বাস্তবায়নের পথে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন
দীর্ঘ প্রতীক্ষিত জনতা টাওয়ার সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের উদ্বোধন হচ্ছে কাল(রোববার)সকালে। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয় এ প্রকল্প উদ্বোধনের উদ্দেশ্যে ইতোমধ্যে দেশে পৌঁছেছেন। পার্কটি উদ্বোধনের সকল প্রস্তুতিও সম্পন্ন হয়েছে। এটি হবে বাংলাদেশের প্রথম সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক।
এরই মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি সমৃদ্ধ কিছু প্রতিষ্ঠানকে জায়গা বরাদ্দ দেয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ। রোববার আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রতিষ্ঠানগুলোকে বরাদ্দ বুঝিয়ে দেয়া হবে। তথ্য ও প্রযুক্তির উন্নয়নে বিনামূল্যে এবং নামমাত্র মূল্যে দেয়া হচ্ছে জনতা টাওয়ার সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের বরাদ্দ।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি খাতের স্বনামধন্য চারটি প্রতিষ্ঠানকে প্রাথমিক ভাবে জায়গা বরাদ্দ দেয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয় আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রতিষ্ঠান চারটিকে বরাদ্দ বুঝিয়ে দেবেন। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণের প্রথম ধাপ অতিক্রমের কারণে এই দিনটি হবে স্মরনীয়।
হোসনে আরা বেগম বলেন, জনতা টাওয়ারের প্রতিটি তলায় ছয় হাজার বর্গফুট জায়গা রয়েছে। এর মধ্যে ব্যবহারযোগ্য হিসেবে বরাদ্দের জন্য জায়গা রয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার বর্গফুট। পার্কে জায়গা বরাদ্দ দিতে ৯ সেপ্টেম্বর বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রযুক্তিনির্ভর সেবা খাতে ন্যূনতম তিন বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন উদ্যোক্তাদের আবেদনের যোগ্যতা হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ৩ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ডিজিটাল বাংলাদেশ টাস্কফোর্সের প্রথম সভায় জনতা টাওয়ারকে দেশের প্রথম সফটওয়্যার পার্ক হিসেবে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত হয়। বিভিন্ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক হিসেবে এটিকে গড়ে তুলতে দায়িত্ব দেয়া হয় টেকনোপার্ক লিমিটেডকে।
তবে যথাযথভাবে ও নির্ধারিত সময়ে কাজ সম্পন্ন করতে না পারার অভিযোগে ২০১৩ সালে টেকনোপার্কের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করা হয়। এতে মামলা করে টেকনোপার্ক। মামলার প্রেক্ষিতে একই বছরের মার্চে জনতা টাওয়ার সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক চালুর সংশ্লিষ্ট সব কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ দেন আদালত। গত ৯ সেপ্টেম্বর টেকনোপার্কের করা এ মামলা খারিজ করে দেন আদালত।
বেসিস সভাপতি শামীম আহসান বলেন, নানা জটিলতার পর চালু হতে যাচ্ছে বহুল কাঙ্খিত এ সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক। বাংলাদেশের তথ্য ও প্রযুক্তির উন্নয়নে জনতা টাওয়ার বিরাট ভুমিকা রাখবে।
প্রসঙ্গত, ৮০ দশকে মেসার্স জনতা পাবলিশার্স উত্তরা ব্যাংকের স্থানীয় শাখা থেকে ৬ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে জনতা টাওয়ারের নির্মাণকাজ শুরু করে তৎকালীন রাষ্ট্রপ্রধান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদের মালিকানাধীন এই প্রতিষ্ঠান। কিন্তু জনতা টাওয়ারের নির্মাণকাজ শেষ করার আগেই এরশাদ ক্ষমতা হারান।
পরে ১৯৯১ সালে অবৈধভাবে জায়গা দখল করে ভবন নির্মাণের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। মামলার রায়ে জনতা টাওয়ার বাজেয়াপ্ত করা হলে এটি সরকারি সম্পত্তিতে পরিণত হয়।
আরএম/এসকেডি/এএইচ/পিআর