শিল্পাচার্যের ১০১তম জন্মদিনে বর্ণাঢ্য আয়োজন


প্রকাশিত: ০৭:১৮ এএম, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৫

বাংলাদেশ চিত্রকলার পথিকৃৎ বিখ্যাত চিত্রশিল্পী জয়নুল আবেদিন। তিনি আমাদের শিল্পের আচার্য। আজ মহান এই শিল্পীর ১০১তম জন্মবার্ষিকী। তার কর্ম ও স্মৃতির উদ্দেশ্যে রইল গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।

দিনটিকে ঘিরে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি নিজের হাতে গড়ে যাওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগও বর্ণিল আয়োজনে স্মরণ করবে আজ শিল্পাচার্যকে।

আজ চারুকলা ইনস্টিটিউটে পালিত হচ্ছে ‘জয়নুল উৎসব-২০১৫’। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ও জয়নুল আবেদীনের স্ত্রী জাহানারা আবেদিন এটি যৌথভাবে উদ্বোধন করেন। এরপর সকাল ৯টায় শিল্পাচার্যের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে উৎসব শুরু করেন। আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচি চলবে সন্ধ্যে পর্যন্ত।

পাশাপাশি শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে একাডেমির চারুকলা বিভাগের ব্যবস্থাপনায় জয়নুল আবেদিনের ১০১তম জন্মবার্ষিকী পালিত হচ্ছে। জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

শিল্পাচার্যের জন্মবর্ষ উদযাপনের অংশ হিসেবে ২০১৪ ও ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত বছরব্যাপী শিশু চিত্রাংকন কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী শিশু শিল্পীদের সনদপত্র বিতরণ এবং শিশুদের অঙ্কিত চিত্রকর্মের দশ দিনব্যাপী চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।

এছাড়াও শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সকাল ৯টায় শিল্পাচার্যের সমাধীতে একাডেমির পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে।

এরপর বিকাল ৪টায় একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে জয়নুল স্মরণে মনোজ্ঞ এক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব আক্তারী মমতাজ। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক জনাব লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন শিল্পাচার্যের সহধর্মিনী মিসেস জাহানারা আবেদিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডীন অধ্যাপক নিসার হোসেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ আজিজুল হক।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করবেন একাডেমির চারুকলা বিভাগের পরিচালক জনাব উৎপল কুমার দাস।

এছাড়াও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন ও টিভি-রেডিওতে জয়নুল আবেদিনের জন্মদিন উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে।

প্রসঙ্গত, ১৯১৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জের কেন্দুয়ায় জন্মগ্রহণ করেন এই শিল্পী। বাবা তমিজউদ্দিন আহমেদ ছিলেন পুলিশের দারোগা। মা জয়নাবুন্নেছা গৃহিণী। নয় ভাই-বোনের মধ্যে জয়নুল ছিলেন সবার বড়।

শিল্পীর শৈশব এবং তারুণ্যের প্রধানতম অর্জন ছিল বলতে গেলে এই প্রাকৃতিক ঐশ্বর্যের অভিজ্ঞতা। তার শৈল্পিক মানসিকতা নির্মাণে প্রকৃতির প্রভাব ছিল অসামান্য ও সুদূরপ্রসারী। তিনি বলতে ভালোবাসতেন, ‘নদীই আমার শ্রেষ্ঠতম শিক্ষক’। তিনি শুধুমাত্র এদেশের একজন স্বনামধন্য শিল্পীই ছিলেন না, তিনি ছিলেন এদেশের আধুনিক শিল্পকলা আন্দোলনের পথিকৃৎ।

শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের বিখ্যাত শিল্পকর্মের মধ্যে রয়েছে ১৯৫৭-এ নৌকা, ১৯৫৯-এ সংগ্রাম, ১৯৬৯-এ নবান্ন, ১৯৭০-এ মনপুরা-৭০, ১৯৭১-এ বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রভৃতি। ১৯৪৩ সালে দুর্ভিক্ষ চিত্রমালার জন্য সারা বিশ্বে খ্যাতিমান হয়ে ওঠেন জয়নুল।

নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে জয়নুল আবেদিনই চিত্রকলার উপর বর্তমানে দেশের সবচেয়ে বড় শিক্ষালয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট গড়ে তুলেছিলেন। ১৯৭৬ সালের ২৮ মে ৬২ বছর বয়সে জীবনাবসান ঘটে এই শিল্পীর।

এলএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।