‘রুপোর থালা ছাড়া ভাত মুখে তুলতেন না বাপ্পিদা’
ভারতীয় সংগীতাঙ্গনে আরও এক জ্বলজ্বলে নক্ষত্রের পতন। লতা মঙ্গেশকর ও সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুর শোক কাটিয়ে ওঠতে না ওঠতেই উপমহাদেশের আরেক প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী বাপ্পি লাহিড়ি মারা গেছেন। নিজের গান দিয়ে নাচিয়ে ছেড়েছিলেন ছোটবড় সকলকেই। ‘ডিস্কো কিং’র তকমাও পেয়েছিলেন তিনি।
৬৯ বছর বয়সে তার মৃত্যু যেন মেনেই নিতে পারছেন না ভক্ত-অনুরাগীরা। বলিউড থেকে শুরু করে সমগ্র ভারতেই চলছে শোকের মাতম।
বাপ্পি লাহিড়ির নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দ বাজারে স্মৃতি কথা লিখেছেন লেখক ও গায়ক শিবাজী চট্টোপাধ্যায় বাপ্পিদার বাড়িতে একসঙ্গে বসে কত কত ম্যাচ দেখেছি ওয়ার্ল্ডকাপের সময়ে। ওর বাড়িকে নিজেদের বাড়িই মনে করতাম। ওর ড্রয়িং রুম যেন আমাদেরই ছিল। বাপ্পিদার বাড়ি খাওয়া-দাওয়ার বাহার ছিল দেখার মতো। তবে হ্যাঁ, বাপ্পিদার খাওয়া দাওয়ার নিয়ম একেবারে আলাদা। অনেক বেলায় ঘুম থেকে উঠে বিকেল নাগাদ ভাত খেতেন। কিন্তু রুপোর থালা ছাড়া ভাত মুখে তুলতেন না। এই কথাগুলি লিখতে লিখতে একটি মজার ঘটনা মনে পড়ল।
এক বার আমাদের নিমন্ত্রণ করেছিলেন নৈশভোজের জন্য। সে দিন সন্ধ্যা থেকে রেকর্ডিংও ছিল। কাজ সেরে ওর বাড়ি ঢুকতে ঢুকতে রাত তিন টে বেজে গিয়েছিল। নৈশভোজ যখন শেষ হল, তখন ঘড়িতে প্রায় ভোর চার টে। বাপ্পিদার জীবনে তা খুবই স্বাভাবিক।
খুব সংসারী মানুষ বাপ্পিদা। ছেলে, স্ত্রী, মা, বাবা, সবার যত্ন নিতেন। মুম্বইয়ে বাংলার সংস্কৃতিকে তুলে ধরেছিলেন তিনি। বাপ্পিদা বেলা করে ঘুম থেকে উঠতেন বলে তাঁর অতিথিদের আপ্যায়ন করতেন বাপ্পিদার বাবা অপরেশ লাহিড়ি। তিনিও মজাদার আড্ডাবাজ লোক ছিলেন।
কলকাতায় এসে যে হোটেলেই উঠতেন, রাত্রিবেলায় হইহই করে দেখা করতে যেতাম আমরা বন্ধুরা। সেই মিষ্টি মানুষটি নেই আর। হইহই-ও বন্ধ।
এমআই/জেআইএম