ভিআইপিদের মতোই ভিআইপি কারাগার


প্রকাশিত: ০৪:০২ পিএম, ১৫ নভেম্বর ২০১৫

রাজধানীর অদূরে কেরানীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুরে নির্মিত হয়েছে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার। যেকোনো দিন আনুষ্ঠানিকভাবে এটি উদ্বোধন করা হবে। কেমন হবে নতুন এ কারাগারটি তা নিয়ে থাকছে জাগো নিউজের ধারাবাহিক প্রতিবেদন। আজ থাকছে এর দ্বিতীয় পর্ব
 
কক্ষের আয়তন প্রায় ২৫০ স্কয়ার ফিট। চারিদিকের দেয়ালে সাদা রং। দুটি ফ্যান, তিনটি টিউবলাইট, সংযুক্ত টয়লেট, হাত-পা ধোয়ার বেসিন। মেঝেতে আরএকে টাইলস, আর টয়লেটে ব্যায়বহুল টাইলস। কোন হোটেল-মোটেল কিংবা রিসোর্টের নয়, এটি কেরানীগঞ্জে নবনির্মিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ক্লাসিফাইড সেলের চিত্র। দেশের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের (আসামি) এই সেলটিতেই রাখা হবে।


দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুরে তৈরি হচ্ছে এশিয়ার সবচেয়ে বড় এই কারাগারটি। ১৯৪ একর জমিতে তৈরি এই কারাগারে রয়েছে জেল স্কুল, লাইব্রেরি, মানসিক ভারসাম্যহীন প্রতিবন্ধীদের ভবন, হাসপাতাল, বিচারাধীন বন্দিদের ভবন, ফাঁসির মঞ্চ, কেইস টেবিল, গুদাম, ময়দার কল, ধোপাখানা, লন্ড্রি, সেলুন ঘর ফিসার্স ক্লাব, স্টাফ ক্লাব, মসজিদ, মিলনায়তনসহ অত্যাধুনিক সব ব্যবস্থা।
 
কারাগারের মূল ফটকের দক্ষিণেই রয়েছে শ্রেণিভিত্তিক বা ক্লাসিফাইড ভবন। নাম শুনে ভবনটি সম্পর্কে না বোঝা গেলেও দেশের বিশিষ্ট, গুরুত্বপূর্ণ বা ভিআইপি ব্যক্তিবর্গ-আসামিদের জন্য তৈরি করা হয়েছে। ৪ তলা ভবনের প্রতি তলায় ৬টি করে সেল রয়েছে ভবনটিতে।

jall
সরেজমিনে দেখা যায়, ভিআইপিদের জন্য সেলগুলো তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। ভেতরে চলছে ফিনিশিংয়ের কাজ। চলে এসেছে খাট, জাজিম, বালিশ, তোষক, চেয়ার-টেবিলসহ অন্যান্য মালামাল। শ্রমিকরা কমোড লাগানো আর পরিচ্ছন্নতার কাজ করছেন।
 
কারা মহাপরিদর্শক ব্রি. জে. সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন বলেন, যেকোনো দিন আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে এই কারাগারের কার্যক্রম। উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
 
ভিআইপিদের ভবনের সীমানা প্রাচীরে রয়েছে বড় একটি মাঠ। সেখানে লাগানো হচ্ছে গাছের চারা।
কারাগারের ৪ পাশে সীমানাপ্রাচীরের বিভিন্ন স্থানে ৪০ ফুট উঁচু চারটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার (ওয়াচ টাওয়ার)। টাওয়ার ৪ টি থেকে পুরো কারাগারকে দেখা যাবে, নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানান জেল সুপার।

jail
কারাগারে ঢুকতেই পশ্চিম দিকে চোখে পড়ে শিশু কারাগার আর মানসিক ভারসাম্যহীন বন্দিদের জন্য একটি ভবন। শিশু কারাগারে প্রায় ১০০ বন্দি এবং ৩০ মানসিক ভারসাম্যহীন বন্দিকে রাখার উপযোগী আলাদা সেল করা হয়েছে। এগুলোর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।
 
যেসব আসামিকে সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হবে, তাদের কাজের জন্যেও এই কারাগারে নির্মাণ করা হয়েছে আলাদা একটি ভবন। ভবনের সীমানা প্রাচীরের মধ্যে রয়েছে বড় একটি বাগান। এর পাশেই বিভিন্ন কাজ করার জন্য খালি জায়গা। ভবনের নিচের দুটি কক্ষে হলুদ, মরিচ গুড়া করার বড় বড় মেশিন ও অন্যান্য জিনিস তৈরির জন্য যন্ত্রপাতি।
 
বন্দিদের জন্য ভবনের সীমানা প্রাচীরের পাশেই একটি হাসপাতালও নির্মাণ করা হয়েছে।

 
চলতি বছরের জুনে কারাগারের কাজ সম্পূর্ণ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নভেম্বরে শেষ হয়েছে ৯০ ভাগ কাজ । তবে নভেম্বর মাসে সীমিত আকারে এই কারাগার উদ্বোধন করা হতে পারে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে জানান, পুরো কারাগারে এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়নি। তবে প্রধানমন্ত্রী যে কয়টি ভবন প্রদক্ষিণ করবেন সেগুলোতে সংযোগ দেয়ার কাজ চলছে।

এআর/এসএইচএস/এএইচ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।