প্রধানমন্ত্রীকে দেখে দেখেই নেত্রী হয়ে উঠছেন বর্ষা
ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় জুটি অনন্ত জলিল ও বর্ষা। দুজন দুজনকে ছাড়া ভাবতে পারেন না জীবনের কোনো মুহূর্ত। তেমনি সিনেমার পর্দায়ও তারা আলাদা হন না। একে অপরের সঙ্গে জুটি বেঁধেই কাজ করেন। অন্য কোনো নায়ক বা নায়িকার বিপরীতে দেখা যায় না এ তারকা দম্পতিকে।
এ নিয়ে অনেক প্রশংসা যেমন আছে তেমনি সমালোচনাও চলে। বিশেষ করে বর্ষাকে নিয়েই অনেকে আঙুল তোলেন যে তিনি এককভাবে আর অভিনেত্রী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারলেন না। স্বামী অনন্ত জলিলের স্ত্রী বা নায়ক অনন্ত জলিলের নায়িকা হিসেবেই থেকে গেলেন।
এসব আলোচনাকে একদমই পাত্তা দেন না বর্ষা। তার মতে, স্বামী, সংসার ও সন্তান সামলে নিজেকে যতটুকু পারেন অভিনয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত রাখতে তাতেই তিনি সন্তুষ্ট। ভালো সিনেমা করেন, ভালো চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান, দর্শকের ভালোবাসা পান- এটুকুই প্রশান্তির।
‘নেত্রী : দ্য লিডার’ নামে নতুন ছবি শুরু করতে যাচ্ছেন অনন্ত-বর্ষা। এ ছবির পরিচিতি উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্যই জানান বর্ষা। তিনি কখনোই অনন্ত ছাড়া কোনো নায়কের বিপরীতে অভিনয় করবেন না বলেও জানান।
এ ব্যাপারে বর্ষার ভাষ্য, ‘অনন্ত’র বাইরে আমি কখনোই অন্য নায়কের সঙ্গে কাজ করবো না। অনন্ত প্রায়ই বলে যখন নতুন সিনেমা শুরু করি যে অন্য কোনো নায়ক রাখবো? আমি বলি দরকার নেই। অনেক সময় সে দুষ্টামি করেও বলে। কিন্তু সে ছাড়া আর কারো সঙ্গে আমার কাজ করার ইচ্ছে নেই।’
অনুষ্ঠানে জানতে চাওয়া হয় তার ক্রাশ কে? জবাবে অট্টহাসি দিয়ে বর্ষা বলেন, ‘আমার কাছে যেটা মনে হয়, বিবাহিত মেয়েদের ক্রাশ থাকা ঠিক নয়। বিশেষ করে আমরা যারা মিডিয়ায় আছি, প্লাস বিবাহিত। তাদের ক্রাশ থাকলেও সেটা মনে মনে থাকা উচিত। প্রকাশ করা ঠিক হবে না।’
‘দিন : দ্য ডে’ সিনেমাটি চলতি বছরের ঈদে মুক্তি পাবে। বিশ্বের প্রায় ৮০টি দেশে মুক্তি দেয়া হবে এ সিনেমা। ইরানের সঙ্গে যৌথ প্রযোজনায় তৈরি বিশাল বাজেটের সিনেমাটিতে বর্ষাকে দেখা যাবে পুলিশ অফিসারের চরিত্রে। বর্ষা বলেন, ‘নেত্রী : দ্য লিডার’ ছবিতে নেত্রীর ভূমিকায় অভিনয় করছি। কিন্তু ‘দিন : দ্য ডে’ ছবিতে আমি পুলিশ।
চরিত্রটি খুবই ক্রিটিক্যাল। এটা হলে গিয়ে দেখতে হবে নইলে চরিত্রের গুরুত্বটা বোঝা যাবে না। তারপরও বলি, এখানে আমি একজন পুলিশ অফিসার, একজন স্ত্রী ও একজন মা হিসেবে হাজির হবো।’
‘নেত্রী : দ্য লিডার’ সিনেমায় কেন্দ্রীয় চরিত্রে আপনি। প্রস্তুতিটা কেমন? জবাবে বর্ষা বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য দেশে নেত্রীদের ভূমিকায় যে নায়িকারা অভিনয় করেছেন তাদের ওজন বাড়াতে হয়েছে। কিন্তু নেত্রী ছবির জন্য ছয় কেজি ওজন কমাতে হয়েছে আমাকে। ওজন কমানোর মধ্য দিয়েই প্রস্তুতি পর্বটা শুরু হয়। এরপর একজন লিডার কীভাবে ডায়ালগ ডেলিভারি দেন সে বিষয়টি আয়ত্ত করতে হচ্ছে।
এ চরিত্রটি করতে গিয়ে আমি আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সামনে রেখেছি। বলা যায় উনাকে দেখে দেখেই নেত্রী হয়ে উঠছি। তিনি কীভাবে শাড়ি পরেন, কীভাবে ঘড়ি পরেন, তার পার্সোনালিটি- এসব দেখছি প্রতিনিয়ত। শিখছিও। কারণ আমার মনে হয়েছে যে তিনিই আদর্শ নেত্রী হিসেবে আমার কাচ্ছে উজ্জ্বল উদাহরণ হয়ে আছেন।’
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে ‘খোঁজ : দ্য সার্চ’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে প্রথমবার জুটি বাঁধেন অনন্ত ও বর্ষা। ব্যয়বহুল ওই সিনেমাটি অনন্ত জলিল নিজের টাকায়ই বানান। ওই ছবি মুক্তির পরই অনন্ত ও বর্ষা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ২০১১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর।
‘খোঁজ : দ্য সার্চ’ ছাড়াও এ দুজন ‘হৃদয় ভাঙা ঢেউ’, ‘মোস্ট ওয়েলকাম’ ও ‘নিঃস্বার্থ ভালোবাসা’ ছবিতে জুটি হয়ে অভিনয় করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বর্ষা :
এলএ/এমএস