শাশ্বত বাংলার গর্ব জননন্দিত অভিনেত্রী শাবানা: নিপুণ

বিনোদন প্রতিবেদক
বিনোদন প্রতিবেদক বিনোদন প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:৩০ পিএম, ১৫ জুন ২০২২

বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের সোনালী দিনের প্রথম সারির নায়িকা শাবানা। অনেকদিন অভিনয়ে নেই। তবু আজও তার আবেদন এতটুকুও কমেনি। গ্রাম বাংলার নারীর চির শাশ্বত যে রুপ তার প্রতীকই যেন শাবানা। প্রেমে, আবেগে, স্নেহ, মায়া ও প্রয়োজনে বিপ্লবী চরিত্রের বাঙালি নারীর সৌন্দর্য তিনি বহুবার ফুটিয়ে তুলেছেন রুপালি পর্দায়।

টানা তিন দশক তার সুনিপুণ অভিনয়ের মাধ্যমে জয় করে নিয়েছেন কোটি দর্শকের মন। তার পারিবারিক নাম আফরোজা সুলতানা রত্মা। ১৫ জুন এই কালজয়ী অভিনেত্রীর জন্মদিন। এদিনে তার ভক্ত অনুরাগী ও কাছের মানুষেরা তাকে স্মরণ করছেন শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায়।

শাবানাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা দিলেন অভিনেত্রী নিপুণ আক্তারও। তিনি কিংবদন্তি অভিনেত্রীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে তাকে শাশ্বত বাংলার গর্ব বলে উল্লেখ করেছেন।

নিপুণ তার ফেসবুকে শাবানার সঙ্গে ছবি দিয়ে বলেন, ‘শা = শাশ্বত। বা = বাংলার আর না = নাজ (গর্ব)।’

নিপুণ আরও বলেন, ‘জননন্দিত অভিনেত্রী- একজন শাবানা। আমাদের প্রেরণাদায়িনী। লাবণ্যময়ী , কিংবদন্তি, মাতৃপ্রতিম। এই মহান শিল্পীর আজ শুভ জন্মদিনে আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধা। আপনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু করছি।’

শাবানা এবার ৭০ বছরে পা রাখলেন। ১৯৫২ সালের ১৫ জুন চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার ডাবুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন শাবানা। ঢাকার গেন্ডারিয়া হাই স্কুলে ভর্তি হলেও মাত্র ৯ বছর বয়সে তার শিক্ষা জীবনের ইতি ঘটে। ১৯৬২ সালে ‘নতুন সুর’ চলচ্চিত্রে শিশুশিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন শাবানা।

ওই সময় পর্দায় নাম ছিল রত্না। এরপর ‘তালাশ’-সহ বেশ কয়েকটি সিনেমায় নৃত্যশিল্পী ও অতিরিক্ত শিল্পী হিসেবে অভিনয় করেন তিনি। সহনায়িকা চরিত্রে দেখা যায় ‘আবার বনবাসে রূপবান’ ও ‘ডাক বাবু’তে। ১৯৬৭ সালে এহতেশাম পরিচালিত ‘চকোরী’তে চিত্রনায়ক নাদিমের বিপরীতে নায়িকা হয়ে অভিনয় করেন তিনি। আর তখন রত্না থেকে হয়ে যান শাবানা।

বাংলা ও উর্দু ভাষায় নির্মিত ‘চকোরী’ ছবি ব্যবসা সফল হয়। এর পর থেকে শাবানাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। তিন দশকের ক্যারিয়ারে নাদিম, রাজ্জাক, আলমগীর, ফারুক, জসীম, সোহেল রানার সঙ্গে জুটি বেঁধে শাবানা উপহার দেন জনপ্রিয় অনেক ছবি। তার উল্লেখ্যযোগ্য ছবিগুলো হচ্ছে, ‘ভাত দে’, ‘অবুঝ মন’, ‘ছুটির ঘণ্টা’, ‘দোস্ত দুশমন’, ‘সত্য মিথ্যা’, ‘রাঙা ভাবী’, ‘বাংলার নায়ক’, ‘ওরা এগারো জন’, ‘বিরোধ’, ‘আনাড়ি’, ‘সমাধান’, ‘জীবনসাথী’, ‘মাটির ঘর’, ‘লুটেরা’, ‘সখি তুমি কার’, ‘কেউ কারো নয়’, ‘পালাবি কোথায়’, ‘স্বামী কেন আসামি’, ‘দুঃসাহস’, ‘পুত্রবধূ’, ‘আক্রোশ’ ও ‘চাঁপা ডাঙার বউ’।

অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে শাবানা দশবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা।

অন্যান্য পুরস্কারের মধ্যে রয়েছে- প্রযোজক সমিতি পুরস্কার, বাচসাস পুরস্কার, আর্ট ফোরাম পুরস্কার, নাট্যসভা পুরস্কার, কামরুল হাসান পুরস্কার, নাট্য নিকেতন পুরস্কার, ললিতকলা একাডেমি পুরস্কার ও কথক একাডেমি পুরস্কার। এ ছাড়া বাংলাদেশের হয়ে বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নেন শাবানা। ১৯৭৩ সালে সরকারি কর্মকর্তা ওয়াহিদ সাদিককে বিয়ে করেন শাবানা। দু‘জনে মিলে প্রতিষ্ঠা করেন প্রযোজনা সংস্থা এসএস প্রোডাকশন। ওই প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে নির্মিত হয়েছে অনেক জনপ্রিয় সিনেমা।

১৯৯৭ সালে শাবানা অজানা কারণে হঠাৎই বিদায় নেন চলচ্চিত্র থেকে। ২০০০ সাল থেকে সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সিতে বসবাস করছেন শাবানা। এরপর বেশ কয়েকবার বাংলাদেশে আসলেও জনসম্মুখে দেখা যায়নি এ অভিনেত্রীকে।

এলএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।