মুজাহিদের রিভিউ আবেদন দাখিল
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের আপিলের চূড়ান্ত রায় পুনর্বিবেচনার জন্য রিভিউ আবেদন করেছেন তার আইনজীবীরা। বুধবার সুপ্রিমকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই রিভিউ আবেদন করা হয় বলে জানান মুজাহিদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শিশির মনির।
তিনি বলেন, রিভিউ আবেদনে মূল একশত মোট ৩৮ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদনে ৩২টি গ্রাউন্ড দেখিয়ে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি ও মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস চাওয়া হয়েছে। রিভিউয়ের পেপারবুক দাখিল করা হয়েছে তিন শতাধিক পৃষ্ঠার।
গত ১৬ জুন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রেখে রায় ঘোষণা করেন। পরে গত ৩০ সেপ্টেম্বর মুজাহিদের রায় প্রকাশ করেন আপিল বিভাগ। পরের দিন ১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বেলা তিনটায় কারাগারে তার মৃত্যু পরোয়ানা পাঠানো হয়। লাল কাপড়ে মোড়ানো পরোয়ানাটি কারা কর্তৃপক্ষ, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হয়।
৬৭ বছর বয়সী মুজাহিদ বর্তমানে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। তাকে রায় পড়ে শোনানো হয়েছে। মুজাহিদের ১৯১ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। যা সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটেও রয়েছে।
এর আগে রায়ে স্বাক্ষর করেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাসহ আপিল মামলার রায় প্রদানকারী চার বিচারপতি। অন্য বিচারপতিরা হলেন- বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম তার কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিং-এ বলেন, গত ১৬ জুন মুজাহিদের আপিল মামলায় ট্রাইব্যুনালে দেয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে সংক্ষিপ্ত রায় ঘোষণা করেন আপিল বিভাগ। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের দিন থেকেই ১৫ দিনের মধ্যে রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করতে পারবেন আসামি মুজাহিদ।
তবে আসামিপক্ষে রিভিউ আবেদনের জন্য রাষ্ট্র বসে থাকবে না। দণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া এগিয়ে নেবে রাষ্ট্রপক্ষ। আসামি রিভিউ দায়ের করলে তখন দণ্ড কার্যকর প্রক্রিয়া স্থগিত থাকবে।
মুজাহিদ হলেন- চতুর্থ ব্যক্তি যাদের মামলায় আনা আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হলো। বাংলাদেশের মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব পালন করা এ আসামি মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে চূড়ান্ত রায়েও মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হলেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ১৭ জুলাই মুজাহিদকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন ট্রাইব্যুনাল। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগে একটি মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুন গ্রেফতার হন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মুজাহিদ। পরে তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় আটক রাখার আদেশ দেয়া হয়। তখন থেকে কারাগারে আছেন তিনি।
এফএইচ/এআরএস/এমএস