বুলবুল বেঁচে থাকবেন সুরে সুরে
‘আমার ভেতর যতদিন হৃদয় ও আত্মা থাকবে ততদিন প্রিয় স্যার ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুল থাকবেন।’ বুধবার দুপুর ১২টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুলের মরদেহে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে শোকবইয়ে এভাবেই নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করেন ইশতিয়াক নামের এক যুবক। ওই যুবকের দু-চোখ ছল ছল করছিল। এ সময় শহীদ মিনার চৌহদ্দিতে ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুল রচিত গান ‘সব কটা জানালা খুলে দাও না’ বাজছিল।
মুক্তিযোদ্ধা, গীতিকার ও গুণধর এ সংগীত পরিচালকের মৃত্যুতে শুধু পরিবার কিংবা স্বজনরাই নন, সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে অসংখ্য নারী, পুরুষের মধ্যে শোকের মাতম চলছে। তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বুধবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে।
অসংখ্য মানুষের ফুলেল ভালোবাসা ও শ্রদ্ধায় ছেয়ে গেছে লাল-সবুজ পতাকায় আচ্ছাদিত আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের মরদেহ। মরদেহে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তারা গুণী এ গীতিকারের প্রতি অগাধ ভালোবাসা জানান শোকবইয়ে দু-চার লাইন অনুভূতি লিখে। সবার লেখায় একই সুর- ‘তার মৃত্যুতে জাতির অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেল।’
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানানোর জন্য বেলা ১১টায় মরদেহ আনা হয়। প্রথমে তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মানে গার্ড অব অনার দেয়া হয়। বিউগলে করুণ সুর বেজে ওঠে। এরপর মুক্তিযোদ্ধারা তাদের সহযোদ্ধাকে সালাম ঠুকেন। শুরু হয় লাইন ধরে শ্রদ্ধা নিবেদন। পাশাপাশি চলতে থাকে তাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ।
মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ পতাকা হাতে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলকে বহনকারী গাড়িটির সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, তারা একইসঙ্গে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। এসেছেন সহযোদ্ধাকে শ্রদ্ধা জানাতে। কবরস্থানে যাবেন না, তাই এখান থেকেই শেষবারের মতো স্যালুট দিয়ে বিদায় জানাবেন।
বিচ্ছু জালাল নামে আরেক মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিচারণ করে জানান, কীভাবে ৭১ সালে আজিমপুরে পাক হানাদারদের ওপর গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিলেন বুলবুল। সবার মুখে অভিন্ন কথা- ‘যতদিন সাংস্কৃতিক অঙ্গন থাকবে ততদিন বুলবুল তার অমর কীর্তির জন্যই বেঁচে থাকবেন সুরে সুরে।
এমইউ/জেডএ/এমএস