‘তরুণদের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটছে না’


প্রকাশিত: ০৮:২৮ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫

রাজনীতিতে তরুণদের চাওয়া-পাওয়ার গুরুত্ব না দিয়ে নেতিবাচকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তাই তরুণদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটছে না। সঙ্গত কারণে তাদের কী দায়িত্ব তাও জানার সুযোগ পাচ্ছে না তারা। শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে টিসিবি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপের’ আলোচনায় বক্তৃতায় এসব তথ্য উঠে আসে।

অনুষ্ঠানে এক দর্শকের প্রশ্ন ছিল, বাংলাদেশে বর্তমানে যে ধরনের রাজনীতি চলছে, তা তরুণ প্রজন্মের চিন্তা-ভাবনা ও আশা-আকাঙ্ক্ষাকে কতোটা ধারণ করতে পারছে? জবাবে ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, “তরুণ প্রজন্ম একটি নিরাপদ, সুশৃঙ্খল জীবন চায়। তাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তাটাও গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বর্তমানে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে তরুণ প্রজন্মকে নেতিবাচকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।”

শাহানা সিদ্দিকী বলেন, “আইন-কানুন বা অনেক ধরনের স্বাস্থ্যসেবায় তরুণ প্রজন্মের আগ্রহ বা চাহিদাকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না। রাজনীতিতে নিজের অধিকার ও দায়িত্ব জানাটাও গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে অনেক বড় ঘাটতি রয়েছে তরুণ প্রজন্মের জ্ঞানের।”

আসাদুজ্জামান রিপন বলন, “দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যে চিন্তা-ভাবনা আমাদের রাজনীতিকদের মধ্যে থাকা উচিত, সেটা নেই। রাজনীতিকদের সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়ে যাওয়া রাজনীতিকদের জন্য ভালো না। এটি আমরা উপলব্ধি করছি এবং এ থেকে উত্তরণেরও চেষ্টা করছি।”

শনিবার ছিল বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপ (একশত ৩০তম পর্ব)। অনুষ্ঠানে প্যানেল সদস্যে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন, বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ এবং মায়া’র সহ-প্রতিষ্ঠাতা শাহানা সিদ্দিকী।

অনুষ্ঠানে ৯৯ ভাগ তরুণ মত প্রকাশ করেন, বর্তমানের রাজনীতি তাদের আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটাতে পারছে না। শাহরিয়ার আলম বলেন, রাজনীতি সমগ্র বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের জন্য। সব সময় সরকারের পক্ষে মানুষের চাহিদা বা আগ্রহ বোঝা সম্ভব হয় না।

অনুষ্ঠানের আরো এক প্রশ্ন ছিলো- বাংলাদেশে শিক্ষার সবগুলো স্তরে যে মান এখন রয়েছে, তা ভবিষ্যতে দেশের জনগোষ্ঠীকে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করতে কি যথেষ্ট ভূমিকা রাখতে পারবে বলে আপনারা মনে করেন?

জবাবে আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, শিক্ষক সমাজ যারা আন্দোলন করছে তাদেরকে যদি একটি সঠিক জীবন-মান দিতে না পারি, তবে তারা কেন এ পেশায় আসবে? তাহলে শিক্ষার্থীরা কী করে সঠিক শিক্ষা পাবে? উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কিন্তু সেই অর্থে রাজনীতি নেই।

শাহানা সিদ্দিকী বলেন,বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তির যে ধারা, এদেশ কিন্তু সেদিক থেকে পিছিয়ে আছে। আমাদের শিক্ষকরা সে দিকে একেবারেই মনোযোগী না। তারা আরো অনেক বেশি মনোযোগী কনসালটেন্সি নিয়ে।

নাজনীন আহমেদ বলেন, শিক্ষার মান এখনো অনেক পিছিয়ে তা নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ নেই। আমাদের উপকরণগত মান উন্নয়ন হলেও, সিস্টেম ও মান গত দিক থেকে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। শাহরিয়ার আলম বলেন, শিক্ষার বর্তমান মান ভবিষ্যত বাংলাদেশের জন্য যথেষ্ট নয়। শিক্ষাখাতে গুণগত মানকে জবাবদিহিতার মুখোমুখি না আনলে কিন্তু কখনোই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে না।

অনুষ্ঠানের অপর একটি প্রশ্ন ছিলো-নানা ক্ষেত্রে ইনোভেশন বা উদ্ভাবনে যেসব দেশ এগিয়ে, আধুনিক বিশ্বে তারাই উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে তরুণরা উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে সরকারের কতোটুকু সহযোগিতা পাচ্ছে?

উত্তরে শাহানা সিদ্দিকী বলেন, ইনোভেশনের ইতিহাস কিন্তু পুরোনো। আর তাছাড়া টেকনোলজি সিস্টেম সম্পর্কে নিজেকে তৈরি করাটাও জরুরি। আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে অপচয়, দুর্নীতি বন্ধ করে প্রযুক্তিখাতে আরো বেশি প্রণোদনা দেয়া দরকার।

নাজনীন আহমেদ বলেন, আমাদেরকে নতুন উদ্যোগ নিতে অনাগ্রহী করা হয়। সবকিছু সরকার করে দেবে না। অর্থনৈতিক অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে এদেশে ইনোভেটিভ অগ্রগতি আসবে। শাহরিয়ার আলম বলেন, সরকার উদ্যোগ নিচ্ছে।

এফএইচ/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।