টানা দ্বিতীয়বার ১ রানে হারলো সিলেট
আল-আমিনের বোলিং তোপে রোমাঞ্চকর জয় তুলে নিয়েছে বরিশাল বুলস। সিলেট সুপারস্টার্সের বিপক্ষে মাত্র ১০৯ রানের সংগ্রহ নিয়ে দারুণ লড়াই করে মাত্র ১ রানের জয় তুলে নেয় দলটি। এবারের আসরে এটি নিয়ে দ্বিতীয়বার ১ রানের জয় দেখলো বিপিএল। আগের ম্যাচেও চিটাগাং ভাইকিংসের কাছে ১ রানে হেরেছিল সিলেট সুপারস্টার্স।
বরিশাল বুলসের দেয়া ১০৯ লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতেই চাপে পড়ে সিলেট সুপারস্টার্স। দলীয় ৯ রানে উইকেটরক্ষক টেইলরের হাতে ক্যাচ দিয়ে আল-আমিনের প্রথম শিকার হন মুমিনুল। তবে সিলেটের বিপর্যয় বাড়ে ইনিংসের চতুর্থ ওভারে। ওভারের দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ বলে বোপারা, সোহান এবং মুশফিককে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিক করার গৌরব অর্জন করেন আল-আমিন।
১৮ রানে চার উইকেট পড়ার পর ওয়াইজ শাহকে নিয়ে দলের হাল ধরেন দিলশান মুনাবিরা। পঞ্চম উইকেট জুটিতে ৪৩ রানের জুটি গড়ে প্রাথমিক চাপ সামাল দেন তারা।
১২তম ওভারে দুই সেট ব্যাটসম্যান দিলশান মুনবিরা এবং ওয়াইজ শাহকে ফিরিয়ে আবার বরিশালকে খেলায় ফিরিয়ে আনেন তাইজুল। ওয়াইজ শাহকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলার পর সাবলীল ব্যাটিং করতে থাকা মুনিবিরাকে প্রসন্নর তালুবন্দি করে সাজঘরে ফেরান এই স্পিনার।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেন মুনাবিরা। ৩১ বলে ৬টি চারের সাহায্যে এ রান করেন এই লঙ্কান। ওয়াইজ শাহ ২৯ বলে ১১ রান করেন।
মুনাবিরার বিদায়ের পর নাজমুল ইসলাম অপুকে সঙ্গে নিয়ে ২৪ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের স্বপ্ন দেখান নাজমুল হোসেন মিলন। দলীয় ৯০ রানে সামির বলে বোল্ড হয়ে অপু ফিরে আসলে আবার চাপে পড়ে সিলেট। এরপর ৫ রান যোগ করে ফিরে আল-আমিনের পঞ্চম শিকারে পরিণত হন মিলন।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৮ রান। তাইজুলের প্রথম বলেই নাদিফের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে আসেন শাহিদ। এরপরের পাঁচ বলে ৬ রান সংগ্রহ করলে লক্ষ্যের ১ রান দূরেই থামে সিলেটের ইনিংস।
সিলেটের পক্ষে ৩৬ রানে ৫ উইকেট নিয়ে সেরা বোলার আল-আমিন হোসেন। তাইজুল ইসলাম ৩টি উইকেট তুলে নেন ২০ রানে। এছাড়া চার ওভার বল করে মাত্র ৯ রান দিয়ে ১টি উইকেট নিয়ে সিলেটের ব্যাটসম্যানদের দারুণ চাপে রাখেন মোহাম্মদ সামি।
এর আগে নাজমুল ইসলাম অপুর বোলিং তোপে বড় সংগ্রহ করতে পারেনি বরিশাল বুলস। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে সিলেট সুপারস্টারসের বিপক্ষে ব্যাটিং করতে নেমে শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় বরিশাল বুলস। ফলে সিলেট সুপারস্টার্সকে ১০৯ রানের টার্গেট লক্ষ্য দেয় বরিশালের দলটি।
মঙ্গলবার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করতে নামে বরিশাল। শুরুটা ভালোই করে বরিশালের দলটি। ওপেনিং জুটিতে ৩৪ রান করার পর প্রথম সাজঘরমুখী হন রনি তালুকদার। বরিশাল শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন শুভাশিস রায়। মুশফিকুর রহিমের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ১৫ বলে ২০ রান করেন রনি।
পরের ওভারে ফিডেল অ্যাডয়ার্ডের বলে বোপারার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান আরেক ওপেনার শাহরিয়ার নাফিস। ১১ বলে ১২ রান করেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রথম টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। দলের তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন ব্র্যান্ডেন টেইলর। নাজমুল ইসলাম নিজের বলে নিজে ক্যাচ নিয়ে ফিরিয়েছেন এই জিম্বাবুইয়ানকে।
এরপর দলীয় ৫৩ রানে রান অাউটে কাটা পড়ে দলের বিপদ আরও বাড়িয়ে তোলেন মাহমুদউল্লাহ। পঞ্চম উইকেট জুটিতে সাব্বির এবং নাদিফ কিছুটা চেষ্টা করলেও অপুর বোলিং ঘূর্ণিতে সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়।
১৩তম ওভারে জোড়া আঘাত হেনে বরিশালের বড় রানের স্কোর করার স্বপ্ন ভেঙে দেন নাজমুল ইসলাম অপু। বরিশালের সেরা তারকা সাব্বির রহমানকে ওয়াইজ শাহর ক্যাচে পরিণত করেন অপু। একই ওভারে রবি বোপারার ক্যাচে পরিণত করে ফেরান সেকুগে প্রসন্নকে।
এরপর আগের ম্যাচের সেরা তারকা কেভিন কুপারকে হারিয়ে একশত রানের আগেই গুটিয়ে যাবার আশঙ্কায় পড়ে বরিশাল। কিন্তু শেষদিকে নাদিফ চৌধুরীর দৃঢ়তায় শেষ পর্যন্ত একশত রানের কোটা পার করে দলটি। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৪ রানের ইনিংস খেলেন নাদিফ। শেষ পর্যন্ত সবকটি উইকেট হারিয়ে ১০৮ রান করতে সমর্থ হয় দলটি।
বরিশালের পক্ষে ১৮ রানে ৩টি উইকেট নিয়ে সেরা বোলার নাজমুল ইসলাম অপু। এছাড়া বোপারা, শুভাশিস, শহীদ এবং অ্যাডয়ার্ড একটি করে উইকেট নেন।
আরটি/বিএ