সাহায্য চাইতে এসে গান শুনিয়ে শিল্পীদের মুগ্ধ করলেন মুক্তিযোদ্ধা
চলছে শীত। এ মৌসুমে স্টেজ শোয়ের হিড়িক পড়ে। মঞ্চ মাতানো শিল্পীদের চাহিদা থাকে তুঙ্গে। তারা দলবেঁধে গানের পাখি হয়ে ঘুরে বেড়ান শহর থেকে শহরে, গ্রাম-গঞ্জে। তেমনি করে নাটোরে গান করতে যাচ্ছেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী সোহেল মেহেদি।
তার সঙ্গে আরও আছেন রাত্রি চৌধুরী, ঝিলিক বাবু ও তাদের দল। সবাই মিলে আজ ২৭ নভেম্বর নাটোরের বড়াইগ্রাম সরকারি কলেজে গাইবেন।
যাত্রাপথে তারা মুখোমুখি হলেন দারুণ এক অভিজ্ঞতার, যা শিল্পী সোহেল মেহেদিকে যেমন আনন্দে ভরিয়েছে তেমনি বেদনাও জাগিয়েছে মনে। এক বীর মুক্তিযোদ্ধার দেখা পেলেন তিনি। যিনি এসেছিলেন কিছু অর্থ সাহায্যের আশায়। সোহেল মেহেদিদের পরিচয় পেয়ে তিনি নিজেই হয়ে উঠলেন গায়ক। গেয়ে শোনালেন পুরোনো ভারতীয় বাংলা গান ‘আষাঢ় শ্রাবণ মানে না তো মন’।
সোহেল মেহেদি ওই বীর মুক্তিযোদ্ধার গান গাওয়ার একটি ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করে লিখেছেন, ‘আমরা নাটোর শো'তে যাওয়ার পথে এলেঙ্গা সিএনজি স্টেশনে গাড়ির গ্যাস নিতে দাঁড়িয়েছি। এ সময় মুরুব্বি সাহায্য চাইতে এলেন এবং তারপর দেখি উনি গুণগুণ করে গান গাইছেন। আমার কি যে ভালো লাগলো উনার দরদভরা কণ্ঠ শুনে।
কথা বলে জানলাম উনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। উনার নাম দীলিপ। সাথে সাথে ভিডিও করলাম। স্যালুট চাচা।’
সোহেল মেহেদি জাগো নিউজকে এই বীর মুক্তিযোদ্ধার গান সম্পর্কে বলতে গিয়ে বেদনার কথাও জানালেন। তিনি বলেন, ‘মনটা খুবই খারাপ হয়েছে, দেশের স্বাধীনতা আনতে যে মানুষটা জীবন বাজি রেখে অস্ত্র ধরে শত্রুর সঙ্গে যুদ্ধ করেছেন সেই মানুষ আজ দারিদ্যের কষাঘাতে জর্জরিত। ৭০ পার হয়েছে বয়স। এ বয়সে এসে জীবনের তাগিদে তাকে পথে পথে ভিক্ষে করতে হচ্ছে।
জানিনা উনি সরকারি সুযোগ সুবিধা পান কি না। বিস্তারিত কথা বলার সুযোগ হয়নি। কিন্তু তার সঙ্গে সাক্ষাৎটি খুব কষ্ট দিচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা মানুষের কাছে হাত পাতছেন বেঁচে থাকার জন্য।’
‘একজীবনে অনেকের সঙ্গেই দেখা হয় আমাদের। অনেককে ভুলেও যাই। কিন্তু এ মুক্তিযোদ্ধা চাচার কথা ভুলবো না। কী চমৎকার গান করেন তিনি। এ বয়সেও দরদ নিয়ে গান করে নিজের মনকে ভালো রাখার চেষ্টা করেন। মানুষকে বিনোদন দেন’- যোগ করেন সোহেল মেহেদি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা দিলীপের গাওয়া গানের ভিডিও: www.facebook.com/sohel.mehedi.3/videos
এলএ/এমএস