৭ খুন মামলার চার্জ গঠন ১১ জানুয়ারি
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত ৭ খুন মামলার চার্জ গঠন আগামী ১১ জানুয়ারি ধার্য করেছেন আদালত। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেন এ তারিখ ধার্য করেন।
এর আগে সাত খুনের ঘটনায় নিহত অ্যাডভোকেট চন্দন সরকার ও তার গাড়ি চালক ইব্রাহিম হত্যা মামলায় চাকরিচ্যুত র্যাব কর্মকর্তা তারেক সাঈদসহ ১৩ জন জামিন আবেদন করলে আদালত তা নামঞ্জুর করেন।
সকালে ৭ খুনের প্রধান আসামি নূর হোসেনসহ র্যাবের চাকরিচ্যুত তিন কর্মকর্তা তারেক সাঈদ, এমএম রানা, আরিফ হোসেনসহ ২৩ আসামিকে কঠোর নিরাপত্তায় নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয়।
এদিকে, নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটির মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয় অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অশোক কুমার দত্ত এর আদালতে। ওই আদালতে শুনানি শেষে মামলাটি বিচার কার্যক্রমের জন্য জেলা জজ কোর্টে পাঠানো হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালতের এপিপি ফজলুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, জজ কোর্টে মামলা পাঠানোর পর আগামী ১১ জানুয়ারি শুনানির দিন ধার্য করেছে আদালত। এর আগে চন্দন সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহিম হত্যা মামলাটি গত ৯ নভেম্বর ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট হতে জজ কোর্টে পাঠানো হয়। আগামী ১১ জানুয়ারি চার্জ গঠন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, চন্দন সরকারের মামলায় তারেক সাঈদসহ ১৩ জনের জামিন আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু আমাদের কঠোর আপত্তির কারণে আদালত জামিন নামঞ্জুর করেছে।
এদিন ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ছরোয়ার মিয়ার নেতৃত্বে ৫ জনের একটি আইনজীবী দল তারেক সাঈদের পক্ষে ওই জামিন আবেদন করেন। ছরোয়ার মিয়া বলেন, খুন, গুম ও অপহরণের সঙ্গে তারেক সাঈদ জড়িত না। তিনি ওই সময়ে র্যাবের ক্যাম্প কমান্ডার থাকায় তাকে দোষারোপ করা হয়েছে।
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান অভিযোগ করেন, নূর হোসেনের পক্ষে সরকার দলীয় আইনজীবীরা কাজ করছে। কোর্টে পিপিকে যেভাবে পরিচালনা করতে দেখা গেছে তাতে মনে হয়েছে তিনি ‘বায়াস্ট’ হয়ে গেছেন।
তিনি বলেন, কাউন্সিলর নজরুলসহ ৫জনকে অপহরণের পর হত্যা মামলায় ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট থেকে বিচারের জন্য জেলা দায়রা জজে মামলাটি পাঠানো হয়। আগামী ১১ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
এদিকে সকাল পৌনে ১০টায় নূর হোসেনকে কঠোর নিরাপত্তায় আদালতে আনা হয়। তবে এর আগে থেকেই নূর হোসেনের পক্ষে তার লোকজন আদালতে উপস্থিত হয়ে স্লোগান দেয়। পরে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে অবস্থান করে নূর হোসেনকে স্বাগত জানান।
নূর হোসেনকে আদালতে আনার পর ও নেওয়ার সময়ে তাকে বেশ হাস্যোজ্জ্বল দেখা গেছে।
গত বছর ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকরোডের ফতুল্লার লামাপাড়া থেকে কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ ৭ জনকে অপহরণ করা হয়। তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে তাদের লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নিহত নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ও চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল মামলা দুটি করেন।
হত্যাকাণ্ডের প্রায় এক বছর পর গত ৮ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মামনুর রশিদ মন্ডল। এজাহারভুক্ত পাঁচ আসামিকে অব্যাহতির সুপারিশ করায় নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি গত ১১ মে নারাজি আবেদন করেন। গত ৯ নভেম্বর নারাজি আবেদন খারিজ হয়। পরে তিনি হাইকোর্টে অধিকতর তদন্তের জন্য আবেদন করেছেন।
শাহাদাত হোসেন/এসএস/পিআর