বাংলাদেশ শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্টের যাত্রা শুরু
সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন নবগঠিত দপ্তর-সংস্থা ‘বাংলাদেশ শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট’র আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) রাজধানীর বাংলা একাডেমির বর্ধমান হাউজে নবগঠিত দপ্তরটির কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, সারা দেশের সব ধরনের শিল্পীদের কল্যাণে বাংলাদেশ শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট কাজ করবে। কবি-সাহিত্যিকদের পাশেও এটি দাঁড়াবে। শিল্পীদের একটি আশ্রয়ের জায়গা হিসেবে এটি কাজ করবে।
দপ্তরটি প্রতিষ্ঠায় সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্টের অনুকূলে ২০ কোটি টাকা দিয়েছিলেন। এ টাকা কীভাবে ব্যবহার করা হবে এর নীতিমালা খুঁজতে গিয়ে সচিব দেখলেন, প্রধানমন্ত্রী ২০০১ সালে বাংলাদেশ শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট আইন অনুমোদন করেছেন। এর আওতায় একটি দপ্তর-সংস্থা খোলার নির্দেশনা দিয়েছেন।’
কে এম খালিদ বলেন, সচিব দপ্তর খোলা সংক্রান্ত আনুষঙ্গিক কাজ সমাধা করেন। এরপর এ বিষয়ক একটি সভায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এরপর আসে দপ্তরটির জায়গা নির্বাচন ও জনবলের প্রশ্ন। জনবল নিয়োগ দিতে অনেক সময় লাগবে বিধায় সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও বাংলা একাডেমি হতে অস্থায়ীভাবে দপ্তরটির জন্য প্রয়োজনীয় জনবলের সংস্থান করা হয়েছে। বাংলা একাডেমির বর্ধমান হাউজে সংস্থাটির অস্থায়ী কার্যালয় স্থাপন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দপ্তরটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব অসীম কুমার দেকে নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দপ্তর-সংস্থার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১৮টিতে।
‘শিল্পীরা স্বাধীনভাবে জীবনযাপন করেন। করোনাকালে সারাদেশের প্রায় ২০ হাজার অসচ্ছল শিল্পীকে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হয়েছে। বাংলাদেশ শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট আইনের আওতায় দপ্তরটি চালু করার কারণে এর তহবিল আরও বৃদ্ধি করা যাবে’ বলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী।
অসচ্ছল শিল্পীদের কল্যাণ সাধন, শিল্পীদের কল্যাণার্থে প্রকল্প বাস্তবায়ন, অসুস্থ শিল্পীদের চিকিৎসা সহায়তা, শিল্পকর্মে বিশেষ অবদানের জন্য বৃত্তি, শিল্পীদের মেধাবী ছেলেমেয়েদের শিক্ষার জন্য সহায়তা, শিল্পী পরিবারকে সহায়তা করাসহ বিভিন্ন কল্যাণমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার উদ্দেশ্যে এ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।
‘বাংলাদেশ শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট আইন, ২০০১’-এর ৬(১) ধারা অনুযায়ী, গত ২০১১ সালের ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশ শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্টের ১৭ সদস্যবিশিষ্ট প্রথম ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করা হয়। সর্বশেষ ২০২০ সালের ১৬ মার্চ ট্রাস্টি বোর্ড পুনর্গঠন করা হয়।
অনুষ্ঠানে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর, বাংলাদেশ শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অসীম কুমার দে, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদারসহ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
আরএমএম/এএএইচ/এএসএম