জন্মদিনের স্মৃতিচারণে ফিরে আসেন এন্ড্রু কিশোর
এদেশের সংগীতের উজ্জ্বল নক্ষত্র এন্ড্রু কিশোর। তাকে বলা হয় প্লেব্যাক সম্রাট। সিনেমার গানে তার কণ্ঠ কিংবদন্তি হয়ে থাকবে চিরদিন। বহু কালজয়ী গান তিনি রেখে গেছেন শ্রোতা-ভক্তদের জন্য।
গেল বছরের ৬ জুলাই না ফেরার দেশে চলে গেছেন এই নন্দিত গায়ক। তবে তিনি রয়ে গেছেন অমলিন, তার গানে গানে।
আজ ৪ নভেম্বর এন্ড্রু কিশোরের জন্মদিন। এদিনে তিনি পরিবার, ভক্ত-অনুরাগীদের কাছে ফিরে এলেন বিষাদমাখা স্মৃতিচারণে।
প্রয়াত এই সংগীতশিল্পীর জন্মদিন উপলক্ষে পরিবারের পক্ষা থেকে কোনো আয়োজনের খবর পাওয়া যায়নি। জীবদ্দশায় জন্মদিন নিয়ে তেমন কোনো আগ্রহ ছিল না শিল্পীর নিজেরও। পরিবারের সদস্যদের নিয়েই ঘরোয়াভাবে দিনটি উদযাপন করতেন।
স্ত্রী লিপিকা এন্ড্রু জানান, পরিবারের সদস্যরা মিলে রাজশাহীর সমাধিস্থলে গিয়ে প্রার্থনা করবেন।
এন্ড্রু কিশোরের চলে যাওয়ার পর এটি দ্বিতীয় জন্মদিন। প্রিয় শিল্পীকে স্মরণ করে অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা স্মৃতিকথা লিখছেন। কেউ এন্ড্রু কিশোরের গাওয়া নানা গানের লাইন লিখে স্মরণ করছেন।
১৯৫৫ সালের ৪ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন এন্ড্রু কিশোর। বাবা ক্ষীতিশ চন্দ্র বাড়ৈ এবং মাতা মিনু বাড়ৈ রাজশাহীর বুলনপুর মিশন গার্লস হাইস্কুলের শিক্ষক ছিলেন। তার মা ছিলেন সংগীত অনুরাগী, তার প্রিয় শিল্পী ছিলেন কিশোর কুমার। প্রিয় শিল্পীর নামানুসারেই সন্তানের নাম রাখেন কিশোর। মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতেই সংগীতাঙ্গনে পা রাখেন এন্ড্রু কিশোর।
আব্দুল আজিজ বাচ্চুর অধীনে প্রাথমিকভাবে সংগীতে পাঠ গ্রহণ শুরু করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর নজরুল সংগীত, রবীন্দ্র সংগীত, আধুনিক, লোকসংগীত ও দেশাত্মবোধক গানের শিল্পী হিসেবে রাজশাহী বেতারে তালিকাভুক্ত হন।
এন্ড্রু কিশোর সিনেমার প্লেব্যাক শুরু করেন ১৯৭৭ সালে আলম খানের সুরে 'মেইল ট্রেন' ছবিতে ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই যে তার কেউ’ নামের গান দিয়ে। প্রায় চার দশক সিনেমার গান গেয়েছেন তিনি। স্বীকৃতিস্বরুপ পেয়েছেন আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
এ শিল্পী উপহার দিয়েছেন অসংখ্য কালজয়ী গান। তারমধ্যে উল্লেখ্য, আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি, ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে, কারে দেখাব মনের দুঃখ গো, হায়রে মানুষ রঙিন ফানুষ, জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প, তুমি আমার জীবন/আমি তোমার জীবন, আমার বুকের মধ্যিখানে, পৃথিবীর যত সুখ, সবাইতো ভালোবাসা চায় ইত্যাদি।
দীর্ঘ ১০ মাস মরণব্যাধি ক্যানসারের সঙ্গে যুদ্ধ করে ২০২০ সালের ৬ জুলাই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এন্ড্রু কিশোর।
এলএ/জেআইএম