আজও এফডিসি কাঁদে নায়ক মান্নার বিরহে!

বিনোদন প্রতিবেদক
বিনোদন প্রতিবেদক বিনোদন প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:২৪ পিএম, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

সময় কতো দ্রুত চলে যায়। দেখতে দেখতে ১০ বছর পেরিয়ে গেল বাংলা সিনেমার মেগাস্টার নায়ক মান্নার মৃত্যুর। ২০০৮ সালের আজকের এই দিনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন তিনি।

আজ এই তারকার ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী। এ উপলক্ষে রোববার বাদ মাগরিব উত্তরায় মান্নার বাসভবন ‘কৃতাঞ্জলী’তে স্মরণসভা, দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।

মরহুম মান্নার সহধর্মিণী শেলী মান্না বলেন, ‘প্রতিবারই পারিবারিক উদ্যোগে বাসায় মিলাদের আয়োজন করা হয়। এবারেও থাকছে। সবার কাছে মান্নার জন্য দোয়া চাই।’

১৯৮৪ সালে এফডিসি আয়োজিত নতুন মুখের সন্ধানে কার্যক্রমে এসএম আসলাম তালুকদার মান্না চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ করেন নায়ক মান্না হয়ে। তার প্রথম আভিনীত ছবি ‘তওবা’ মুক্তি পায় ১৯৮৪ সালে। আমৃত্যু তিনি চলচ্চিত্রের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন।

দীর্ঘ ক্যারিয়ারে মান্না উপহার দিয়েছেন প্রায় সাড়ে তিন শতাধিক ছবি। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য- সিপাহী, যন্ত্রনা, অমর, পাগলী, দাঙ্গা, ত্রাশ, জনতার বাদশা, লাল বাদশা, আম্মাজান, দেশ দরদী, অন্ধ আইন, স্বামী স্ত্রীর যুদ্ধ, অবুঝ শিশু, মায়ের মর্যাদা, মা বাবার স্বপ্ন, হৃদয় থেকে পাওয়া, কাবুলিওয়ালা ইত্যাদি।

মান্না ছিলেন একজন সফল নেতা। মৃত্যুর আগ মুহূর্তেও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্বে ছিলেন। অভিনয় করে জয় করেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার। ছিলেন একজন সফল প্রযোজকও। তবে নায়ক মান্নার সেরা অর্জন গণমানুষের নায়ক হতে পারা। তার চরিত্রগুলোতে বিপ্লব, প্রতিবাদ তথা সামজিক প্রতিবন্ধকতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে যাওয়ার লড়াই দেখা যেত সবসময়।

২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৪৪ বছর বয়সে নায়ক মান্না মৃত্যুবরণ করেন। টাঙ্গাইল জেলায় অবস্থিত তার নিজ গ্রাম এলেঙ্গায় মান্নাকে সমাহিত করা হয়।

তার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে ঢাকাই সিনেমার জমজমাট এক অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটে। অনেকেই দাবি করেন, মান্নার অকাল প্রয়াণ চলচ্চিত্র শিল্পকে নড়বড়ে করে দিয়ে গেছে। তার না থাকার ক্ষতি পূরণ করতে পারেননি কোনো নায়ক।

মান্নার অকাল প্রয়াণে সিনেমার জোয়ার থামিয়ে দিয়েছে। কাজী হায়াত, মনতাজুর রহমান আকবর, মালেক আফসারী, এফ আই মানিক, ইস্পাহানি আরিফ জাহানের মতো মেগা হিট ছবির নির্মাতারা মান্নাকে হারিয়ে দুচোখে অন্ধকার দেখেছেন। এই নির্মাতাগণ নায়ক মান্নাকে নিয়ে বাজি ধরে নিশ্চিত সাফল্যের জুয়ায়। তারা জানতেন, গল্প-নির্মাতা-নায়িকা দেখে নয়; সিনেমা হলে দর্শকের ঢল নামবে নায়ক মান্নার নামেই।

নায়ক মান্নার অবর্তমানে অনেক প্রযোজক নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন চলচ্চিত্র থেকে। অনিশ্চিত ক্যারিয়ার দেখে অনেক নায়িকাও আড়ালে চলে গেছেন।

তার বিরহে ভক্তরা কাঁদে। শত কোটি স্মৃতি বুকে নিয়ে আজও কাঁদে মান্নার ঘাম মিশে থাকা এফডিসি চত্বর। যেখানে একটা দীর্ঘশ্বাসের গোলাপ হয়ে ফুটে আছে মান্না ডিজিটাল কমপ্লেক্স।

উল্লেখ্য, গেল ৩ ফেব্রুয়ারি মান্নার মা হাসিনা ইসলাম মৃত্যুবরণ করেছেন।

এলএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।