এলআরবির সদস্যদের বিরুদ্ধে আইয়ুব বাচ্চুর সন্তানদের অভিযোগ

বিনোদন প্রতিবেদক
বিনোদন প্রতিবেদক বিনোদন প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:৫৮ পিএম, ১৬ এপ্রিল ২০১৯

গত বছরের ১৮ অক্টোবর না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন কিংবদন্তি গিটারিস্ট ও ব্যান্ড শিল্পী আইয়ুব বাচ্চু। এর পর পরই প্রশ্ন ওঠে তার গড়া বাংলাদেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড দল ‘এলআরবি’র হাল ধরবে কে ? সম্প্রতি বালমাকে এলআরবির নতুন ভোকাল হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। বালামকে এলআরবির ভোকাল হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার ১০ দিনের এলআরবির নাম বদলে হয় ‘বালাম অ্যান্ড দ্য লিগেসি’।

আইয়ুব বাচ্চুর ভক্তরা এসব ঘটনায় বেশ চটেছেন। ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। এদিকে জনপ্রিয় এই ব্যান্ডটিকে নিয়ে এতো ঘটনা ঘটেছে এর কিছুই নাকি জানানো হয়নি এলআরবির কর্ণধার আইয়ুব বাচ্চুর পরিবারকে। এমনই অভিযোগ করেছেন আইয়ুব বাচ্চুকন্যা ফাইরুজ সাফরা।

তিনি বলেন,‘বাবা চলে যাওয়ার পর মগবাজারের বাবার চেহলাম অনুষ্ঠানে এলআরবির সব সদস্যদের সঙ্গে সব শেষ দেখা ও কথা হয়। পরে আর তাদের কারও সঙ্গে কোন যোগাযোগ হয়নি এমন কী কথাও না। দলের সদস্য নিচ্ছেন এ বিষয়ে আমাদের কাওকে কিছুই জানানো হয়নি। পরে ফেসবুকে লাইভে জানতে পারি, এলআরবি ব্যান্ডে নতুন সদস্য নেওয়া হয়েছে!

নতুনভাবে এলআরবি গঠন করা হয়েছে। খুব অবাক হয়েছি। আম্মুও অবাক। তারা ভদ্রতা করেও আমাদের জানাতে পারতেন। কিন্তু জানাননি। বাবার মৃত্যুর পর কখনও আমাদের পরিবারের খোঁজ নেয়নি এলআরবির অন্য সদস্যরা। তারা নিজেদের কাজ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। এটা ভালো। তাই বলে একবার খোঁজও নিবে না? এমন কী মগবাজারে অবস্থিত এবি কিচেন স্থানান্তর করার সময়ও এলআরবির কোন সদস্য সহায়তা করেনি।’

ফাইরুজ আরও বলেন, ‘নতুন সদস্য নেয়ার পর কৌসিক হোসেন তাপস আঙ্কেল আমাদের কাছে জানতে চেয়েছিলেন সন্তান হিসেবে আমাদের সিদ্ধান্ত কী? এলআরবি সদস্যরা কীভাবে চলবে? আমি বলেছিলাম, বাবা নেই। বাবা আমাদের জন্য কোনো ব্যবসা রেখে যাননি। আমরা বিদেশে আছি, কেউ একবারও জানতে চায়নি আমরা কীভাবে চলছি। এরপরও যখন জানতে চেয়েছেন, বলেছি, বাবার কথা ভেবে কাউকে অনুমতি দিতে পারছি না। মঞ্চে যে কেউ বাবার গান গাইতে পারবে। তারা জিরো থেকে নতুন একটা ব্যান্ড গঠন করুক। তাতে আমাদের বাধা দেওয়ার কিছু নেই। যে যেভাবে বাবাকে চায়, ট্রিবিউট জানাতে পারবে, সেখানে আমরা বাধা হবো না।’

আইয়ুব বাচ্চুর ছেলে আহনাফ তাজওয়ার আইয়ুব এখন আছেন কানাডায়। পড়াশোনা করছেন ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায়। সেখান থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আজ মঙ্গলবার দুপুরে একটি স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘আমার বাবা আমার ব্যক্তিগত সম্পত্তি নন। তিনি আমার বোনেরও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নন। তিনি বাংলাদেশের জাতীয় সম্পদ। ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন। তার গানগুলোর ভেতর দিয়ে তিনি মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন।’

আহনাফ তাজওয়ার লিখেছেন, ‘ফেসবুকে আমি এ রকম এক হাজার মন্তব্য পড়েছি, যেখানে বলা হয়েছে, আমার বাবা আমার ব্যক্তিগত সম্পত্তি নন, তিনি জাতীয় সম্পদ। কিন্তু দিন শেষে তিনি তো আমার বাবা।’

আহনাফ তাজওয়ার আইয়ুব আরও লিখেছেন, ‘এই ব্যান্ডে বাবার শূন্যতা কেউ কোনো দিন পূরণ করতে পারবে না। আর যদি আপনারা ভেবে থাকেন, আমার উদ্দেশ্য আমার বাবার স্থান নেওয়া, তাহলে ভুল করছেন। আমার বাবা যে মাপের মানুষ ছিলেন, আমি যদি তার ১০০ ভাগের এক ভাগও হতে পারতাম, তাহলে নিজেকে নিয়ে গর্ব করতাম। আর শিল্পী বাবার কথা বাদ দিচ্ছি। আমি কোনো দিন তার জায়গা নিতে পারব না।’

সম্প্রতি প্রয়াত আইয়ুব বাচ্চুর ফেসবুক প্রোফাইল হ্যাক হয়েছে। আহনাফ তাজওয়ার আইয়ুব বলেন, ‘যারা এই কাজটি করেছেন, অবশ্যই ঠিক করেননি। সেখানে সন্তানদের প্রতি আইয়ুব বাচ্চুর দেওয়া অনেকগুলো ভয়েস মেসেজ আছে। বাবার মৃত্যুর পর প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়ার আগে সেই ভয়েস মেসেজগুলো শোনা হতো। আহনাফ তাজওয়ার আইয়ুব লিখেছেন, ‘বাবার কণ্ঠ শোনার একমাত্র উপায় তারা বন্ধ করে দিয়েছেন।’

আর যারা আইয়ুব বাচ্চুর পরিবারকে সমালোচনা করছেন, তাদের জন্য আহনাফ তাজওয়ার আইয়ুব লিখেছেন, ‘আমার শুভকামনা তাদের জন্য, যারা আমার মা, বোন আর আমাকে প্রতিনিয়ত গালমন্দ করে আনন্দ পাচ্ছেন। আপনাদের অভিশাপে কিছু আসে যায় না। আমাদের কষ্ট, আমাদের পাশে আজ বাবা নেই।’

এমএবি/এলএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।