তামাশা করতেই বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে খালেদা


প্রকাশিত: ১১:০০ এএম, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৫
ফাইল ছবি

‘যারা পরিকল্পিতভাবে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল, তাদের হাতেই তিনি (খালেদা জিয়া) দেশের পতাকা তুলে দিয়েছিলেন, মন্ত্রী বানিয়েছিলেন। সেই তিনিই আজ শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুল দিতে গেলেন। তিনি (খালেদা) তামাশা করতেই বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে গিয়েছিলেন। দেখা যাক, তিনি এবার কোন নাটক করতে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন? কারণ তিনি তো নাটক ভালো জানেন।’

সোমবার শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এমন মন্তব্য করেন।

বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের মিলনায়তনে ওই আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পরাজয় জেনেই স্বাধীনতার আগ মুহূর্তে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যার পরিকল্পনা করে। আর তাতে সহযোগিতা করে এ দেশেরই বিশ্বাস ঘাতকেরা। ঘাতকেরা মনে করেছিল, বুদ্ধিজীবীদের হত্যার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতিকে পঙ্গু করে দেয়া যাবে। তারা সর্বোচ্চ ক্ষতি করেছিল বটে, কিন্তু সেই বুদ্ধিজীবীদের প্রতিটি রক্তকণা থেকে আজ লাখো বুদ্ধিজীবী তৈরি হয়েছে।

খন্দকার মোশতাককে ইতিহাসের মীরজাফর আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে সেও ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি। আরেক ঘাতক জিয়াউর রহমান তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতার কেন্দ্রে চলে আসেন। বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর জিয়াউর রহমানই সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছিল।

জিয়াউর রহমান সত্যিকার মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, জিয়াউর রহমানই যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসন করেছিলেন। রাজাকারকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছিলেন। তিনি শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করেছেন।

বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে যুদ্ধাপরাধীদের দোসর দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, জিয়াউর রহমানের দেখানো পথেই যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে তিনি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন। সম্প্রতি দুই যুদ্ধাপরাধীকে বাঁচাতে তিনি তড়িঘরি করে লন্ডন থেকে দেশে আসেন। কোনো লাভ হয়নি। অপরাধীদের ফাঁসির আগে অনেক বিশ্বনেতার ফোন পেয়েছি। আমলে নেইনি। কারণ আমরা আমাদের নিজস্ব আদর্শ বাস্তবায়ন করতে চলেছি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করতে হলে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করতেই হবে।

খালেদা জিয়ার সঙ্গে রাজনীতি করা মুক্তিযোদ্ধাদের লজ্জা নেই উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, তারা মনে করিছিল মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি আর ক্ষমতায় আসবে না। এই কারণেই তারা তার (খালেদার) কাছে গিয়ে ধর্না দিয়েছিলেন।

মিডিয়া ব্যক্তিদের সমালোচনা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বেসরকারি টেলিভিশনের অনুমোদন দিয়েছি আমরাই। আর সেই টেলিভিশনে গিয়ে যুদ্ধাপরাধীর বিচার, রাজনীতি নিয়ে সমালোচনার ঝড় তোলা হচ্ছে। বাঙালি বেশি কথা বলার জাতি। সুযোগ পেলেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা সমালোচনা করতে থাকেন কোনো কারণ ছাড়াই। বিশ্বের যে কোনো দেশের মানুষের চেয়ে বাঙালিরা মোবাইল ফোনে বেশি কথা বলেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

তার সরকারের নানা উন্নয়নের প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো শক্তিই পথ রুদ্ধ করতে পারবে না। দেশে ফেরার পর থেকে বহুবার হামলা করা হয়েছে। গুলি, গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়েছে। বেঁচে আছি। মৃত্যুকে আর ভয় করি না। হারাবার আর কিছু নেই। বাংলার মানুষের ভালোবাসা নিয়েই মরতে চাই। আত্মসমর্পন নয়, আত্মত্যাগের মধ্য দিয়েই এগিয়ে যেতে চাই।

অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, সাবেক মন্ত্রী শেখ সেলিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফসহ কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।

এএসএস/একে/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।