দেশে আসছে নারীদের প্রথম ব্যান্ড
নারীর অনেক প্রতিভা আছে, অনেক স্বপ্ন আছে সেই বিশ্বাসকে ধারন করে সানসিল্ক এবং ক্রেইন্সের যৌথ উদ্যোগে শুরু হয়েছিলো সানসিল্ক ডিভাসের যাত্রা। যেখানে উদ্দেশ্য ছিলো নারীদের নিয়ে একটি প্রফেশনাল মিউজিক ব্যান্ড তৈরির জন্য সদস্য সংগ্রহ করা। যেখানে শুধু নারীরাই থাকবেন। পেশাদারিত্ব নিয়ে তারা গান করে যাবেন।
অবশেষে সেই সদস্যদের পাওয়া গেল। প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হিসেবে ফাইনালিস্ট ৭জন প্রতিযোগীর মাঝ থেকে উঠে এসেছে চার বিজয়ী। তারা হলেন অন্তরা রহমান, মুস্তারিন আহমেদ শীতল, সুনন্দা শারমিন এবং ফেরদৌসি মৌমিতা। এদের নিয়েই তৈরি হচ্ছে দেশের প্রথম অল-গার্ল প্রফেশনাল মিউজিক ব্যান্ড।
নতুন এই অল গার্ল ব্যান্ড সনি ডিএডিসি-এর সাথে দুটি অ্যালবামের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে যা প্রচারিত হবে আন্তর্জাতিকভাবে। তারা বলিউড সিনেমার একটি গানও গাইবেন।
প্রাইজ মানির পাশাপাশি বিজয়ীদের হাতে হোন্ডার পক্ষ থেকে নিউ ডিও স্কুটার এবং প্রথম ২০জনের জন্য নকিয়া হ্যান্ডসেট তুলে দেয়া হয়। ফাইনাল অনুষ্ঠানের শেষ অংশে বিজয়ী এই নতুন ব্যান্ড জনপ্রিয় ব্যান্ড আর্টসেলের সাথে পারফর্ম করে।
সম্প্রতি এই রিয়েলিটি শোয়ের গ্রান্ড ফিনালে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। এই আয়োজনে বিচারক হিসেবে ছিলেন ৪ জন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আলিফ আলাউদ্দিন, হৃদয় খান, নেমেসিস ব্যান্ডের জোহাদ রেজা চৌধুরী এবং চিরকুট ব্যান্ডের সারমিন সুলতানা সুমি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেডের মার্কেটিং ডিরেক্টর নাফিস আনোয়ার, সনি ডিএডিসি এর ডিরেক্টর এবং হেড অব ইন্ডিয়া জোজি ম্যামেন, হোন্ডা গ্রুপের অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ আশেকুর রহমান, এবং ক্রেইন্সের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাবেত খান।
চারজন বিচারকের পাশাপাশি জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী এলিটা অনুষ্ঠানে পারফর্ম করেন। পুরো প্রোগ্রাম উপভোগ করতে আসেন দেশের বিভিন্ন জনপ্রিয় শিল্পীরা।
প্রসঙ্গত, এর আগেও বেশ কয়েকটি ব্যান্ড গড়ে উঠেছে শুধুমাত্র নারীদের নিয়ে। তারমধ্যে অন্যতম ১৯৯৫ সালে গড়ে ওঠা ‘ব্লুবার্ডস’। সঙ্গীতানুরাগী জ্যাকব ডায়াসের একান্ত উৎসাহ আর অনুপ্রেরণায় গড়ে ওঠে এই ব্যান্ড। ভোকাল থেকে শুরু করে কী-বোর্ড, ড্রাম, বেইজ গিটার, লিড গিটার বাজানো-সবই নারী। নব্বইয়ের দশকে চট্টগ্রামে গড়ে ওঠে ব্যান্ডটি। ৯ নারী সদস্য বিশিষ্ট এই ব্যান্ডটির প্রথম অ্যালবাম বাজারে আসে ১৯৯৫ সালে। যার নাম ছিলো, ‘সৈকতে একদিন।’
বাংলাদেশের প্রথম নারীদের ব্যান্ড হিসেবে তাদের অনেক পরিচিতি হয়। তবে এখন এই দলের কার্যকারিতা তেমন চোখে পড়ে না। সর্বশেষ ২০১৭ সালে ‘আবার’ নামের একটি মিক্সড অ্যালবামে তাদের একটি গান পাওয়া যায়।
এছাড়াও ২০০৮ সালে মৌলভীবাজারের পাঁচজন স্কুল পড়ুয়া মেয়ে গড়ে তোলে ‘টুইঙ্কেল’ নামে ব্যান্ড। তবে পড়াশোনার চাপ, বয়স ইত্যাদি কারণে খুব বেশিদিন নিয়মিত হয়নি তাদের পথচলা। ২০১৫ সালে নতুনভাবে আত্মপ্রকাশ করে ‘টুইঙ্কেল’ ব্যান্ডটি। নতুন ব্যান্ডের নাম হয় ‘আঁচল।’ এই ব্যান্ডের কার্যক্রম এখনো চলমান। পাশাপাশি ‘এফ মাইনর’ নামেও নারীদের একটি ব্যান্ড রয়েছে।
তবে সানসিল্ক এবং ক্রেইন্স এই রিয়েলিটি শো থেকে আসা বিজয়ীদের নিয়ে তৈরি ব্যান্ডটিকে নারীদের নিয়ে প্রথম পেশাদারী ব্যান্ড হিসেবে দাবি করছে।
এলএ/পিআর