শফিক তুহিনের মামলায় আসিফের বিচার শুরু
কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবরের বিরুদ্ধে সংগীতশিল্পী শফিক তুহিনের দায়ের করা তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের মামলায় অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। অভিযোগ গঠনের ফলে মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেন অব্যাহতির আবেদন নামঞ্জুর করে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। একই সঙ্গে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ২৩ জুন দিন ধার্য করেন আদালত। অভিযোগ গঠনের সময় নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন আসিফ।
এর আগে সোমবার (৮ নভেম্বর) সংগীতশিল্পী ও সুরকার শফিক তুহিনের দায়ের করা মামলায় ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে হাজিরা দেন আসিফ। ওইদিন এ মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। রাষ্ট্রপক্ষ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি করেন। অন্যদিকে, আসিফের আইনজীবী মামলার দায় থেকে তার অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেন। ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেন উভয়পক্ষের শুনানি শেষে অধিকতর অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য ১৩ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন।
২০১৮ সালের ৪ জুন সন্ধ্যায় সংগীতশিল্পী ও সুরকার শফিক তুহিন তেজগাঁও থানায় তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনে আসিফের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় আসিফ ছাড়া আরও চার-পাঁচজন অজ্ঞাতনামা আসামি রয়েছেন।
মামলার এজাহারে বাদী শফিক তুহিন উল্লেখ করেন, ২০১৮ সালের ১ জুন আনুমানিক রাত ৯টার দিকে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের এক অনুষ্ঠানের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন যে, অনুমতি ছাড়াই তার সংগীতকর্মসহ অন্য গীতিকার, সুরকার ও শিল্পীদের ৬১৭টি গান বিক্রি করেছেন আসিফ আকবর। পরে তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করে জানতে পারেন, আসিফ আকবর আর্ব এন্টারটেইনমেন্টের চেয়ারম্যান হিসেবে অন মোবাইল প্রাইভেট লিমিটেড কনটেন্ট প্রোভাইডার, নেক্সনেট লিমিটেড, গাক মিডিয়া বাংলাদেশ লিমিটেড ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গানগুলো ডিজিটাল রূপান্তরের মাধ্যমে ট্রু-টিউন, ওয়াপ-২, রিংটোন, পিআরবিটি, ফুলট্রেক, ওয়াল পেপার, অ্যানিমেশন, থ্রি-জি কন্টেন্ট ইত্যাদি হিসেবে বাণিজ্যিক ব্যবহার করে অসাধুভাবে ও প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল অর্থ উপার্জন করেছেন।
ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শফিক তুহিন ওই বছরের ২ জুন রাত ২টা ২২ মিনিটে তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট দেন। তার ওই পোস্টের নিচে আসিফ আকবর নিজের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে অশালীন মন্তব্য করেন ও হুমকি দেন। পরদিন রাত ৯টা ৫৯ মিনিটে আসিফ আকবর তার প্রায় ৩২ লাখ লাইকারসমৃদ্ধ ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লাইভে আসেন। ৫৪ মিনিট ৩৪ সেকেন্ড লাইভ ভিডিওর ২২ মিনিট থেকে তুহিনের বিরুদ্ধে অবমাননাকর, অশালীন ও মিথ্যা-বানোয়াট বক্তব্য দেন।
ভিডিওতে আসিফ আকবর ‘তাকে (শফিক তুহিন) শায়েস্তা করবেন’ বলার পাশাপাশি ভক্তদের উদ্দেশে বলেন, ‘তাকে যেখানেই পাবেন, সেখানেই প্রতিহত করবেন।’ এ নির্দেশনা পেয়ে আসিফ আকবরের ভক্তরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শফিক তুহিনকে হত্যার হুমকি দেন। আসিফ আকবরের এ বক্তব্য লাখ লাখ মানুষ দেখেছেন। তিনি উসকানি দিয়েছেন। এতে তার (শফিক তুহিন) মানহানি হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
বিষয়টি সংগীতাঙ্গনের সুপরিচিত শিল্পী, সুরকার ও গীতিকার প্রীতম আহমেদসহ অনেকেই জানেন বলে এজাহারে উল্লেখ করেন শফিক তুহিন।
২০১৯ সালের ২০ নভেম্বর আসিফের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি ও দণ্ডবিধি আইনে পৃথক দুটি অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।
জেএ/কেএসআর/জিকেএস