নায়করাজ রাজ্জাককে হারানোর চার বছর আজ
বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাকের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন, প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি পালনের মধ্যদিয়ে এই কীর্তিমান অভিনেতাকে স্মরণ করা হবে।
২০১৭ সালের ২১ আগস্ট সন্ধ্যা ৬টা ১৩ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন নায়করাজ। ফুসফুসের অসুখসহ বার্ধক্যজনিত রোগে অনেকদিন ধরেই ভুগছিলেন তিনি। তার মৃত্যুতে চলচ্চিত্র অঙ্গন তথা সারাদেশে চলচ্চিত্রপ্রেমীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছিল। সেই শোকের দাগ এখনো রয়ে গেছে অন্তরে অন্তরে।
নায়করাজ একাধারে ছিলেন অভিনেতা, পরিচালক ও প্রযোজক। দুই বাংলাতেই তিনি পেয়েছিলেন জনপ্রিয়তা৷ বাংলা চলচ্চিত্র জগতে দীর্ঘ সাড়ে ছয় দশক এই জনপ্রিয় অভিনেতা দাপটের সাথে কাজ করেছেন।
প্রখ্যাত সাংবাদিক আহমদ জামান চৌধুরী তার কাজের প্রতি সম্মান জানিয়ে তাকে নায়করাজ উপাধি দেন। এরপর এই উপাধির স্বীকৃতি মিলে যায় সবখানে। দল মত নির্বিশেষে তিনি ছিলেন সবার প্রিয় নায়করাজ।
১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার টালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। কলকাতার খানপুর হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে সরস্বতী পূজা চলাকালীন মঞ্চ নাটকে অভিনয়ের জন্য তার শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তাকে বেছে নেন । এতে তিনি নায়ক অর্থাৎ নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন।
শিশু-কিশোরদের নিয়ে লেখা এ নাটকের শিরোনাম ছিল ‘বিদ্রোহী’। এতে অভিনয়ের মধ্য দিয়েই নায়করাজের অভিনয় জীবন শুরু।
১৯৬৪ সালে রাজ্জাক তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসেন। চলচ্চিত্রকার আবদুল জব্বার খানের সাথে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন। পরে ‘তের নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’ ছবিতে ছোট একটি চরিত্রে প্রথম অভিনয় করেন। এরপর ‘কার বউ’ ও ‘ডাক বাবু’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। নায়ক হিসেব তার প্রথম চলচ্চিত্র হচ্ছে জহির রায়হান পরিচালিত ‘বেহুলা ’। সেই থেকে তিনি ৩ শতাধিক চলচ্চিত্রে নায়ক হিসেবে অভিনয় করেন।
এর বাইরে প্রযোজনা ও পরিচালনা করেছেন ১৬টি চলচ্চিত্র। তিনি সাতবার চলচ্চিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে জাতীয় পুরস্কার, চলচ্চিত্রের জন্য আজীবন সম্মাননাসহ অসংখ্য পুরস্কার লাভ করেন।
চোখের দেখায় নায়করাজ নেই। তিনি আছেন বাংলাদেশি সিনেমার সাফল্য, ইতিহাস আর কোটি কোটি দর্শকের ভালোবাসার গল্পের নায়ক হয়ে।
এলএ/এমআরআর