৫ দিনেও শনাক্ত হয়নি সাংবাদিক উৎসের খুনিরা
রংপুর থেকে প্রকাশিত দৈনিক যুগের অলো পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার ও সিটি প্রেসক্লাবের সদস্য উৎস রহমানের হত্যাকারীরা পাঁচ দিনেও শনাক্ত হয়নি। পুলিশ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে এ পর্যন্ত এক নারীসহ ৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করলেও তাদের হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়নি। তবে মামলার তদন্তে অগ্রগতি হয়েছে বলে দাবি করছে পুলিশ।
এদিকে প্রকৃত হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সোমবার দুপুরে মৌন মিছিল ও জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপার কার্যালয় ঘেরাও করে স্বারকলিপি দিয়েছে রংপুরের সম্মিলিত সাংবাদিক সমাজ।
স্বারকলিপি পেশকালে রংপুর পুলিশ সুপার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সাংবাদিক উৎস রহমান হত্যাকাণ্ডে রোকসানা বেগম নামে এক নারীসহ ৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
তদন্তে অগ্রগতি হয়েছে দাবি করে পুলিশ সুপার বলেন, আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং প্রকৃত খুনিকে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এর আগে রংপুর প্রেসক্লাব চত্বর থেকে একটি মৌন মিছিল বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার কার্যালয় ঘেরাও করে স্বারকলিপি পেশ করা হয়।
এ সময় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সম্মিলিত সাংবাদিক সমাজের আহ্বায়ক আলী আশরাফ, সদস্য সচিব শরিফুজ্জামান বুলু, টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত আলী বাদল, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম রংপুর জেলার আহ্বায়ক জিতু কবীর।
কর্মসূচিতে সাংবাদিক সমাজের ব্যানারে রংপুর প্রেসক্লাব, সিটি প্রেসক্লাব, রিপোর্টার্স ক্লাব, রংপুর টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরাম, টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, জেলা মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম, ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিশেন, টেলিভিশন ভিডিও জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনসহ সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন অংশ নেয়।
অন্যদিকে উৎস রহমান হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সংহতি জানিয়ে রংপুর প্রেসক্লাব চত্বরে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে রংপুর জেলা অটোরিকশা মালিক-শ্রমিক সমবায় সমিতি। এতে বক্তব্য রাখেন-সমিতির সভাপতি মহিউল আহম্মেদ মহি, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল কবীর সুমন প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে যুগের আলো পত্রিকা অফিস থেকে তার খালার বাসায় যাওয়ার কথা বলে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হন উৎস। এরপর বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর দমদমা এলাকার ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এর কাছে শেখপাড়া গ্রামে একটি ক্ষেতের ওপর গাছের সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয় এলাকাবাসী। খবর পেয়ে পুলিশ ও তার সহকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উৎসের মরদেহ সনাক্ত করে। দুর্বৃত্তরা উৎসের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, ক্যামেরা ও মোবাইল ফোনও নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে নিহত উৎসের মা নুরজাহান বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত কয়েকজনের নামে কোতয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
নিহত উৎস নগরীর স্টেশন রোড এলাকার পীরপুরে পরিবারসহ বসবাস করতেন। তার মা-বাবা ও স্ত্রী ছাড়াও মালিহা মুমতাজ উর্বি নামে দেড় বছর বয়সের এক কন্যা সন্তান রয়েছে।
জিতু কবীর/এসএস/এমএস