তাদের হজ্বে যাওয়া হলো না
ট্রাভেলস এজেন্সির প্রতারণার শিকার হয়ে চলতি বছর হজ্বে যেতে পারেননি বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার ২৫ ব্যক্তি। প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ নির্ধারিত টাকা ট্রাভেল এজেন্সি মালিক গ্রহণ করেও হজ্ব গমনে ইচ্ছুক ওই ২৫ ব্যক্তির কাউকে কিছু না বলে কৌশলে সৌদিআরব পালিয়েছেন প্রপান টুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস এর কর্মকর্তারা।
প্রতারিত হওয়া ব্যক্তিদের অভিযোগে জানা যায়, ঢাকার মতিঝিলস্থ প্রপান টুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস এর মালিক শরণখোলা উপজেলার খোন্তাকাটা গ্রামের বাসিন্দা জামায়াত নেতা আবুল ফজল হোসাইন আহম্মদ। তার ছোট ভাই নাজমুল হাসান ওই ট্রাভেলস এজেন্সির নামে দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে হজ্বের ব্যবসা করে আসছে। চলতি বছরও তারা দেশের বিভিন্ন এলাকার মানুষকে হজ্ব পাঠানোর জন্য কাজ শুরু করেন। এ অবস্থায় নাজমুল হাসান তার নিজ এলাকা শরণখোলা থেকে বেশ কিছু লোককে হজ্ব করানোর উদ্দেশ্যে লাখ লাখ টাকা গ্রহণ করেন।
হজ্বে যেতে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা সবকিছু সঠিকভাবে প্রদান করেও উপজেলার বাসিন্দা আ. হাই, ইমদাদুুল হক মহরী, শাইজ উদ্দিন, কাশেম খলিফা, নুরুল ইসলাম, দেলোয়ার হোসেন, আ. গফফার মোল্লা, ইউসুফ আলী হাং লতিফা বেগম, ও শাফিয়া বেগমসহ ২৫ ব্যক্তি হজ্বে যেতে পারেননি।
উপজেলার খোন্তাকাটা এলাকার বাসিন্দা মো. দেলোয়ার হোসেন হাওলাদার জাগো নিউজকে বলেন, তাকে ফ্লাইটে উঠানোর জন্য ট্রাভেলস কর্তৃপক্ষ খবর দেয়। পরে তিনি ঢাকায় গিয়ে দেখেন তার নামে আদৌ কোনো টাকা জমা হয়নি। অবশেষে তিনি গত সোমবার সন্ধ্যায় নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন।
উপজেলার পাঁচরাস্তা এলাকার বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা এমদাদুল হক, নুরুল ইসলাম তালুকদার জাগো নিউজকে বলেন, এজেন্সি কর্তৃপক্ষের গাফেলতির কারণে তারা হজ্বে যাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। টাকাসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে ট্রাভেলস এজেন্সি কর্তৃপক্ষ তাদেরকে কোনো কিছুু না জানিয়ে কৌশলে সৌদি আরবে চলে গেছে। পরে যোগাযোগ করা হলে আগামীতে হজ্ব করা যাবে বলে তারা জানায়।
পরিচয় গোপন রাখার শর্তে, খোন্তাকাটা এলাকার এক বাসিন্দা জাগো নিউজকে বলেন, হজ্ব যাত্রীদের লাখ লাখ টাকা গ্রহণ করে আবুল ফজল কৌশলে পালিয়ে যান এবং নাজমুল ফোন বন্ধ করে আত্মগোপন করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে আবুল ফজল ও তার নাজমুল সাধারণ মানুষকে হজ্ব এবং ওমরা করানোর নামে প্রতারণার মাধ্যমে বহু টাকা আত্মসাৎ করে চলছেন। তাদের ভয়ে এলাকার অনেকে মুখ খুলতে সাহস পান না। ট্রাভেলস এর অন্তরালে আবুল ফজল গং নানা অপকর্ম চালাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ বিষয়ে ট্রাভেলস এর মালিক আবুল ফজল হোসাইন আহম্মদ মক্কা থেকে মুঠোফোনে জাগো নিউজকে বলেন, কিছু লোকের কাগজপত্রে ত্রুটি থাকার কারণে একটু সমস্যা হয়েছে। যারা এ বছর আসতে পারেননি তাদেরকে আগামীতে সুযোগ দেয়া হবে। তবে প্রতারণার বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
শওকত আলী বাবু/এমজেড