সালমান শাহের নায়িকা হয়েই সিনেমায় এসেছিলেন পপি

বিনোদন প্রতিবেদক
বিনোদন প্রতিবেদক বিনোদন প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:২৮ পিএম, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯

যা পাওয়া যায়নি তা নিয়ে একটা চাপা আফসোস বুকের ভেতর বাস করে। কিংবা যা হতে পারতো কিন্তু হয়নি তা নিয়ে চিরকাল থাকে একটা রোমাঞ্চকর হাহাকার। মানুষ তাকে বারবার পেতে চায় যা সে পায়নি। সেজন্যই কবিরা সবসময়ই না পাওয়া প্রেমকে শ্রেষ্ঠ প্রেম বলতে চেয়েছেন।

তেমনি এক প্রেম কিংবা রোমাঞ্চকর হাহাকার বুকে বয়ে বেড়ান চিত্রনায়িকা পপি। অমর নায়ক সালমান শাহের নায়িকা হয়েই সিনেমায় এসেছিলেন পপি। তারা হাফ ডজনেরও বেশি সিনেমায় কাজ করবেন এমনটাই কথা ছিলো। চুক্তিবদ্ধও হয়েছিলেন বেশ কয়েকটি ছবিতে। সালমানের সঙ্গে শুটিংয়ের জন্য মানসিকভাবে তৈরিও হয়েছিলেন পপি।

সেইসব ছবির মধ্যে অন্যতম ছিলো ‘কুলি’ ছবিটি। সালমানের মৃত্যুর পর ১৯৯৭ সালে চিত্রনায়ক ওমর সানির বিপরীতে জুটি হয়ে এই ছবিটি দিয়েই চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে পপির।

পপি জানান, এটি ছাড়াও মনতাজুর রহমান আকবরের আরও একটি ছবিতে সালমান শাহের বিপরীতে কাজ করার জন্য চূড়ান্ত হয়েছিলেন পপি। পাশাপাশি শিবলী সাদিক ও বাদল খন্দকারের মোট চারটি ছবিতে সালমানের নায়িকা হিসেবে কাজ করার কথা ছিলো তখনকার ফটোসুন্দরী পপির। কথা ছিলো সোহানুর রহমান সোহানের একটি ছবিতেও সালমানের নায়িকা হবেন পপি।

সবকিছুই ঠিক ছিলো। পক্ষে ছিলো না কেবল ভাগ্য। সালমানের অকাল প্রয়াণে একটি সম্ভাবনাময় জুটির অকাল মৃত্যু ঘটলো। সেই আক্ষেপ যেমন পপির আছে তেমনি আছে সালমান শাহ ভক্তদেরও।

চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী নায়িকা পপির সঙ্গে বেশ ভালো জমে উঠতো ডায়নামিক অভিনেতা সালমানের রসায়ন, এটা দাবি করেন ইন্ডাস্ট্রিরও অনেকে। তবে যা হয়নি তা তো হয়নি। যা হয়েছে সেটা হলো পপি নিজেকে ঢালিউডের একজন নন্দিত অভিনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন।

১৯৯৫ সালে লাক্স আনন্দ বিচিত্রা ফটোসুন্দরী হিসেবে মিডিয়ায় তার অভিষেক ঘটে। এরপর নিজেকে তিনি চলচ্চিত্রে বিকশিত করে গেছেন। জয় করে নিয়েছেন কোটি দর্শকের মন। শাবনাজ, মৌসুমী ও শাবনূরদের পর দর্শকের সেরা পছন্দ হয়ে উঠেছেন পপি।

আজ এই চিত্রনায়িকার জন্মদিন। ১০ সেপ্টেম্বর খুলনার শিববাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৭ সালে সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘আমার ঘর আমার বেহেশত’ ছবির জন্য প্রথম সিনেমার শুটিং করেন পপি। কিন্তু তার প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘কুলি’।

এরপর ১৯৯৮ সালে রিয়াজের বিপরীতে ‘বিদ্রোহ চারিদিকে’, ১৯৯৯ সালে মান্নার বিপরীতে ‘কে আমার বাবা’ ও ‘লাল বাদশা’, ২০০২ সালে কমল সরকার পরিচালিত ‘ক্ষেপা বাসু’ ও বাবুল রেজা পরিচালিত ‘ওদের ধর’ ছায়াছবিগুলো ব্যবসাসফল হয়।

২০০৩ সালে অভিনয় করেন কালাম কায়সার পরিচালিত ‘কারাগার’ ছায়াছবিতে অভিনয় করে প্রথমবারের মত শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এরপর আরও তিনবার এই রাষ্ট্রীয় পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন পপি।

তবে অনেকটা সময় ধরেই সিনেমায় অনিয়মিত তিনি। অনেকেই মনে করেন নায়ক মান্নার মৃত্যু, সমসমায়িক অন্য নায়করা সিনেমায় অনিয়মিত হওয়ায় বিপাকে পড়ে যান পপি। শাকিব খানের সঙ্গে কিছু ছবি করলেও নানা কারণে তার সঙ্গে এই নায়িকার দূরত্ব তৈরি হয়। যার ফলে শাকিবের সঙ্গে কোনো ছবিতে দেখা যায় না পপিকে।

শাকিবের বাইরে নিরব-ইমনদের সঙ্গে জুটি গড়ার চেষ্টা করলেও সাফল্য আসেনি। বাধ্য হয়ে অনেকটা নায়ক সংকটের শিকার হয়েই আড়ালে রয়েছেন পপি। আর অভিজ্ঞ পপির অভিনয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ইন্ডাস্ট্রি ও দর্শক।

এলএ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।