বিচারপতি মানিককে নিয়ে সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তি
আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরীর লেখা রায় গ্রহণ করতে প্রধান বিচারপতিকে দেয়া চিঠির বিষয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিয়ে প্রেসবিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। রোববার বিকেলে সুপ্রিম কোর্টের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার জেনারেল আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিত এ ব্যাখ্যা দেয়া হয়।
এতে বলা হয়, ‘৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকাজ চলাকালীন সময়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী একটি প্রেস কনফারেন্স করেন যা ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে প্রধান বিচারপতির গোচরীভূত হয়। যদিও সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে এ ধরনের প্রেস কনফারেন্স নজিরবিহীন। প্রধান বিচারপতি আশা করেন, বর্তমান ও ভবিষ্যতে মাননীয় বিচারপতিরা কোর্টের পবিত্রতা ও মর্যাদা বজায় রাখার স্বার্থে এ রূপ কার্য হতে বিরত থাকবেন।’
সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘উক্ত বক্তব্য প্রধান বিচারপতির গোচরে আসলে প্রধান বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারক বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞার দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি প্রধান বিচারপতিকে অবহিত করেন যে সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী তার কাছে লিখিত রায় কিংবা আদেশ গ্রহণ করার জন্য জমা দেননি।’
সেখানে আরো বলা হয়, ‘বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি আশা করেন যে সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মিডিয়াতে মামলার রায় ও আদেশ সংক্রান্ত কোনরূপ বক্তব্য না দিয়ে তার নিকট যতগুলো অনিষ্পিত্তিকৃত রায়ের মামলার ফাইল রয়েছে তা সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের অফিসে অতি স্বত্ত্বর ফেরত প্রদান করবেন, যাতে বিচারপ্রার্থীদের আর ভোগান্তি না হয়।’
এর আগে রোববার সকালে আপিল বিভাগের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক অবসরের পর তার লেখা পূর্ণাঙ্গ রায় ও আদেশ গ্রহণ করতে প্রধান বিচারপতিকে চিঠি জমা দেন বলে নিজেই সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন। পরে চিঠির বিষয় নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে প্রেস ব্রিফিং করেন বিচারপতি মানিক।
চিঠিতে বিচারপতি মানিক বলেন, ‘অবসরে যাওয়ার পর আমি কর্তৃক শুনানিকৃত ও লেখার দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত সকল মামলার রায় ও আদেশ লেখার কাজ ইতোমধ্যেই সমাপ্ত করেছি। বিধায় আমার লেখা রায় ও অদেশ গ্রহণের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক’।
চিঠিতে তিনি আরো লিখেছেন, ‘আমি অবসরে যাওয়ার পর বৈষম্যমূলকভাবে আমার অফিস তালাবদ্ধ করেছেন, সকল অফিস স্টাফ ও সুবিধা থেকে আমাকে বঞ্চিত করায় আমি আমার হাতে লেখা রায় সমূহ টাইপ করতে পারি নাই। অামি ইতিপূর্বে আপনাকে অবহিত করেছি যে আপনার এইরূপ আচরণ সংবিধান, আইন ও প্রথা বিরোধী ও একইসঙ্গে ন্যায় বিচার পরিপন্থী’।
তিনি বলেন, ‘আমার প্রিজাইডিং জজ, মাননীয় বিচারপতি জনাব মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিয়াকে আমার লেখা সমাপ্ত হওয়া রায় ও আদেশগুলো গ্রহণ করার অনুরোধ করলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করে বলেন যে, মাননীয় প্রধান বিচারপতির নির্দেশনা অনুসারে কোনো অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির লিখিত রায় ও আদেশ গ্রহণ করা যাচ্ছে না।’
এফএইচ/এসএইচএস/আরআইপি