প্রতারকের খপ্পরে মেহের আফরোজ শাওন, খোয়ালেন ৩২ হাজার টাকা
সম্প্রতি প্রতারকের খপ্পরে পড়ে প্রায় ৩২ হাজার টাকা খোয়ালেন প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের সহধর্মিণী মেহের আফরোজ শাওন। তার কাছে ফোন করে নিজেকে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া পরিচয় দিয়ে একজন প্রতারক বলেন, নুহাশপল্লীর উন্নয়নবাবদ অস্ট্রেলিয়া থেকে বড় অংকের একটি ফান্ড এসেছে, যা বর্তমানে অর্থ মন্ত্রণালয়ে জমা আছে। এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন উপ-সচিবের মোবাইল নম্বরে তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।
শাওন ওই মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করলে অন্য প্রান্ত থেকে নিজেকে উপ-সচিব পরিচয় দিয়ে ফান্ড ট্রান্সফারের জন্য সরকারি ফি বাবদ ৩১ হাজার ৮৫০ টাকা দিতে বলেন।
শাওন সরল বিশ্বাসে টাকা দেওয়ার পর যখন তার সঙ্গে আবারও যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন তখন ওই প্রতারকের নম্বরটি তিনি বন্ধ পান। তখন প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে নুহাশ পল্লীর ম্যানেজার বাদী হয়ে ধানমন্ডি থানায় মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত করতে গিয়ে ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ একজনের সম্পৃক্ততা পায়। এরপর বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. রবিউল ইসলাম (৪১) নামের এক প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়।
তার কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন ও ভুয়া রেজিস্ট্রেশন করা চারটি সিমকার্ড জব্দ করে ডিবি।
বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে জাগো নিউজকে এসব তথ্য জানান অর্গানাইড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের টিম লিডার অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. নাজমুল হক।
তিনি বলেন, ২০১৯ সাল থেকে প্রতারক রবিউল ইসলাম বিভিন্ন কৌশলে সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নম্বর সংগ্রহ করে। পরে ওই নম্বরে কল করে নিজেকে বাংলাদেশের সরকারের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও সংসদ সদস্যদের পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছে কল করে বিদেশি অনুদান এসেছে বলে জানায়। এরপর অনুদান পেতে হলে সরকারি ভ্যাট ট্যাক্স ও প্রসেসিং ফি বাবদ নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা দিতে হবে বলে জানান। ফির টাকা মোবাইল ব্যাংকিং নগদ/বিকাশের মাধ্যমে নিয়ে পরবর্তী সময়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দিতেন প্রতারক রবিউল। দীর্ঘদিন ধরে এসব উপায়ে সহজ-সরল মানুষের সরলতাকে পুঁজি করে প্রতারণা করে আসছিল।
তিনি আরও বলেন, প্রতারক রবিউল ইসলামের নামে আরও বেশ কয়েকটি মামলা চলমান। এ পর্যন্ত তিনটি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। আরও মামলা আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আসামির সঙ্গে আর কেউ জড়িত আছে কি না তা জানতে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। রবিউলকে তিনদিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদনসহ আদালতে পাঠানো হয়েছে।
ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদের নির্দেশনায় অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) ফজলুর রহমানের তত্ত্বাবধানে অর্গানাইড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার জুয়েল রানার নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়।
এমন প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা পেতে সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের পরামর্শ-
> অপরিচিত ব্যক্তির দেওয়া কোনো লোভনীয় প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়া।
> কোথাও লেনদেনের আগে তার সম্পর্কে ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করে লেনদেন করা।
টিটি/জেএস/এএসএম