যা করেছি, বেশ করেছি

বিনোদন ডেস্ক
বিনোদন ডেস্ক বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:১৭ এএম, ২৩ আগস্ট ২০১৯

কলকাতার অভিনেত্রী পাওলি দাম। খোলামেলা চরিত্রের জন্য সমালোচিত এ অভিনেত্রী সম্প্রতি ভারতীয় একটি গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন। কথা বলেন খোলামেলা চরিত্র প্রসঙ্গে।

তিনি বলেন, আমার খোলামেলা চরিত্র নিয়ে যারা বলে বেড়ায়, তাদের সত্যিকার অর্থে কোনো কাজকর্ম নেই। আমি এসবে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। তারকাদের নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হবেই। তবে সেই সমালোচনায় যদি চলচ্চিত্রাঙ্গনের লোকজন জড়িত হয়, তখন একটু খারাপ লাগেই। যেসব সহকর্মী আমার খোলামেলা দৃশ্যে অভিনয় নিয়ে নেতিবাচক কথা বলেন, তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই- কালবেলা, মনের মানুষ, তখন ২৩, সব চরিত্র কাল্পনিক চলচ্চিত্রগুলো দেখুক। আগে শিল্প বিষয়টি না বুঝে শিল্পী হওয়া মানুষের প্রতি বিনীত অনুরোধ, তারা এসব সিনেমা আগে দেখুক। তারপর না হয় আমার সমালোচনা করা যাবে।

‘কালবেলার পর সবাই বলতে শুরু করেছিল মাধবীলতার চরিত্রটা পাওলি দারুণ করেছে। টিপিক্যাল বাঙালি মেয়ে থেকে বের হয়ে চরিত্রটি নিয়ে রীতিমতো যুদ্ধ করেছিলাম। একজন অভিনেত্রী হিসেবে আমার দায়িত্ব হলো ফুল ভলিউমে অভিনয় করা। আর মানুষকেও বোঝতে হবে চরিত্র অনুযায়ী সব কিছু পাল্টে যায়। ফিগার বদলায়, মানসিকতাও বদলায়। চরিত্রের প্রকাশভঙ্গি বদলায়,’বলেন তিনি।

পাওলি দাম বলেন, অনেকের মুখেই বলতে শুনেছি, আমি নাকি বাঙালি নারীর লজ্জার শেষ জায়গাটিও প্রকাশ্যে জলাঞ্জলি দিয়েছি। এটা কেন বলা হচ্ছে, আমি জানি না। আমার মনে হয়, কলকাতার বাঙালিরা এখনও আধুনিক হতে পারেনি। তাদের মধ্যে সেকেলে ভাবটা রয়ে গেছে। বর্তমান সময়ে সারাবিশ্বে যে মুভি হচ্ছে সেসবের কাছে আমার এমন অভিনয় ডালভাত। তারকোভস্কি, ফেলিনি বা বার্গম্যানের মতো তারকারাও কিন্ত পূর্ণ নগ্নতা তাদের চলচ্চিত্রে দেখিয়ে। শিল্পে ব্যাকরণে একটি চরিত্রে লজ্জা বলে কিছু নেই। চরিত্রের আবেদন অনুযায়ী সবটাই করা যেতে পারে। যারা এসব এখনও বোঝে না- তারা সংকীর্ণমনা। একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, নায়িকাকে যখন কেউ জড়িয়ে ধরছে, গানের তালে নাচিয়ে দিচ্ছে ছোট পোশাক পরে তখন লজ্জা করে না? আমি তো মনে করি একজন শিল্পীর লজ্জা থাকারই কথা নয়।

ভারতীয় এই বাঙালি অভিনেত্রী বলছিলেন, যারা বলে বেড়ায়, আমি নামে (পাওলি দাম) বাঙালি কিন্তু আদতে বাঙালিয়ানা বেইজ্জতি করেছি- তারা সত্যিই ভুল করছে। আমার চেয়ে বেশি বাঙালি কেউ নেই। ব্যক্তিগতভাবে আমি খুবই রক্ষণশীল। বাঙালিয়ানা মেনেই জীবন কাটাই। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না, একই সঙ্গে আমি একজন অভিনেত্রী। আমার মতেই দুটো সত্তাই কাজ করে। রূপালি পর্দার আমি তো সত্যিকারের আমি না। ওটা অন্য এক পাওলি। সিনেমাকে যে পাগলের মতো ভালোবাসে। ফিল্মে যার ইনহিবিশন বলে কিছু নেই। চরিত্রের জন্য যতটুকু কাপড় খুলতে হয়, খুলব। খুলেছিও। কখনও এ নিয়ে নেতিবাচক বিষয় ভাবিনি। বরারবই মনে হয়েছে- যা করেছি বেশ করেছি। আমি যখন ঢাকাই শাড়ি পরে কোনো ফেস্টিভ্যালের রেড কার্পেটে হাঁটি, সবাই তখন প্রশংসা করে। আর যখন চরিত্রের জন্য সেটা খুলে রাখি তখন সবাই শিক্ষকমশাইয়ের মতো আমাকে জ্ঞান দেয়। আসলে লোকে আমাকে না আমার কাপড়কে মূল্যায়ন করে, সেটাই বুঝি না।

‘এখন বাংলা সিনেমায় চুমুর দৃশ্য থাকবেই। তবে লোকে যদি ছবির সাবালক ভাষা না বোঝে সেটা তাদের সমস্যা। তবে পর্দায় যদি দেখানো হয় একটি মেয় ধর্ষণ হচ্ছে তাহলে সে সহানুভূতি পায়। যখনই একটি মেয়ে স্বেচ্ছায় নিজের জামাকাপড় খোলে, তখন কেউ মেনে নিতে পারে না’,- বলেন তিনি।

জেডএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।