নওগাঁয় ইরি-বোরো রোপণে ব্যস্ত কৃষক


প্রকাশিত: ০৮:৪৬ এএম, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

নওগাঁয় ইরি-বোরো ধান লাগানোর মৌসুম চলছে। আর তাই শীতের তীব্রতা উপেক্ষা করেই ইরি-বোরো লাগাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষাণ-কৃষাণীরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকা ও  বাজারে কৃষি উপকরণ (সার, তেল) পর্যাপ্ত থাকায় ইরি-বোরো আবাদে তেমন সমস্যা হচ্ছে না। তবে ধানের দাম বাড়ানোর দিকে সরকারের সুদৃষ্টি দেয়ার দাবি জানিয়েছেন কৃষকরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় চলতি মৌসুমে ১ লাখ ৯৮ হাজার ৪৬৩ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান লাগানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৭৭ হাজার ২৩০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো লাগানো হয়েছে। গত বছর অর্জিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ এক হাজার ৫৯০ হেক্টর। জেলার ১১টি উপজেলার মধ্যে আত্রাই, মান্দা, নিয়ামতপুর ও নওগাঁ সদর উপজেলায় ইরি-বোরোর আবাদের পরিমাণ বেশি। এবার উন্নত জাতের জিরাশাইল, ব্রি-২৮, ২৯, ৩৬ এবং ৫০ ধানের আবাদ করা হচ্ছে।

রাতে ও সকালে শীত থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের তীব্রতা বাড়তে থাকে। বর্তমানে আবহাওয়া ভালো রয়েছে। ভালো রোদ হওয়ায় ধানের চারা জমিতে লাগানোর পর শিকড় দ্রুত বৃদ্ধি হওয়ায় চারা মরে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই।

bro-Dhan

আত্রাই উপজেলার বজ্রপুর গ্রামের মজিদ মন্ডল জানান, শীতের কুশায়া কম থাকায় বীজতলায় কোনো প্রকার ক্ষতি হয়নি। এছাড়া বাজারে সার, তেল ও ওষুধ পর্যাপ্ত থাকায় বোরো আবাদে কোন সমস্যা হচ্ছে না। এবার চার বিঘা জমিতে ব্রি-২৮ ধানের আবাদ করেছেন। ধান আবাদে যে পরিমাণ খরচ হয় বাজারের ধানের দাম কম থাকায় কৃষকদের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।

মান্দা উপজেলার ভারশোঁ গ্রামের কৃষক হারুন অর রশিদ জানান, এবার প্রায় তিন বিঘা জমিতে জিরাশাইল আবাদ করেছেন। শ্রমিক সঙ্কট থাকায় চুক্তি দিতে হয়েছে। বিঘা প্রতি সাড়ে আট’শ থেকে হাজার টাকার মতো দিতে হচ্ছে। বীজতলা থেকে শুরু করে সার, ওষুধসহ জমি লাগানো পর্যন্ত বিঘা প্রতি প্রায় সাড়ে তিন থেকে চার হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। এছাড়া অনেকে ২০০ টাকা করে শ্রমিকে দিয়ে সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কাজ করে নিচ্ছেন।

এছাড়া নিয়ামতপুর উপজেলার শালবাড়ীর চন্দননগর গ্রামের কৃষক খালেকুজ্জামান তোতা, সিরাজুল ইসলাম এবং হাফিজুর রহমান জানান, কৃষিতে উৎপাদন খরচ দিন দিন যেভাবে বাড়ছে সে তুলনায় ধানের দাম বাড়ছে না। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও ধানের দাম বাড়ে না। কিছু দালাল/ফড়িয়ার কারণে প্রতি বছরই কৃষককে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয় জমি বর্গা নিয়ে আবাদ করেন যেসব কৃষক। সরকারকে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় এবং দাম বাড়ানোর জন্য দাবি জানিয়েছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সত্যব্রত সাহা জানান, জেলায় চলতি মৌসুমে ১ লাখ ৯৮ হাজার ৪৬৩ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান লাগানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজারে ইউরিয়া, ফসফেট, টিএসপি, পটাশসহ সকল প্রকার সার, তেলের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় ইরি-বোরো ধানের ভরা মৌসুমেও সঙ্কট থাকবে না। এছাড়া কৃষকদের সাবির্ক পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।

আব্বাস আলী/এসএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।