৬ মামলায় হাজিরা দিলেন মওদুদ


প্রকাশিত: ০৬:৩৩ এএম, ২২ অক্টোবর ২০১৪

তিনশ` কোটি টাকারও বেশি মূল্যের সরকারি বাড়ি আত্মসাতের অভিযোগে গুলশান থানায় দায়ের হওয়া দুর্নীতি মামলাসহ মোট ছয়টি মামলায় হাজিরা দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।

বুধবার তিনি ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ ও ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ হাজিরা প্রদান করেন।

গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর মওদুদ আহমেদ ও তার ভাই মনজুর আহমদের বিরুদ্ধে সরকারি বাড়ি আত্মসাতের অভিযোগে গুলশান থানায় মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপপরিচালক হারুনুর রশীদ।

এরপর এবছরের ২৬ মে মামলাটিতে ঢাকার সিএমএম আদালতে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ ও তার ভাই মনজুর আহমেদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক হারুন অর রশীদ। শুরু থেকেই পলাতক থাকার কারণে গত ১৪ সেপ্টেম্বর মওদুদ আহমদের ভাই মনজুর আহমেদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন বিচারক।

মামলা থেকে জানা যায়, ‘১৯৬০ সালের ২৪ আগস্ট তৎকালীন ডিআইটি (রাজউক) গুলশান আবাসিক এলাকায় অবস্থিত এক বিঘা ১৩ কাঠা আয়তনের (হোল্ডিং নং ১৫৯) প্লটটি পাকিস্তানি নাগরিক মো. এহসানকে হস্তান্তর করে। পরে তার স্ত্রী মিসেস ইনজে মারিয়া প্ল্যাজ (অস্ট্রেলিয়ান) এর নামে ওই প্লটটি ১৯৬৫ সালে লিজ দলিল হিসেবে রেজিস্ট্রি করে দেয়া হয়। পরে ইনজে মারিয়া ফ্ল্যাজ ও তার স্বামী মো. এহসানের দেশ ত্যাগের কারণে উক্ত প্লটটি পরিত্যক্ত সম্পত্তির অন্তর্ভুক্ত হয়।

অভিযোগে বলা হয়েছে, মওদুদ আহমেদ এই সম্পত্তি আত্মসাতের অসৎ উদ্দেশ্যে নিজেকে মিসেস ইনজে মারিয়া ফ্ল্যাজ প্রদত্ত আমমোক্তার দেখানোর জন্য ৭৩ সালের ২ আগস্ট একটি আমমোক্তারনামা তৈরি করেন এবং তা তার সুবিধামতো সময়ে ব্যবহার করেন। পরবর্তীতে নানা কৌশলে বাড়িটি দখলে নিয়ে নিজেকে ইনজে মারিয়া ফ্ল্যাজের ভাড়াটিয়া হিসেবে দেখিয়ে উক্ত বাড়িতে বসবাস করে আসছেন তিনি।

স্বাধীনতার পর ইনজে মারিয়ার বাংলাদেশে আসার কোনো দালিলিক প্রমাণ না থাকলেও মওদুদ আহমেদ তার পাওয়ার অব অ্যাটর্নিতে সেকথাই উল্লেখ করেন। পরবর্তীতে ৭৮ সালে তৎকালীন সরকারে যোগদান করে প্রথমে সরকারের মন্ত্রী এবং ৭৯ সালে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রিসভায় উপ-প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে নিজের ক্ষমতার অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে উক্ত বাড়িটিকে পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকা থেকে বাদ দেয়ার অপচেষ্টা চালান। এরই ধারাবাহিকতায় হোল্ডিং নং ১৫৯ নং এর  প্লটটির মূল্য মাত্র ১০০ টাকা  দেখিয়ে বরাদ্দ নেন তিনি। ৮০ সালে প্লটটি রেজিস্ট্রি করা হয়।

এরপর ১৯৮৪ সালে ইনজে মারিয়া কর্তৃক জনৈক মহসিন দরবার বরাবরে একটি আমমোক্তারনামা সম্পাদনের কথা উল্লেখ করা হয়। ইনজে মারিয়া ১৯৮৫ সালে মারা গিয়েছেন জেনেও উক্ত মহসিন দরবার নামীয় ব্যক্তিকে দিয়ে মৃত ব্যক্তির আমমোক্তার হিসেবে ৮৫ সালে বাড়িটি মওদুদের সহোদর ভাই মনজুর আহমদ বরাবর চুক্তি করা হয়েছে মর্মে উল্লেখ করা হয়।’

এজাহারে বলা হয়েছে, ‘মওদুদ তার ভাই মনজুর আহমদকে অবৈধভাবে উক্ত বাড়ির কথিত মালিক বানানোর কাজে একে অন্যকে সহায়তা করার মাধ্যমে ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় অপরাধ করেছেন।’

তবে মওদুদ আহমেদের পক্ষে দাবি করা হয়, বাড়িটি সরকারি সম্পত্তি নয়, ব্যক্তিগত সম্পত্তি। আর মওদুদ আহমেদের ভাই ব্যক্তি মালিকের কাছ থেকেই বাড়িটি ক্রয় করেছেন। মনজুর আহমেদ বর্তমানে লন্ডনে রয়েছেন।

এছাড়া আদালতে হাজিরা দেয়া আজকের পাঁচটি মামলা গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সরকার বিরোধী আন্দোলনের সময় রাজধানীর বিভিন্ন থানায় দায়ের করা হয়েছিল।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।