হিরো হওয়ার গল্প শোনালেন নিলয়
চলচ্চিত্রে শিল্পী সংকট কাটাতে আয়োজন করা হয়েছিলো ‘সুপার হিরো সুপার হিরোইন’ প্রতিযোগীতা। সেখানে অংশ নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন নিলয় আলমগীর।
তারপর মুঠোফোন বিজ্ঞাপনের মডেল হয়ে সর্বাধিক নজর কাড়েন তিনি। টিভি নাটকের পাশাপাশি সানিয়াত হোসেনের ‘অল্প অল্প প্রেমের গল্প’ দিয়ে চলচ্চিত্রে পা রাখেন নিলয়। তবে সবকিছু ছাপিয়ে তিনি বরাবরই আলোচনায় ছিলেন মডেল ও অভিনেত্রী আনিকা কবির শখের সাথে প্রেম নিয়ে। মাঝখানে মান-অভিমান চললেও সম্প্রতি তারা বিয়ে করেছেন।
এদিকে আজ মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারি অভিনেতা নিলয় নিজের ফেসবুকে জানালেন ‘সুপার হিরো সুপার হিরোইন’ প্রতিযোগীতায় চ্যাম্পিয়ন হবার গল্প। জানালেন ভোট পাবার জন্য এসএমস অভিজ্ঞতার কথা। নিলয় ভ্ক্ত ও জাগো নিউজের বিনোদন পাঠকদের জন্য সেটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
২০০৮। এনটিভি, বিএফডিসি, মার্কেট এক্সেস মিলে শুরু করলো নতুন মুখের সন্ধান `সুপার হিরো সুপার হিরোইন`। বড় বোনের উৎসাহে অংশগ্রহণ করলাম। প্রথম তিনটি রাউন্ড উত্তীর্ণ হওয়ার পর শুরু হলো এসএমএস রাউন্ড।
পোস্টারিং হলো, পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন উঠে পড়ে লাগলো- কিভাবে ভোট বেশি পাওয়া যায়। শুরু হলো কয়েক ঘন্টার ভোট উৎসব।
রেজাল্ট হলো। ১২০০০ (বার হাজার) ভোট পেলাম। বিচারকদের মার্কস ভালো পেয়ে পরের রাউন্ডে গেলাম। সর্ব্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত প্রতিযোগীর মাধ্যমে জানলাম এভাবে ভোট ভিক্ষা করে লাভ নেই।
তাহলে কি করলে লাভ হবে? নিজের টাকা দিয়ে মোবাইল কার্ড কিনে তারপর ভোট করতে হবে। তবে এক সিম থেকে ৩০ টার বেশি নয়। শুরু হলো আমার নতুন যুদ্ধ। বন্ধুদের দেখেছি পিকনিকের মত চাঁদা উঠিয়ে ভোট করেছে, রাস্তায় দাঁড়িয়ে মানুষের মোবাইলে কার্ড ভরে ভোট করেছে। বাকিদের ফোনে জিজ্ঞেস করেছি, বলেছে তারা প্রচুর ভোট করছে আমার জন্য।
রেজাল্ট হলো। ৩৬০০০ (ছত্রিশ হাজার) ভোট পেলাম। যেখানে বাকিরা ৬০/৭০/৮০/৯০ হাজার পেয়েছে। হতাশ হলাম। বন্ধুরা বললো, নিজেদের টাকা দিয়েই তো এর থেকে বেশি ভোট করেছি। অর্থাৎ যারা বলেছে ভোট করবো বা করেছি, তারা আমার জন্য কিছুই করেনি। তারা নিজে ভোট না করে অন্যদের ভোট করার কথা বলেছে। তাই ভোট বাড়েনি, প্রচারণা বেড়েছে! যেটা আমার দরকার ছিলো না।
এরপর আরেকজন অভিজ্ঞ বললেন, ভোটের পেছনে টাকা বা সময় নষ্ট করোনা। পারফরমেন্স ভালো কর, ভোট ব্যাপার না। সেইবার কাউকে ভোট দেওয়ার কথা বললাম না। কারণ ততক্ষনে সবাই ভোট দিতে দিতে বিরক্ত। রেজাল্ট হলো। সর্বনিম্ন ভোট পেলাম। সংখ্যা মনে নেই। চলে গেলাম ডেঞ্জার জোনে। বিচারকদের ভোটে ফিরে এলাম। আত্মবিশ্বাস বাড়লো।
ফাইনাল রাউন্ড। তেমন বেশি প্রচারণা নেই। টাকা দিয়ে এসএমএস করার তাড়া নেই, কাছের কিছু বন্ধু ছাড়া। ২০০৯ এর ২১ অক্টোবর রেজাল্ট হলো, ভোট এর পরিমান বলেনি তবে চ্যাম্পিয়ন হয়ে খুশি ছিলাম অনেক। আলহামদুলিল্লাহ।
যারা এসএমএস করেছেন এবং যারা নিজে না করে শুধু অন্যদেরকে এসএমএস করতে বলেছেন তাদের সবাইকে ধন্যবাদ।
যখন অনেকের কাছ থেকে শুনি, ‘তোমাকে এসএমএস করে হিরো বানালাম’। তখন ভাবি তাদের ভোটগুলি কোথায় গেল? আমার সামনে বসে যারা এসএমএস করেছে, আমার সামনে যারা নিজের টাকা দিয়ে কার্ড কিনে রাস্তার মানুষের মোবাইল দিয়ে ভোট করেছে, তারা তো কোনওদিন বলেনি আমায়- ‘নিলয় তোকে ভোট করে হিরো বানিয়েছি’।
এলএ