একাত্তরের চেয়েও বর্তমানে বেশি ষড়যন্ত্র হচ্ছে : শামীম ওসমান


প্রকাশিত: ০৪:৪৩ পিএম, ২৯ নভেম্বর ২০১৫

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেছেন, বাংলাদেশকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। দেশে আইএসের আবির্ভাব ঘটছে। ১৯৭১ সালে যেভাবে ষড়যন্ত্র হয়েছিল বর্তমানে তার চেয়ে বেশি ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে। বিশ্বের মুসলমানদের উপর যেভাবে ছোবল দেয়া হচ্ছে ঠিক তেমনি আমাদের দেশেও ছোবল দেয়া হতে পারে। সামনে আমাদের দেশে আইএস আঘাত হানতে পারে। তার জন্য আমাদের কঠোরভাবে সতর্ক থাকতে হবে।

১৯৭১ সালের ২৯ নভেম্বর পাকহানাদার বাহিনী ও রাজাকারদের নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার ফতুল্লার বক্তাবলী পরগণার ১৩৯ জন শহীদদের স্মরণে রোববার বিকেলে স্থানীয় লক্ষ্মীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত শোকসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শামীম ওসমান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের মা-বোনদের বাড়ি থেকে তুলে এনে ইজ্জত লুটে নিয়েছে পাকহানাদার বাহিনীরা। স্বামীকে কাছে বেঁধে তার স্ত্রীকে, ভাইকে বেঁধে তার বোনের ইজ্জত লুটে নিয়ে উল্লাস করেছিল। পাকহানাদার বাহিনী তো জানতো না কোন বাড়িতে যুবতী সুন্দরী নারী রয়েছে। কিন্তু হানাদারদের দোসর জামায়াতের লোকজন পাক হানাদার বাহিনীদের নিয়ে এসব কর্মকাণ্ড করে ছিল। জামাতের লোকজন আগে যেসব কর্মকাণ্ড করেছিল তারা এখনো সেই কর্মকাণ্ড করার চেষ্টা করছে।

তিনি আরও বলেন, এই দেশ আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পাটির নয়। এই দেশ ১৬ কোটি মানুষের। দেশটি কারো পৈত্রিক সম্পত্তি নয়। এই দেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। সকল ষড়যন্ত্রের মোকাবেলা করে শেখ হাসিনা সরকার এই দেশকে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে এগিয়ে নেয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে কিন্তু অনেকে তা সহ্য করতে পারছে না। বিগত আমলে অনেক দল ক্ষমতায় এসেছে কিন্তু কেউ দেশের জন্য কোনো কাজ করেনি। আর শেখ হাসিনার দল ক্ষমতায় আসার পর আমরা স্বপ্ন দেখতে শুরু করছি।

শামীম ওসমান মাদক ব্যবসায়ীদের নিয়ে পুলিশের উদ্দেশে করে বলেন, যারা মাদক বিক্রি করে এলাকার যুব সমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে তাদেরকে আপনারা ধরেন। আর ধরতে গিয়ে যদি মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে তাদের গুলি করে দেবেন। আপনাদের গুলিতে যদি মাদক ব্যবসায়ী মারা যায় তাতে কোনো সমস্যা নাই তা বুজবো।

শোকসভায় প্রধান বক্তা নারায়ণগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী বলেছেন, বক্তাবলীতে যেসকল মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছেন জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য তাদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। খুব শিগগিরই তা বাস্তবায়ন হবে। মুক্তিযোদ্ধারা সরকারিভাবে ভাতার ব্যবস্থা করা হবে।

সভায় বক্তাবলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আফাজ উদ্দিন ভুইয়ার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফউল্লাহ বাদল, সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মিয়া, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ মো. বাদল প্রমুখ।

এদিকে সকালে বক্তাবলী দিবস পালন উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গণকবরে শহীদদের প্রতি পুষ্পস্তবক অর্পণসহ কবর জিয়ারত করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক আনিছুর রহমান মিঞা, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফরোজা আকতার চৌধুরী, বক্তাবলী ইউপি চেয়ারম্যান শওকত আলী প্রমুখ।

মো. শাহাদাত হোসেন/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।