নওগাঁয় বিপাকে শিম চাষিরা
এবার নওগাঁয় শিমের বাম্পার ফলন হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়ায় এলাকার চাহিদা পূরণ করে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হচ্ছে শিম। কিন্তু পাতা পঁচা রোগ ও পোকার আক্রমণে বিপাকে পড়েছেন শিম চাষিরা। ফলে লাভের চেয়ে লোকসান বেশি হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
সদর উপজেলা বিশেষ করে বর্ষাইল, মারমা, মল্লিকপুর, ঝাড়গ্রাম, অনন্তপুর, কুয়ানগর, কৃর্ত্তীপুরসহ কয়েকটি গ্রামে প্রচুর সবজি চাষ হয়ে থাকে। অন্যান্য ফসলের তুলনায় সবজি আবাদ লাভজনক ফসল। প্রতি বিঘা জমিতে শিম চাষ করতে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়। ভালো ফলন হলে সেখান থেকে ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকার মতো শিম বিক্রি হয়। সাধারণত সাদা শিম ও লাল শিমের আবাদ করা হয়ে থাকে। লাল শিমের দাম একটু বেশি ও ফলন ভাল বলে কৃষকের আগ্রহটা বেশি।
বর্ষাইল গ্রামের কৃষক জব্বার বলেন, আড়াই বিঘা জমিতে শিমের আবাদ করেছেন। পাইকারি বিক্রির জন্য প্রতি সপ্তাহে ৭-৮ মণ শিম উঠান। প্রথম দিকে দাম হাজার টাকা মণ হলেও এখন বাজারে ৮’শ থেকে ৯’শ টাকা মণ। শিমে পচন রোগ দেখা দেয়ায় খুব সমস্যায় পড়েছেন। কীটনাশক দিয়েও কাজ হচ্ছে। শিমের পচন রোধ করা সম্ভব না হলে লোকসান গুণতে হবে বলে জানান তিনি।
কৃষক আসাদুল ইসলাম বলেন, অন্যান্য ফসলের তুলনায় শিম লাভজনক ফসল। করলা আবাদের পর দশ কাঠা জমিতে লাল জাতের শিম লাগিয়েছেন তিনি। কিন্তু পাতা পঁচা রোগ দেখা দিয়েছে। ৪-৫ দিন পর পর কীটনাশক প্রয়োগ করেন। প্রতিবার কীটনাশক প্রয়োগে প্রায় ১’শ টাকা করে লাগে।
সাইদুল ইসলাম বলেন, ১৫ কাঠা জমি থেকে প্রায় ৩০ হাজার টাকার শিম বিক্রি করেছেন। শিমের ফলন ভাল হলেও রোগ দেখা দিয়েছে। কৃষি পরামর্শেও শিমের পোকা দমন ও পচন রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।
এছাড়া কৃষক মাসুদ, শিমুল, ইউনুছ ও জরিনা বেগমের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আবহাওয়াজনিত কারণে শিমে পোকা ও পচন রোগ দেখা দিয়েছে। পরিবারের সবাই সকাল থেকে প্রায় সারা দিন শিমের পচন ধরা ফুল ও জালা (কুড়ি) ফেলে দিতে হচ্ছে। এতে শিম চাষে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সত্যব্রত সাহা বলেন, চলতি মৌসুমে প্রায় ৮’শ হেক্টর জমিতে শিমের আবাদ করা হয়েছে। আবাদ ভাল হওয়ায় এলাকার চাহিদা পূরণ করে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হচ্ছে। পচন রোগে শিমের কিছুটা সমস্যা দেখা দিয়েছে। কৃষি বিভাগ থেকে সার্বক্ষণিক শিম চাষিদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। রোগ বালাই দমনের জন্য সরকার অনুমোদিত কীটনাশক ব্যবহার করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
আব্বাস আলী/এসএস/পিআর