দাম্পত্য কলহের জেরে নায়িকা শিমুকে হত্যা করেন স্বামী
পারিবারিক ও দাম্পত্য কলহের জেরে চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমুকে হত্যা করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এই হত্যার দায় স্বীকার করেছেন তার স্বামী সাখাওয়াত আলী নোবেল।
মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এসব কথা বলেন ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মারুফ হোসেন সরদার।
তিনি বলেন, সোমবার সকাল ১০টার দিকে কেরানীগঞ্জের হজরতপুর ইউনিয়নের আলীপুর ব্রিজ সংলগ্ন ঝোপের ভেতর থেকে বস্তাবন্দি এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহের সুরতহাল তৈরি করে পরিচয় শনাক্তে আঙুলের ছাপ নেওয়া হয় এবং ময়নাতদন্তের জন্য মিটফোর্ড হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় নাম-পরিচয় শনাক্ত করা হয়। তদন্তকালে জানা যায়, মরদেহটি চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমুর।
এসপি মারুফ হোসেন বলেন, চাঞ্চল্যকর এই হত্যার মূলরহস্য উদঘাটনে ঢাকার পুলিশ সুপারের নির্দেশে কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ ব্যাপক তৎপরতা শুরু করে। কেরানীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাৎক্ষণিকভাবে চিত্রনায়িকা শিমুর বাসায় যায় এবং তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করে। আমরা ঘটনাস্থল থেকে গুরুত্বপূর্ণ আলামত জব্দ করি এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিমুর স্বামী খন্দকার শাখাওয়াত আলী নোবেল (৪৮) ও তার বাল্যবন্ধু এস এম ওয়াই আব্দুল্লাহ ফরহাদকে (৪৭) রাতেই কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় নিয়ে আসা হয়।
তিনি আরও বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে শিমুর স্বামী খন্দকার শাখাওয়াত আলী নোবেল ও তার বন্ধু এস এম ওয়াই আব্দুল্লাহ ফরহাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। বিভিন্ন পারিবারিক বিষয়কে কেন্দ্র করে স্বামী নোবেলের সঙ্গে কলহ শুরু হয় শিমুর। এর জেরে রোববার বা সোমবার যেকোনো সময় খুন হন তিনি। শিমুর স্বামী নোবেল ও তার বাল্যবন্ধু ফরহাদ বর্তমানে থানা হেফাজতে আছেন।
স্বামী ও দুই সন্তানকে নিয়ে রাজধানীর কলাবাগান এলাকার বাসায় থাকতেন শিমু। রোববার (১৬ জানুয়ারি) সকালে বাসা থেকে বেরিয়ে তিনি আর ফেরেননি। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় রাতেই কলাবাগান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। পরদিন সোমবার কেরানীগঞ্জের হজরতপুর ব্রিজের কাছে আলিয়াপুর এলাকায় রাস্তার পাশ থেকে শিমুর বস্তাবন্দি খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত শিমুর ভাই শহিদুল ইসলাম খোকন রাতে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তার বোনজামাই নোবেল প্রায়ই শিমুকে মারধর করতেন। তিনি মাদকাসক্ত।
১৯৯৮ সালে কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘বর্তমান’ ছবির মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক অভিনেত্রী শিমুর। এরপর দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, চাষি নজরুল ইসলাম, শরিফ উদ্দিন খান দিপুসহ আরও বেশ কিছু পরিচালকের প্রায় ২৫টির মতো চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন তিনি। অভিনয় করেছেন রিয়াজ, শাকিব খান ও অমিত হাসানসহ বেশকিছু তারকার সঙ্গে।
চলচ্চিত্রের পাশাপাশি কয়েকটি টিভি নাটকে অভিনয় ও প্রযোজনায় করেছেন শিমু। তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সহযোগী সদস্য ছিলেন।
জেএ/জেএইচ/এলএ/জেআইএম