কুরআনে অজ্ঞতার পরিচয়
যে ব্যক্তি স্বয়ং অজ্ঞ অথচ নিজেকে মনে করে সে পণ্ডিত, সে অজ্ঞতা মিশ্রিত অবস্থায়ই চিরকাল থেকে যাবে। এ চিকিৎসাহীন অবস্থা থেকে বাঁচার বা বের হওয়ার কোনো সুযোগই নেই। এ বিষয়ে আল্লাহ বলেন-
আর যখন তাদেরকে বলা হয়, অন্যান্যরা যেভাবে ঈমান এনেছে তোমরাও সেভাবে ঈমান আন, তখন তারা বলে, আমরাও কি ঈমান আনব বোকাদেরই মত! মনে রেখো, প্রকৃতপক্ষে তারাই বোকা, কিন্তু তারা তা বোঝে না। (সুরা বাক্বারা : আয়াত ১৩)
মুনাফিকরা সেই সাহাবায়ে কেরামগণকে অজ্ঞ বলেছে , যাঁরা আল্লাহর রাস্তায় জান ও মাল কুরবানি করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেনি। আর বর্তমানের নব্য মুনাফিকরা বুঝাতে চায় যে, সাহাবায়ে কেরামগণ ঈমান-ধন থেকে বঞ্চিত ছিলেন (নাউজুবিল্লাহ) বরং আল্লাহ বলেন, দুনিয়ার স্বার্থ ত্যাগ তথা কুরবানি করা অজ্ঞতা নয় বরং প্রকৃত বুদ্ধিমত্তা ও সৌভাগ্যের কাজ। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানুষকে এ কল্যাণের দাওয়াতই দিতেন। যার অনুসরণ করতেন সাহাবায়ে কেরামগণ। মুনাফিকরা এ দাওয়াতকে এবং যারা দাওয়াতি কার্যক্রম চালাতো তাদেরকেও অজ্ঞ হিসেবে আখ্যায়িত করতো এবং বলত আমরাও কি অজ্ঞদের মতো ঈমান আনয়ন করবো। যা ছিল মুসলমানদের প্রতি বড় ধরণের কটাক্ষ। বর্তমানেও মুনাফিকদের উত্তরসূরীরা ইসলাম ও মুসলমানদের ক্ষতি করার জন্য নানা ধরনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
অত্র আয়াতের শিক্ষা-
অত্র আয়াতে মুসলমানদের ঈমানের মানদণ্ড দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি কাফেরদের খোড়া যুক্তিও কিয়ামাতের পূর্ব পর্যন্ত চলতে থাকবে। তাদের ধ্যাণ ধারণা কি রকম হবে তা ঈমানদার মুসলমানকে জানিয়ে দেয়া।
ক. ঈমান আনয়ন করতে হবে সাহাবায়ে কেরামের মতো। এর দ্বারা জানা যায়, সাহাবায়ে কেরামের ঈমান অন্যদের জন্য ঈমানের একটি মাপকাঠী। সঠিক এবং ভ্রান্ত ঈমানকে যাচাই-বাছাই করার কষ্টি পাথর।
খ. ইসলাম বিদ্বেষী মুনাফিকরা ঈমানদার মুসলমানকে কিভাবে প্রতারণার জালে আবদ্ধ করবে, তার একটা নমুনা উক্ত আয়াতে পেশ করেছেন। তারা সন্ত্রাসী, দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করেও বলবে আমরাতো সমাজ সংস্কারেই মনোনিবেশ করে আছি। আর তোমরা ইসলামের নামে সমগ্র পৃথিবীর কৃষ্টি-কালচার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছ। যা নিতান্ত বোকামী। আর এটা মুসলমানদের জন্য মারাত্মক কটাক্ষ।
পরিশেষে...
নগদ অর্জিত হয় এমন লাভের জন্য দেরিতে অর্জিত হবে এমন লাভের প্রতি ভ্রুক্ষেপ না করে, আখিরাতে চিরস্থায়ী ও চিরন্তন জীবনের তুলনায় ক্ষণস্থায়ী ও ধ্বংসশীল জীবনকে প্রাধান্য দেয়া এবং আল্লাহকে বাদ দিয়ে মানুষকে ভয় করা হলো অত্যাধিক নির্বুদ্ধিতা। আর এ নির্বুদ্ধিতার পরিচয় দিয়ে মুনাফিকরা বাস্তব সত্য থেকে অজ্ঞ রয়ে গেছে। আল্লাহ ইসলামের দুষমন মুনাফিকদের থেকে ইসলাম ও মুসলমানকে হিফাজত করুন। প্রত্যেক মুসলমানকে ইসলামের ওপর দায়েম ও কায়েম রাখুন। আমিন।
ইসলামে লেখা পাঠাতে ই-মেইল : [email protected]
জাগোনিউজ২৪.কমের সঙ্গে থাকুন। কুরআন-হাদিস মোতাবেক আমলি জিন্দেগি যাপন করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করুন। আমিন, ছুম্মা আমিন।
এমএমএস/পিআর