সহজ জয়ে ঢাকা ডায়নামাইটসের শুভ সূচনা
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) বোলারদের তোপের পর কুমার সাঙ্গাকারা এবং নাসির জামসেদের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে সহজ জয় পেয়েছে ঢাকা ডায়নামাইটস। প্রথম দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে কুমিল্লা ভিক্টরিয়ান্সকে ছয় উইকেটে হারিয়েছে ঢাকার দলটি। ঢাকার জয়ে মূল অবদান ছিল পেসারদের। শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট তুলে ভিক্টরিয়ান্সকে বড় স্কোর করতে দেয়নি তারা।
কুমিল্লা ভিক্টরিয়ান্সের দেয়া ১১১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই করে ঢাকা ডায়নামাইটস। দুই ওপেনার শামসুর রহমান এবং নাসির জামসেদ দলকে ২৯ রানের জুটি গড়েন। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে এই জুটি ভাঙেন কুমিল্লার অধিনায়ক মাশরাফি। শামসুরকে মিড অফে স্যামুয়েলসের ক্যাচে পরিণত করে সাজঘরে ফেরান তিনি।
শামসুরের বিদায়ের পর অধিনায়ক কুমার সাঙ্গাকারাকে নিয়ে দলকে জয়ের ভিত গড়ে দেন জামসেদ। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে এই দুই ব্যাটসম্যান ৫৫ রান করেন। ১৪তম ওভারে দলীয় ৮৩ রানে নাসির জামসেদকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে সাজঘরে ফেরান সুনিল নারিন। আউট হওয়ার আগে ৪৪ বলে ৮টি চারের সাহায্যে ৪৪ রান করেন জামসেদ।
দলীয় ৯৮ রানে অধিনায়ক সাঙ্গাকারাকে হারায় ঢাকা। আবু হায়দারের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন এই লঙ্কান। ২৯ বলে ১টি ছক্কার সাহায্যে ২৫ রান করেন এই শ্রীলঙ্কান লিজেন্ড। এরপর ১৯তম ওভারে বাংলাদেশের উদীয়মান ব্যাটসম্যান মোসাদ্দেক হোসেনকে নারিনের ক্যাচে পরিণত করেন আবু হায়দার। এরপর নাসির হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন রায়ান টেন ডেসকাট।
কুমিল্লা ভিক্টরিয়ান্সের পক্ষে ১৮ রানে ২টি উইকেট নিয়ে সেরা বোলার আবু হায়দার। এছাড়া মাশরাফি এবং নারিন ১টি করে উইকেট পান।
এর আগে রোববার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করতে নামে কুমিল্লা। আবুল হোসেন রাজুর করা প্রথম ওভারেই ইমরুল কায়েসকে হারায় তারা। মিড অফে ফরহাদ রেজার হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন এই ব্যাটসম্যান। পরের ওভারেই ফরহাদ রেজার বলে মুস্তাফিজকে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন আরেক ওপেনার লিটন দাস।
তৃতীয় ওভারে বিপর্যয় থেকে বিপদ বাড়িয়ে তোলে কুমিল্লা। চার নম্বরে নামা শুভাগত হোমকে ফিরিয়ে দেন আবুল হাসান। দলীয় ২১ রানের মাথায় ব্যক্তিগত চার রান করে ইয়াসির শাহর তালুবন্দি হয়ে ফেরেন শুভাগত। স্কোরবোর্ডে আর মাত্র ছয় রান যোগ হতেই ফিরে যান তিন নম্বরে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজের তারকা ব্যাটসম্যান মারলন স্যামুয়েলস। ৯ বলে ৮ রান করে কাটার মাস্টার মুস্তাফিজের বলে বোল্ড হন ক্যারিবীয় তারকা।
স্যামুয়েলসের বিদায়ের পর দলীয় ৩৬ রানে রান আউটে কাটা পড়েন ড্যারেন স্টিভেন্স। মোশারফ হোসেনের বলে ঠেলে দিয়ে দুই রান নিতে গিয়ে আউট হন এই ব্যাটসম্যান। এরপর দুই নবীন খেলোয়াড় মাহমুদুল এবং আরিফুল দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন। দলের হয়ে এই জুটি ২৩ যোগ করার পর মোশারফ হোসেনের বলে এগিয়ে খেলতে গিয়ে লাইন মিস করেন আরিফুল। ফলে বলে ধরে সহজেই স্ট্যাম্প ভাঙেন উইকেটরক্ষক সাঙ্গাকারা।
এরপর ৭ রান যোগ করতেই দলীয় ৬৬ রানে সপ্তম উইকেটের পতন হয় কুমিল্লার। মোশারফের বলে উইকেটরক্ষক সাঙ্গাকারার হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন সেট ব্যাটসম্যান মাহমুদুল। ৩০ বলে ২টি চারে ২২ রান করেন তিনি।
৬৬ রানে সাত উইকেট হারানোর পর সান্তোগিকে নিয়ে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক মাশরাফি। এই দুই ব্যাটসম্যান ৪৩ রানের জুটি গড়ে দলকে সম্মানজনক সংগ্রহ এনে দেন। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৫ রান করে রাজুর বলে আউট হন মাশরাফি। ২৬ বলে ২টি ছক্কার সাহায্যে এই রান করেন তিনি। সান্তোগি শেষ পর্যন্ত ব্যাট করে ৩টি চারে ১৬ বলে ২১ রান করে অপরাজিত থাকেন।
ঢাকা ডায়নামাইটসের পক্ষে আবুল হোসেন ২৯ রানে ৩টি উইকেট নিয়ে সেরা বোলার। মোশারফ হোসেন ২টি উইকেট নেন ১৫ রানে। এছাড়া একটি করে উইকেট পান মুস্তাফিজুর রহমান এবং ফরহাদ রেজা।
আরটি/বিএ