ইউটিউবার হওয়া সহজ, অভিনেতা হয়েছি কষ্ট করে : শামীম

বিনোদন প্রতিবেদক
বিনোদন প্রতিবেদক বিনোদন প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:০৬ পিএম, ২২ জুন ২০২০

শামীম হাসান সরকার। এই সময়ের জনপ্রিয় একজন অভিনেতা। ছোট পর্দায় তার উপস্থিতি দর্শককে বিনোদিত করে। তিনি মূলত তার ম্যাংগো স্কোয়াড ইউটিউব চ্যানেল দিয়ে জনপ্রিয়তা পান৷ তারপর আসেন নাটকের অভিনয়ে।

এই প্রজন্মের মেধাবী প্রায় সকল নির্মাতাদের সঙ্গে কাজ করছেন তিনি। তবে আলোচনার তুঙ্গে রয়েছেন ফ্যামিলি ক্রাইসিস এবং ব্যাচেলর পয়েন্ট নাটক দিয়ে।

করোনার কারণে বর্তমানে অবস্থান করেছেন বাসায়। নিজ পরিবারের সাথে সময় কাটছে তার। সাম্প্রতিক ব্যস্ততা ও দিনযাপন নিয়ে কথা বলেছেন জাগো নিউজের সঙ্গে। লিখেছেন অরণ্য শোয়েব-

জাগো নিউজ : তুমুল ব্যস্ততা থেকে ঘরবন্দি। কেমন উপভোগ করছেন এই অবসর?
শামীম : প্রায় তিন মাসের বেশি সময় বাসায় আছি। পরিবারকে সময় দিচ্ছি, সবার সঙ্গে আড্ডা গল্প চলছে। যে সময়টা দিতে পারতাম না ব্যস্ততার জন্য সেটি এখন পূর্ণ হচ্ছে। নামাজ পড়ছি, কোরআনের বাংলা অনুবাদটা পড়ি। মাঝে মাঝে গেম খেলি। এসব করেই দিন পার হচ্ছে।

জাগো নিউজ : অবসরে বিশেষ কি করলেন ?
শামীম : করোনার সময়ে নিজের সামর্থ অনুযায়ী অনুদান দিয়েছি। চেনাজানা লোকদের পাশে দাঁড়িয়েছি। বিভিন্ন সোশ্যাল ওয়ার্কে অংশ নিয়েছি।

জাগো নিউজ : শুটিং শুরু হয়েছে। আপনি করবেন এই মুহূর্তে ?
শামীম : না, আমি এই মুহূর্তে শুটিং করতে চাই না। যারা করছেন তাদের ব্যাপারেও আমার কোনো মতামত নেই।কিন্তু আমি চেষ্টা করবো আল্লাহর রহমতে যখন পরিস্থিতি একদম স্বাভাবিক হবে তারপরে কাজ করার। আর আমার পরিবার থেকেও মানা করা আছে। আমরা সবাই ঘরে নিজেদের কাজ বন্ধ করে অবস্থান করছি। আর রিস্ক নিয়ে কাজ করার প্রয়োজনও নেই বলে মনে করি।

জাগো নিউজ : স্বাস্থ্যবিধি এবং দূরুত্ব মেনে কি আদৌ শুটিং করা সম্ভব?
শামীম : আসলে সারাজীবন যেখানে দেখলাম ম্যানেজমেন্টটাই দুর্বল সেখানে এত কড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে অভিনয় করা অনেক দূরের ভাবনা। করোনার জন্য এখনো সব ভয়ঙ্কর। উচিত সেইফ থাকা। বেঁচে থাকলে শুটিং করা যাবে।

জাগো নিউজ : ব্যাচেলর পয়েন্ট নাটক নিয়ে মাঝে মাঝেই আলোচনা সমালোচনা সৃষ্টি হয়। বিষয়টি কীভাবে দেখেন ?
শামীম : আসলে খারাপ লাগে না! আলোচনা সমালোচনা সেই নাটক নিয়েই হয় যেটি প্রথম স্থানে থাকে এবং যেটি দিনশেষে আপনার দেখতেই হবে আলোচনা ও সমালোচনা করতে হলে। তো বাংলাদেশে আসলে এমন কিছুই নাই যে আলোচনা সমালোচনা হয়নি কিন্তু পপুলার। আমরা আসলে এনজয় করি। এ নাটকের জন্য ভালোবাসার পরিমানণটাই বেশি পাচ্ছি। সে তুলনায় হেটারের সংখ্যা খুবই কম যেটা আঙ্গুল দিয়ে গুনে নেয়া যাবে।

জাগো নিউজ : রোমান্টিক নাটকের চেয়ে ফানি নাটক বেশি করেন। এর কোনো কারণ আছে ?
শামীম : আপনি যদি আমার ২০১৯ সালের নাটক দেখেন তাহলে দেখবেন আমি ফানি নাটকের পাশাপাশি রোমান্টিক নাটকেও কাজ করেছি। ২০২০ সালে তিশা আপুর সাথে একটা নাটকে অভিনয় করেছিলাম। যেটি ৭-৮ মিলিয়ন ভিউ হয়েছে। এটা কিন্তু ফানি নাটক ছিলো না। আসলে আমার ক্যারিয়ারের শুরুতে নির্মাতারা ফানি নাটক করতে বলতেন। এটা মূলত আমার ইউটিউব চ্যানেলের সুবাদেই। এভাবে ফানি চরিত্র করতে করতে ইমেজটা তৈরি হয়ে গেছে।

তাছাড়া আমার চেহারার সাথে রোমান্টিকতা হয়তো ছিলো না যে রোমান্টিক নাটকের হিরো হবো। তাই আমাকে যেটুকু চরিত্র দেয়া হয়েছে সেটুকু স্কিল দেখিয়ে সফল হওয়ার চেষ্টা করেছি।

আমি আমার ইচ্ছেমতো মত গল্প চুজ করতে পারি। গল্প চুজ একটা শিল্পী প্রথম ক্যারিয়ারের তিন চার বছর করতে পারে না। আমার তো সে সৌভাগ্য হয়েছে।

আর ফানি চরিত্র আমি উপভোগও করি। কারণ মানুষকে হাসানোটাই তো কঠিন ব্যাপার।

জাগো নিউজ : গল্প নাকি চরিত্র। কোনটাকে প্রাধান্য দেন?
শামীম : অবশ্যই গল্প! গল্পই নাটকের মূল নায়ক হওয়া উচিত। যখন ইন্ডাস্ট্রিতে গল্পকে প্রাধান্য দেয়া হবে তখন সবাই সফল হবে। যে কাউকে দিয়ে সবকিছু অভিনয় করানো সম্ভব যদি গল্পটা নায়ক হয়। আর আমাদের সময় তো নায়ক বা নায়িকাকে প্রাধান্য দেয়া হয়। এতে করে গল্প হারিয়ে যায়।গল্পের বিষয়টা আগে খুব ভালো ছিল। আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি। গল্প বাদ দিয়ে ভিউ গুনছি সারাক্ষণ।

তবে আমি আশাবাদী মানুষ। আশা করছি সবাই হয়তো গল্পের গুরুত্বটা বুঝবে এবং নিজেদের ভাবনায় পরিবর্তন আনবে।

জাগো নিউজ : সিনেমা নিয়ে কোনো পরিকল্পনা আছে ?
শামীম : সিনেমা তো করেছিলাম একটি। মিস্টার বাংলাদেশ। খুব একটা আলোচনা হয়নি। বর্তমানে আর সিনেমা নিয়ে কোনো পরিকল্পনা নেই। আমি আসলে নাটকেই একটি জায়গা করে নিতে চাই। এখানে আরও শিখে ভবিষ্যতে সিনেমায় আসবো।

জাগো নিউজ স্পেশাল : শেষ দুই প্রশ্নের উত্তর চাই-

১/ আপনি অভিনেতা নাকি ইউটিউবার, কোন পরিচয়ে বেশি আনন্দ পান?
উত্তর : আমি অভিনেতা। অভিনেতা হতে কষ্ট করতে হয়েছে। ইউটিউবার বাসায় বসে যে কেউ হতে পারবে।

২/ এই সময়ের কোন অভিনেতাকে দেখে হিংসে হয়?
উত্তর : আসলে ঠিক হিংসে হয় না। হিংসে কখনই সিনিয়ারদের দেখে হয়নি। তবে আফরান নিশো ভাইয়ের এক্টিং আমি পছন্দ করি। নিশো ভাইকে আমার পছন্দ ভার্সেটাইলের দিক দিয়ে। মনে হয় আমি যদি এই চরিত্রগুলো করতে পারতাম আমাকে যদি মানাতো! নিশো ভাইয়ের গল্প চয়েজ খুবই বেটার।

এলএ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।