থানায় গিয়েও মিলছে না তথ্য ফরম : দায়সারা পুলিশ


প্রকাশিত: ০৪:০১ পিএম, ৩০ জানুয়ারি ২০১৬

চামেলিবাগের ভাড়াটিয়া সেজে পল্টন থানায় হাজির। চাই একটি তথ্য ফরম। থানায় এক ঘণ্টা ধরে অপেক্ষার পরেও মিললো না তথ্য ফরম। এক এসআই বলছেন আমি এর দায়িত্বে নেই অন্য কেউ আছেন। সত্যি বলতে চামেলিবাগের দায়িত্বে কে আছেন তাই জানতেই ঘণ্টা পার। দেড় ঘণ্টা পর জানা গেলো বিট পুলিশিংয়ের বিষয়গুলো দেখাভাল করেন এসআই সুজন। তিনি থানায় নেই। তিনি নেই বিধায় তথ্য ফরম পাওয়া আর হলো না।

গত বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে এই প্রতিবেদক ভাড়াটিয়া সেজে পুলিশের কাছে ফরম চাইলে এমন তথ্য উঠে আসে।  এখানেই শেষ নয়, পল্টন থানার ৫ নং বিটের দায়িত্বে রয়েছেন এসআই মমিনুল ইসলাম। কাঙ্খিত এ এসআইকে ফোন করে জানা গেলো তিনি রয়েছেন শান্তিবাগে ডিউটিতে। তিনি ফিরবেন সন্ধ্যায়। দেখা করতে হলে অপেক্ষা করতে বললেন সন্ধ্যাঅবধি। নয়তো অন্য সময়ে আসতে হবে।

আরও ঘণ্টাখানেক কথা বলার পর সাংবাদিক পরিচয় জেনেই শান্তিনগর এলাকার বিট পুলিশের এসআই এমএম হাসান একটি তথ্য ফরম হাতে ধরিয়ে দেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, শুধু পল্টন থানাই নয়, রাজধানীর অধিকাংশ থানারই একই দৃশ্য। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, হয়রানি ও অন্য কেসে নিজেদের ফেঁসে যাওয়ার ভয়েই মূলত তথ্য দিচ্ছেন তারা। তবে থানা পুলিশের সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না বলে অনেকেরই অভিযোগ। থানায় গিয়ে নিজেদের এলাকার ঠিকানা ও ফ্লাট নাম্বার বলেও যথা সময়ে পাওয়া যাচ্ছে না তথ্য ফরম। এজন্য ঘুরতে হচ্ছে সকাল কিংবা বিকেল।

Varatiya-Form
চামেলিবাগের ভাড়াটিয়া আব্দুর সবুর জানান, দীর্ঘদিন বরিশালে গ্রামের বাড়িতে ছিলাম। আবার ঢাকায় আসছি। তথ্য ফরম না পাওয়ায় পল্টন থানায় যাই। তিন দিন ঘুরে ফরম পেয়েছি। ব্যস্ত নগরীতে কার এতো সময় আছে।

গত ৬ মাস আগে রাজধানীর বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহ শুরু করে পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ও জঙ্গিবাদী তৎপরতারোধে এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ঢাহা মহানগর পুলিশ। তবে একই ফরমেই বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়ারা তথ্য সংগ্রহে দ্বিধাদ্বন্দ্বে উভয়ই।

শুরুতে পুলিশের পক্ষ থেকে লিস্ট করে সব বাসা বাড়ির মালিককে একাধিক তথ্য ফরম দেয়া হয়। সে তথ্য ফরম ফটোকপি করে সবাইকে পূরণ করিয়ে নিয়ে থানায় দিয়ে আসতে বলা হয়।

ডিএমপি সূত্র জানায়, চেকপোস্টে পুলিশ সদস্য হত্যা, মিলিটারি পুলিশ হত্যার চেষ্টা, দুই বিদেশি নাগরিক, প্রকাশক হত্যা ও হত্যাচেষ্টা, বোমা হামলাসহ ইত্যাদি কারণে বাড়তি নিরাপত্তার অংশ হিসেবেই এ উদ্যোগ নেয় পুলিশ।  

ভাড়াটিয়াদের নাম-পরিচয়, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা, পিতা-মাতার নাম, ভোটার আইডি কার্ড, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আইডি কার্ড, অফিসিয়াল আইডি কার্ডের কপি রাখার জন্য বাড়িওয়ালাদের বলা হয়েছে। ফরমের সঙ্গে ছবিও নেয়া হচ্ছে। ফরমে বাড়ির নম্বর, কোন বাড়িটি কোন রাস্তায় কিংবা কোন গলিতে তা উল্লেখ করতে হবে। পেশা, মোবাইল নম্বরসহ যাবতীয় বিষয় উল্লেখ করতে হবে।

ভোগান্তির বিষয়ে আত্মপক্ষ অবলম্বন করে পল্টন থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদ আলম জাগো নিউজকে বলেন, ফরমটি উভয়ই পূরণ করতে পারবে। ফরম তো আমরা শুরুতেই বাড়িওয়ালাদের দিয়ে দিয়েছি। তারা ফরম ফটোকপি করে তাদের ভাড়াটিয়াদের দিয়ে পূরণ করিয়ে জমা দেবেন। ব্যক্তি উদ্যোগেও হতে পারে। থানাতেও পাওয়া যাচ্ছে তথ্য ফরম। বিট পুলিশ এক্ষেত্রে সহযোগিতা করছে।

জেইউ/এসকেডি/এএইচ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।