ফোক ফেস্টের শেষদিনে মঞ্চ মাতাবেন যারা
উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় লোকসংগীতের আসর ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক লোকসংগীত উৎসব’ শেষ হচ্ছে আজ। গত ১৪ নভেম্বর সুর-ছন্দ-তালে পঞ্চমবারের মতো ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে উৎসবের উদ্বোধন হয়।
তিন দিনব্যাপী এই গানের উৎসবে বাংলাদেশ ছাড়াও ৬টি দেশের ২০০ শিল্পী পরিবেশনায় অংশ নিচ্ছেন।
আজ ফোক ফেস্টের শেষদিনে বাংলাদেশের জনপ্রিয় ক’জন শিল্পীর পাশাপাশি সুরের মূর্ছনা ছড়াবেন পাকিস্তান ও রাশিয়ার শিল্পীরা। আজ লোকসংগীতে শ্রোতাদের মন ভরাবেন বাংলাদেশের মালেক কাওয়াল, চন্দনা মজুমদার, পাকিস্তানের জুনন ও রাশিয়ার গানের দল সাত্তুমার সদস্যরা।
আয়োজকদের সূত্রে জানা গেছে শেষদিনের শুরুতেই মঞ্চে উঠবেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় গায়ক মালেক কাওয়াল। তিনি কাওয়ালি গানের জন্য সমাদৃত। ওস্তাদ টুনু কাওয়ালের শিষ্য হয়ে নিজের সংগীত জীবনকে সমৃদ্ধ করেছেন মালেক। তবে তার সঙ্গীতে হাতেখড়ি হয় মহীন কাওয়ালের কাছে।
কাওয়ালি ছাড়াও মাইজভান্ডারি গানের মধ্য দিয়ে শ্রোতার মনোযোগ কেড়েছেন তিনি। চার দশকের সঙ্গীত সাধনা ও অনবদ্য পরিবেশনা দিয়ে মালেক কাওয়াল হয়ে উঠেছেন বাংলা লোকসঙ্গীতের এক অনন্য নাম। তারই কিছু ঝলক দেখা মিলবে সমাপনীর দিনের সূচনা লগ্নে।
তারপর মঞ্চে আসবে রাশিয়ার গানের দল সাত্তুমা। রাশিয়ান কারেলিয়া অঞ্চলের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যান্ডগুলোর মধ্যে এটি একটি। পারিবারিক এই ব্যান্ডটির যাত্রা ২০০৩ সালে। নিও ফোক ঘরানার গান নিয়ে সাত্তুমা ট্যুর করেছে ইউরোপের নানা প্রান্তে। মঞ্চে নানা ধরনের ইনস্ট্রুমেন্ট বাজিয়ে এক অদ্ভুত মূর্ছনায় দর্শককে আবিষ্ট করে রাখেন সাত্তুমার সদস্যরা। রাশিয়া, আমেরিকা, ফিনল্যান্ড, স্ক্যান্ডিনেভিয়া, এস্তোনিয়া এবং জার্মানির বিভিন্ন অঞ্চলে নিজেদের গান দিয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে তারা।
আবারও মঞ্চে বাংলা লোকসঙ্গীতের পরিবেশনা নিয়ে হাজির হবেন মিষ্টি কণ্ঠের গায়িকা চন্দনা মজুমদার। তিনি মূলত লালনসঙ্গীত শিল্পী। কুষ্টিয়ার গড়াই নদীর পাড়ে জন্ম এই গুণী শিল্পীর। বাবা নির্মলচন্দ্র মজুমদার লালনগীতির শিল্পী হলেও তিনি চেয়েছিলেন নজরুলগীতি করুক চন্দনা। কিন্তু কুষ্টিয়া এলাকা এবং পারিবারিক পরিবেশ তাকে নিয়ে আসে লালনের সুরে। লালনের বাইরে রাধারমণ, হাসন রাজা, শাহ আবদুল করিমসহ আরও বিভিন্ন গীতিকবির গান করেন তিনি। আজ লোকসঙ্গীতের এইসব সাধকদের গান দিয়েই শ্রোতাদের মাতাবেন তিনি।
শেষদিনের চমক হিসেবে সবার শেষে মঞ্চে আসবে পাকিস্তানের বিখ্যাত ব্যান্ড জুনুন। উপমহাদেশের সঙ্গীতপ্রেমীদের কাছে জুনুন এক উন্মাদনার নাম। পাকিস্তানি এই ব্যান্ডটি সুফি ঘরানার গান দিয়ে দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে শ্রোতাদের মোহাবিষ্ট করে রেখেছে। ১৯৯৭ সালে নিজেদের চতুর্থ অ্যালবাম ‘আজাদি’ দিয়ে সারা উপমহাদেশে ঝড় তোলে জুনুন। অ্যালবামের প্রথম গান ‘সাইওনি’ পাকিস্তান, ভারত এবং বাংলাদেশ তিন দেশের শ্রোতাদের কাছেই তুমুল জনপ্রিয়তা পায়।
গানের ফাঁকেই হবে উৎসব সমাপনী ঘোষণার আনুষ্ঠানিকতা। আয়োজকদের পাশাপাশি মঞ্চে হাজির হবেন আমন্ত্রিত অতিথিরা।
এলএ/এমকেএইচ