সেরা কৌতুক অভিনেতার পুরস্কার নিয়ে যা বললেন বাবু
জনপ্রিয় অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবু। ছোটপর্দার অসংখ্য দর্শকনন্দিত নাটক উপহার দিয়েছেন তিনি। শুধু নাটক নয়, একাধিক চলচ্চিত্রে কাজ করেও প্রশংসিত হয়েছেন। সেইসাথে তার গাওয়া বেশ কিছু গানও শ্রোতাপ্রিয়তা পেয়েছে।
সব্যসাচী এই শিল্পী এবার সেরা কৌতুক অভিনেতা বিভাগে জিতেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। বদরুল আনাম সৌদ পরিচালিত ‘গহীন বালুচর’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য ২০১৭ সালের সেরা কৌতুক অভিনেতা হয়েছেন তিনি। এছাড়া ২০১৮ সালের চলচ্চিত্র ‘কমলা রকেট’ এ অভিনয় করে সেরা কৌতুক অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয় করেছেন মোশাররফ করিম। আর ‘পবিত্র ভালোবাসা’ ছবির জন্য সেরা কৌতুক অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন আফজাল শরীফ।
কৌতুক অভিনেতা বিভাগে ফজলুর রহমান বাবু ও মোশারফ করিম পুরস্কার পাওয়ায় অবাক হয়েছেন অনেকেই। এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়াও দেখা যাচ্ছে। ফজলুর রহমান বাবুদের মতো তুখোড় অভিনেতাকে কৌতুক অভিনেতার পুরস্কার দেওয়াকে হাস্যকর ঘটনাও বলছেন কেউ কেউ।
এই বিষয়ে ফজলুর রহমান বাবু বলেন, ‘গতকাল জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্তদের নাম ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই অনেকের ফোন পেয়েছি। আমার ভক্তশোভাকাঙ্ক্ষিরা ব্যাপারটি ভালোভাবে নেয়নি বলেই মনে হয়েছে। অনেকেই বলেছে আপনার মতো একজন সিরিয়াস অভিনেতাকে কৌতুক অভিনেতা বানিয়ে দিলো!
আমার মনে হয়েছে এখন ছবিতে এই ক্যাটাগরি রাখাই ঠিক না। ছবি আর কোনো নির্দিষ্ট ফর্মেটের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই।’
ফজলুর রহমান বাবু আরও বলেন, ‘আমাকে যেই চরিত্রের জন্য কৌতুক চরিত্রে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে সেটা কোনো কমেডি চরিত্র ছিল না। এটা একটা সিরিয়াস চরিত্র ছিল। তবে এই চরিত্রটি মানুষ ইনজয় করেছে। এটা এক রকম খল চরিত্রই ছিল। যেখানে দেখানো হয়েছে একজন লোভি মানুষ, অনেক উচ্চাকাঙ্ক্ষা তার। লোভে পড়ে একের পর এক অপরাধ করে চলে সে। চরিত্রটি হয়তো মজার ছিল, কিন্তু কৌতুক চরিত্র ছিল না।’
মঞ্চ দিয়ে অভিনয় জীবন শুরু করেন ফজলুর রহমান বাবু। ১৯৮৩ সালে আরণ্যকে যোগ দেন। মামুনুর রশীদের কাছে শিখতে শুরু করেন অভিনয়ের নানা বিষয়, অভিনয়ের কলাকৌশল। এ নাট্যদলের হয়ে বেশ ক’টি মঞ্চনাটকে অভিনয় করেন। এগুলোতে সফলতা পাবার পর ১৯৯০ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত শিল্পী হন।
১৯৯১ সালে কাজী নজরুল ইসলামের গল্প অবলম্বনে নাটক ‘মৃত্যু ক্ষুধা’ প্রচারিত হয় বিটিভিতে। এটি ছিল টেলিভিশনে অভিনয় করা বাবুর প্রথম নাটক। তারপর মামুনুর রশীদের কয়েকটি ধারাবাহিক নাটকে অভিনয়ের সুযোগ হয়। এতেই টিভি দর্শকদের কাছে পরিচিতি বাড়তে থাকে তার। আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।
ফজলুর রহমান বাবু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেও দর্শকের প্রচুর প্রশংসা কুড়িয়েছেন। গোলাম রব্বানীর বিপ্লবের ‘স্বপ্ন ডানায়’, ‘বৃত্তের বাইরে’, এনামূল করিম নির্ঝরের ‘আহা’ ও গিয়াস উদ্দিন সেলিমের ‘মনপুরা’ ও ‘স্বপ্নজাল’ আবু সাইয়ীদ পরিচালিত ‘শঙ্খনাদ ও তৌকীর আহমেদের ‘অজ্ঞাতনামা’, রায়হান রাফির ‘পোড়ামন ২’সহ অনেক চলচ্চিত্রেই অভিনয় করেছেন তিনি। বর্তমানে নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুলের ‘জ্যাম’সহ আরও কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করছেন তিনি।
এমএবি/এমএস