ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ঢাকায় এসে নাচ শিখে আবার ফিরে যেতেন মম!

যে কোনো কাজে সাফল্যের মূল মন্ত্র পরিশ্রম। তার সঙ্গে প্রয়োজন একাগ্রতা, কাজটির প্রতি ভালোবাসা। দিনের পর দিন সাধনা করে তবেই না সাধক হওয়া যায়। আর যে কোনো শিল্প চর্চাই সাধনার জায়গা। এখানে অনেকে অনেক মেধাবী এবং পরিশ্রমী হয়েও টিকে থাকতে পারেন না ওই সাধনা আর অভাবে।

পেরেছেন জাকিয়া বারী মম। সেই শৈশব থেকে যে স্বপ্ন দেখেছেন নিজেকে শিল্পী হিসেবে গড়ে তোলার, সেটা পূরণ করতে পেরেছেন। মম এখন দেশের জনপ্রিয় এক শিল্পীর নাম। অভিনয়, নাচ দিয়ে যিনি মাতিয়ে রেখেছেন। অভিনয় জীবনের প্রথম চলচ্চিত্র ‘দারুচিনি দ্বীপ’-এর জন্য ১৫ বছর আগে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন জাকিয়া বারী মম।

তবে তার চর্চার গল্পটা বেশ উৎসাহের। মাত্র ৩-৪ বয়সে নাচ, গান, ছবি আঁকার ক্লাসে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। ছোটবেলাতেই নাচের জন্য পেয়েছেন জাতীয় শিশু পুরস্কার। শুধু তাই নয়, ছোটবেলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মফস্বল শহরে বেড়ে ওঠা মম মাকে সঙ্গে নিয়ে টানা ১০ বছর সেখান থেকে ঢাকা এসে নাচ শিখেছিলেন।

শিবলী মহম্মদ ও কবিরুল ইসলাম রতন ছিলেন মম’র নৃত্যগুরু। মাছরাঙা টেলিভিশনের নিয়মিত আয়োজন ‘রাঙা সকাল’-এর ঈদ বিশেষ পর্বে অতিথি হয়ে এসে মম তার জীবনের নানা জানা-অজানা গল্পের ডালা মেলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘সকালবেলা ট্রেনে চেপে ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া থেকে রওয়ানা করে ঢাকায় এসে নাচ শিখে আবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিতাম। এ ক্ষেত্রে আমার মা আয়েশা আক্তারের অবদান ছিল সবচেয়ে বেশি। মা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ছিলেন।

তার চাকরি, তখনকার সমাজব্যবস্থা-সবকিছু সামলে আমাকে নিয়ে যে সংগ্রাম করেছিলেন, তারই পরিণতি হয়তো আমার শিল্পী হয়ে ওঠা।’

বিটিভি’তে শিশুদের প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠান ‘নতুন কুঁড়ি’তেও পুরস্কৃত হয়েছিলেন মম। গান গাওয়ার জন্য ১৯৯৫ সালে এসেছিল এ পুরস্কার। অথচ নাচ কিংবা গানে নয়, এখন অভিনয়েই নিয়মিত তিনি।

মম’র নানা বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। মম’র হাতে থাকা নতুন দুইটি সিনেমাও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক; একটি খিজির হায়াত খান পরিচালিত ‘ওরা ৭ জন’, অন্যটি অনন্য মামুন পরিচালিত ‘রেডিও’। সাম্প্রতিক সময়ে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে ‘মহানগর’, ‘কন্ট্র্যাক্ট’, ‘রিফিউজী’ বা অতি সম্প্রতি ভিন্ন ধারার কাজ ‘কোহিনূর’-এ ময়লাওয়ালীর চরিত্রে অভিনয় করে ভীষণভাবে প্রশংসিত হয়েছেন মম। এই সাফল্যের জয়যাত্রা অক্ষুন্ন রাখতে চান মম নিজেও।

রুম্মান রশীদ খান ও খালেদা’র উপস্থাপনায় মাছরাঙা টেলিভিশনে ‘রাঙা সকাল’-এর এই বিশেষ পর্বটি প্রচারিত হবে ঈদের ৩য় দিন সকাল ৭টায়। অনুষ্ঠানটি প্রযোজনা করেছেন জোবায়ের ইকবাল।

এলএ/এমএস