পী তিমির নন্দীর জন্মদিন আজ। জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে এ শিল্পীর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, জীবনের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এসেছেন। আপানর জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন কি? তিমির নন্দী কোনো রকমের চিন্তা না করেই জবাবে বললেন, ‘আমার একজনমের স্বার্থকতা ও সেরা অর্জন হচ্ছে ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা। দেশ ও মাটির মুক্তির জন্য আমি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে অংশগ্রহণ করি। আমরা গান গেয়ে রণাঙ্গনে লড়াই করা মুক্তিযোদ্ধা ও দেশের সাধারণ মানুষকে উদ্দীপ্ত করি।’

তিমির নন্দী আরও বলেন, ‘আমার এখনও ভাবতে গর্বে বুকটা ভরে যায় যে, বাংলাদেশ নামের এই রষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় আমার অংশগ্রহণ ছিল।’

আপনি যে স্বপ্ন নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ করেছিলেন সেই স্বপ্ন কতটা পূরণ হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিমির নন্দী বলেন, ‘১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর দেশটা মতাদর্শের ভিত্তিতে দুভাগে ভাগ হয়ে যায়। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ ও বিপক্ষ- এই দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে যাওয়া জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক। স্বাধীনতার বিপক্ষ নামক পাকিস্তানী প্রেতাত্মাদের এখনও দেখতে হচ্ছে এটা সত্যিই কষ্টকর।’

তিমির নন্দীর জন্মদিনে পারিবারিকভাবে তেমন কোনো আয়োজন না থাকলেও রাতে পরিবোরের সবাই মিলে কোনো রেস্টুরেন্টে ডিনার করবেন। এদিকে তার কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা ফুল, চকলেট ও বিভিন্ন ধরনের উপহার সামগ্রী দিয়ে সকালে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

jagonews24

উল্লেখ্য, শিল্পী তিমির নন্দী মাত্র তিন বছর বয়সে নিজে নিজে তবলা বাজাতে শেখেন। তিনি ১৯৬৯ সাল থেকে বেতার ও টেলিভিশনে গান করছেন। এর কিছুদিন পরেই মুক্তিযুদ্ধ শুরু। তিমির নন্দীও যুদ্ধে জড়িয়ে যান। অস্ত্র দিয়ে নয়, কণ্ঠ দিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন এই শিল্পী।

তিমির নন্দী ১৯৭৩ সালে সংগীত কলেজের ছাত্র থাকা অবস্থায় তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন সরকারের বৃত্তি পেয়ে সংহীতে উচ্চশিক্ষার জন্য রাশিয়া গমণ করেন। সেখানে তিনি মিউজিকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি বাংলাদেশের প্রথম শিল্পী, যিনি ইউরোপ থেকে সংগীতে মাস্টার্স করেছেন।

তিমির নন্দীর বেশ কয়েকটি একক, দ্বৈত ও যৌথ গানের ক্যাসেট ও সিডি প্রকাশিত হয়েছে। পরবর্তী সময়ে দেশে ফিরে নিয়মিত সংগীতচর্চা করেন। তার গাওয়া ‘ওগো চাঁদ কোথায় পেয়েছ এত আলো’, ‘বাঁধন খুলে দিলাম’, ‘চাঁদের পানে চেয়ে চেয়ে’, ‘মনোবীণাতে রয়ে রয়ে’, ‘ঝর ঝর বারিধারা সন্ধ্যায়’, ‘এ আমার জীবন ধোয়া শ্রেষ্ঠ পরিচয়’ ও কভার সং ‘তোমারে লেগেছে এত যে ভালো’ শিরোনামের গানগুলো এখনো শ্রোতাদের মুখে মুখে ফেরে। এখনও তিনি বেতার-টেলিভিশনে নিয়মিত সংগীত পরিবেশন করছেন।

এমএমএফ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।