‘ভাড়া কইরা আনবি মানুষ কান্দিতে মোর লাশের পাশে’
জনপ্রিয় গায়ক মনির খানের কণ্ঠে তুমুল জনপ্রিয়তা পাওয়া গান ‘ভাড়া কইরা আনবি মানুষ কান্দিতে মোর লাশের পাশে’।
প্রেমিকার উপস্থিতিতে প্রেমিক শেষবিদায় নিতে পারবে না। তাই প্রেমিকের দাফনের সময় প্রেমিকা যেন আশেপাশে না থাকে সেই অনুরোধই ছিলো গানটিতে।
যদি কান্নার মানুষ খুঁজে পাওয়া না-ই যায় তবে প্রয়োজনে ভাড়া করে আনা হোক কান্নার মানুষ। তবু প্রেমিকের লাশের পাশে যেন প্রেমিকাকে আসতে দেয়া না হয়। তার প্রেম ছেড়ে প্রেমিক কবরে যেতে পারবে না। এমনই হাহাকার ভরা প্রেমের সেই গান ছুঁয়ে গিয়েছিলো কোটি কোটি শ্রোতার অন্তর।
গভীর উপলব্দির প্রেমমাখা এই গানের কথা, সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছিলেন সদ্য প্রয়াত আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। আজ তিনি নেই। চলে গেলেন সবরকম অভিমানের ওপারে।
তার মৃত্যুর খবর প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই কান্নার রোল উঠেছে। কাউকে ভাড়া করে আনতে হয়নি। তার জীবন, কর্ম, সৃষ্টির শূন্যতা নিয়ে আজ কাঁদছে বাংলা গানের পৃথিবী, কাঁদছে তার অগণিত ভক্ত-অনুরাগীরা।
মঙ্গলবার বন্ধুর প্রয়াণের খবর পেয়েই তার বাসায় ছুটে যান কুমার বিশ্বজিৎ, এন্ড্রু কিশোর। তাদের চোখের জলে ভারী হয়েছে আকাশ। বুলবুলকে হারিয়ে তার স্মৃতিচারণে গিয়ে কাঁদলেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার, শেখ সাদী খান, মনির খান, কনক চাঁপা, ইলিয়াস কাঞ্চন, রিয়াজ।
পরিচালকদের নির্বাচনকে ঘিরে উৎসব মুখর এফডিসিতেও কাল দেখা গেল থমথমে অবস্থা। আর মঙ্গলবার ভোর রাত থেকে ফেসবুক তো বুলবুলের শোকেরই সমুদ্র যেন।
আজ বুধবার সকালে এই গুণী সংগীত পরিচালকের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানেও দেখা গেল শোবিজের নানা অঙ্গনের মানুষের ঢল। এসেছেন শত শত অনুরাগীরা। কেউ ফুল হাতে, কেউ বা উৎসুক মন নিয়ে এসেছেন যার গান শুনে জীবনে বহুবার প্রেমে পড়েছেন তাকে শেষবারের মতো এক নজর দেখবেন বলে। শোকে-কান্নায় ভারী ছিলো শহীদ মিনারের বাতাস।
আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলকে হারিয়ে, তার মরদেহ ঘিরে ভালোবাসার এই কান্না বহমান। এই সব কান্নাই প্রেমের। হয়তো এত এত কান্নার ভিড়ে মিশে গেছে তার ছদ্মবেশী প্রেমিকাদের কান্নাও। যে কান্নার খোঁজ আমরা রাখিনি, পাইনি।
এলএ/পিআর